“জেরা করে চাল কেলেঙ্কারির নেপথ্যের নায়কদের প্রকাশ্যে আনতে হবে”, বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট
সোমবার রামনগর লুনিয়া মার্কেটিং প্রাইভেট লিমিটেডের গুদাম থেকে অবৈধভাবে সংগৃহীত এফ সি আই এর ৪০৫ বস্তা চাল উদ্ধার করেছেন ফুড অ্যান্ড সিভিল সাপ্লাই বিভাগের পরিদর্শকরা। এই সংস্থার কর্ণধার বিতর্কিত ব্যাবসায়ী মূলচাঁদ বৈদকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে এই ব্যাপারে তাকে জেরা করার দাবি জানাল বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট।
ফ্রন্টের অনলাইনে অনুষ্ঠিত এক সভায় এই ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে মূখ্য আহ্বায়ক প্রদীপ দত্তরায় বলেন যে বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট এর পক্ষ থেকেই প্রথম এই এফ সি আই কেলেঙ্কারির ব্যাপারটি উত্থাপন করা হয় এবং আমাদের কাছে এই ব্যাপারে তথ্য থাকায় আমরা সি বি আই দপ্তরকেও ব্যাপারটি জানাই। এই অভিযোগের ভিত্তিতে এরপর সিবিআই এর একটি দল এখানে এসে তদন্ত করে এবং বিভিন্ন অসঙ্গতি দেখতে পায়,যার তথ্য আমাদের কাছে রয়েছে।কিন্তু তারপর আর সে ব্যাপারে কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি। প্রদীপ বাবু বলেন এখন ধারণা হচ্ছে যে বরাকের বিভিন্ন সিন্ডিকেটের মালিক মূলচাদ বৈদের হস্তক্ষেপেই হয়তো সিবিআই তদন্ত তখন থেমে গেছিল। তিনি বলেন এই মূলচাদ বৈদকে আমরা আগেও বিভিন্ন সিন্ডিকেটে জড়িত থাকতে দেখেছি। গত বছর কোরোনার প্রথম ঢেউ চলাকালীন সে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে খাদ্য সরবরাহের কেলেঙ্কারিতে জড়িত ছিল যারজন্য আমরা মামলাও করেছিলাম। এরপর সাবইন্সেপেক্টর পদের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করার সাথে সে এবং তার ভাই জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে এবং এই ব্যাপারেও আমরা তখন অভিযোগ জানিয়েছি।এখন আবার এফ সি আই চাল সিন্ডিকেটের সঙ্গে তার জড়িত থাকার প্রমাণ মিলল।
বিডিএফ মূখ্য আহ্বায়কের প্রশ্ন – কি করে এই বিতর্কিত মূলচাঁদ বৈদ এতো ক্ষমতাবান হয়ে উঠল, কেনোই বা শাসকদলের নেতা মন্ত্রীদের সাথে তার এতো দহরম মহরম ? তিনি বলেন যে এসবের পিছনে রাজনৈতিক নেতা মন্ত্রীদের পরোক্ষ মদত রয়েছে, বিশেষতঃ জনৈক সাংসদ এবং বিধায়কের সংযুক্ত থাকার জোরালো অভিযোগ রয়েছে। প্রদীপ বাবু বলেন যে এই উপত্যাকার উন্নয়ন তথা সামাজিক কাজে মাড়োয়ারি সমাজের যথেষ্ট অবদান রয়েছে । মহাবীর জৈন,অমর খান্ডেলওয়াল বা শিলচরের গুলগুলিয়া পরিবারের মতো অনেকেই গঠনমূলক ভুমিকা দ্বারা বরাকের নাম উজ্জ্বল করেছেন। কিন্তু বিতর্কিত এই মূলচাদ বৈদের জন্য এই জনগোষ্ঠীর নামে জনগণের কাছে ভূল বার্তা যাচ্ছে।তাই অবিলম্বে তাকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক। তাহলেই বরাকের এইসব সিন্ডিকেটের পিছনে কারা মূল মাথা তা বেরিয়ে আসবে।
বিডিএফ এর আরেক আহ্বায়ক জহর তারণ বলেন যে সংবাদ মাধ্যম সূত্রে আমরা জানতে পেরেছি যে গতকাল পরিদর্শনের সময় দায়িত্ব প্রাপ্ত সরকারি পরিদর্শক ও কর্মীদের হেনস্তা এমনকি ঠেলা ধাক্কা অব্দি করা হয়েছে। এও দেখা গেছে যে এই বিতর্কিত ব্যাবসায়ী অকুস্থলে পৌঁছে বারবার জেলা প্রশাসনের দোহাই দিচ্ছিলেন, যা রীতিমত অস্বস্তিকর। তার বক্তব্য এসবকি জেলাশাসকের নজরে আসেনি ? নতুবা এখনো প্রশাসনের তরফে এই ব্যাপারে কোনো প্রতিক্রিয়া নেই কেনো ? তবে কি ধরে নিতে হবে যে এইসব কেলেঙ্কারির সাথে জেলা প্রশাসনও জড়িত যারজন্য তারা এখনো নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে চলেছেন ?
বিডিএফ এর আরেক আহ্বায়ক পার্থ দাস বলেন যে কাছাড় বিজেপির জেলা সভাপতি রামনগর এফ সি আই গুদাম থেকে বিভিন্ন জায়গায় চাল পরিবহনের কাজে যুক্ত এবং এই পরিবহনের দায়িত্ব তাঁর উপর ন্যস্ত রয়েছে। কাজেই এসব ব্যাপার তার অজান্তে ঘটছে এটা একটি আশ্চর্যজনক ঘটনা। পার্থ দাস বলেন যে তাই আমরা অবিলম্বে এই চাল কেলেঙ্কারির ব্যাপারে জনসমক্ষে তার প্রতিক্রিয়া জানাতে অনুরোধ করছি এবং একই সাথে দলের উর্ধতন কর্মকর্তাদের সবিশেষ জানিয়ে বরাকের সমস্ত সিন্ডিকেটের অবসানকল্পে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করার আবেদন জানাচ্ছি।