শুক্রবার অধিবেশনে সিপিএমের সুজন চক্রবর্তী সরব হন। তিনি বলেন, সর্বসম্মতভাবে রাজ্যের নাম ‘বাংলা’ করার প্রস্তাব নিয়ে তা গ্রহণ করতে কেন্দ্রকে পাঠানো হয়েছে। এটার দ্রুত নিষ্পত্তি হওয়া উচিত। ঝুলিয়ে রাখা উচিত নয়।
রাজ্যের বাংলা নামের অধিকার ফিরিয়ে দিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে ফের দাবি জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পশ্চিমবঙ্গের নামবদল প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার
তৃণমূল-কংগ্রেস-বামেরা একযোগে কেন্দ্রীয় দৃষ্টিভঙ্গীর সমালোচনা করেন। এ ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমি প্রধানমন্ত্রীকে ইতিমধ্যে চিঠি দিয়েছি। বাংলা নামের অধিকার তাড়াতাড়ি ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি করছি।“
মুখ্যমন্ত্রী এদিন বিভিন্ন সালের উল্লেখ করে অধিবেশনে বলেন, ২০০৩ থেকে এ ব্যাপারে আমরা ৮ বার চেষ্টা করেছি। এ ব্যাপারে যা যা জানতে চাওয়া বা শোধরাতে বলা হয়েছিল, তা করা হয়েছে। আমরা বাংলা নাম চেয়েছি। কেউ হয়ত প্রতিবেশী রাষ্ট্রর সঙ্গে একই নাম হয়ে যাওয়ার কথা ভাবছেন। কিন্তু ওটা বাংলাদেশ। এটা রাজ্য। পঞ্জাবও তো দুটো আছে। একটা পাকিস্তানে, একটা ভারতে।
গত মঙ্গলবার অধিবেশনে এ বিষয়ে আলোচনা শোনার পর অধ্যক্ষ বলেন, বিষয়টি নিয়ে অতীতে এই অধিবেশনেই সর্বদলীয় সিদ্ধান্ত হয়েছিল। এটির আইনি রূপ দিতে কেন্দ্রকে বলা হবে। পশ্চিমবঙ্গের নাম বদলের ব্যাপারে রাজ্যের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য আর্জি জানানো হবে। এরপর প্রধানমন্ত্রীকে এ ব্যাপারে চিঠি দেন মুখ্যমন্ত্রী।
রাজ্যের নাম পরিবর্তনের বিষয়টি কতদূর এগিয়েছে, সে বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছে সম্প্রতি সংসদে জানতে চান রাজ্যসভার সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর জবাবে লিখিত ভাবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই জানিয়ে দেন, বিষয়টি উত্থাপনই হয়নি। তাঁর বক্তব্য, নাম পরিবর্তনের জন্য সংসদে বিল পেশ করে সংবিধান সংশোধনী আনতে হয়। কিন্তু সেটা যে হেতু করা হয়নি, তাই নাম পরিবর্তনের বিষয়টি সেই বিল পেশের উপরেই নির্ভর করছে।
এরপর বিষয়টি নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়। শুক্রবার অধিবেশনে সিপিএমের সুজন চক্রবর্তী সরব হন। তিনি বলেন, সর্বসম্মতভাবে রাজ্যের নাম ‘বাংলা’ করার প্রস্তাব নিয়ে তা গ্রহণ করতে কেন্দ্রকে পাঠানো হয়েছে। এটার দ্রুত নিষ্পত্তি হওয়া উচিত। ঝুলিয়ে রাখা উচিত নয়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বিজেপি নেতারা বলেন, করতে দেব না। একি গায়ের জোর নাকি?“
তাঁর বক্তব্য, কোনও রাজ্যের নাম পরিবর্তন করতে হলে আগে সংশ্লিষ্ট রাজ্য বিধানসভায় প্রস্তাব পাশ করতে হয়। প্রথমে ২০০৩ সালে মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য রাজ্যের নাম ‘পশ্চিমবঙ্গ’ রাখতে চান। বিধানসভায় এ ব্যাপারে সর্বসম্মত প্রস্তাব নেওয়া হয়। এর পর ২০১১-র সেপ্টেম্বর মাসে রাজ্যের নাম বদলে বাংলা, ইংরেজি ও হিন্দিতে যথাক্রমে বাংলা, বেঙ্গল ও বঙ্গাল রাখার প্রস্তাব নেয় এ রাজ্যের সরকার। আমরা তার বিরোধিতা করে বলি, একটা রাজ্যের তিন রকম নাম হতে পারে না। এরপর শুক্রবার আলোচনা শেষে অধ্যক্ষ বলেন, “রাজ্যের নামবদলের বিষয়টি আটকে রাখা আমাদের অধিকারে হস্তক্ষেপের সামিল বলে মনে করছি।