ডিজিটাল ইন্ডিয়ায় বাস করছি অথচ ম্যানহোল, নালা পরিষ্কারের জন্য এক শ্রেণির মানুষের উপরই নির্ভরশীল আমরা। এখনও এক শ্রেণির মানুষকে আদুল গা-এ ম্যানহোলে নামতে হয়।
ডিজিটাল ইন্ডিয়ায় বাস করছি অথচ ম্যানহোল, নালা পরিষ্কারের জন্য এক শ্রেণির মানুষের উপরই নির্ভরশীল আমরা। এখনও এক শ্রেণির মানুষকে আদুল গা-এ ম্যানহোলে নামতে হয়। দৃশ্যটি সদ্য প্রকাশিত এবং ব্যাপক সাড়া জাগানো ছবি ‘আর্টিকেল ১৫’-এর। বলিউড অভিনেতা আয়ুষ্মান খুরানা অভিনীত সেই ছবিতে জাতিভেদ, বর্ণবিদ্বেষ এবং শ্রেণী বিভাজনকে কটাক্ষ করে বলা হয়েছিল, “ম্যানহোল, নালা পরিষ্কারের জন্য সেই শ্রেণির মানুষেরা যদি হরতাল ডাকে তখন কী হবে! নিজে ম্যানহোলে নামবেন তো?” বাস্তবেও অপরিচিত নয় এই দৃশ্য। ম্যানহোল পরিষ্কার করতে নেমে প্রাণ হারানোর ঘটনা, বিগত কয়েক বছরে বারবার এসেছে খবরের শিরোনামে। আর তার জেরেই বুধবার অতি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে এক মামলার পরিপ্রেক্ষিতে দেশের শীর্ষ আদালত পর্যবেক্ষণে জানিয়েছে, “পৃথিবীর কোথাও মানুষকে গ্যাস চেম্বারে মরতে পাঠানো হয় না।” এদিন আদালতের তরফে বলা হয়, স্বাধীনতার ৭০ বছর পরেও জাতিভেদ দেশে বজায় আছে। গত বছর তপশিলি জাতি/ উপজাতি বিষয়ক একটি আইনের প্রসঙ্গে আদালতে দায়ের হওয়া এক মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার এই পর্যবেক্ষণ ব্যক্ত করে শীর্ঘ আদালতের বিচারপতি অরুণ মিশ্রার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। এদিন সর্বোচ্চ আদালতের বেঞ্চের তরফে অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপালকে প্রশ্ন করা হয়, কেন মাস্ক, অক্সিজেন সিলিন্ডার ও অন্য সুরক্ষা ব্যবস্থা ছাড়া এখনও মানুষকে ম্যানহোলে নামিয়ে নালা পরিষ্কার করানো হয়? যার পরই মাননীয় বিচারপতি বলেন, “পৃথিবীর কোনও দেশে মানুষকে মরতে এই ভাবে গ্যাস চেম্বারে পাঠানো হয় না। যার জেরে প্রতি মাসে চার থেকে পাঁচজন মানুষ মারা যান।” বিচাপতি মিশ্রা আরও বলেন, সংবিধানে সকলের সমান অধিকার দেওয়া হয়েছে, কিন্তু বাস্তবে তা দেওয়া হয় না। যার জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, কোনও আইন না থাকায় সাধারণ নাগরিকেরা এর সঠিক ব্যবহার করতে পারেন না। তিনি বলেন, ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশে জেলাশাসকেরা সঠিকভাবে তাই কোনও পদক্ষেপ নিতে পারেন না। অ্যাটর্নি জেনারেল বেণুগোপাল বলেন, যে ব্যক্তি রাস্তা ঝাঁট দেন বা ম্যানহোলে নেমে নর্দমা পরিষ্কার করেন তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা ঠিক নয়। যে ব্যক্তি তাদের নির্দেশ দিচ্ছেন তিনি এর জন্য দায়ী।