রবিবার অনুষ্ঠিত এই সমাবেশের মূল বক্তা ছিলেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের দক্ষিণ অসম প্রান্ত প্রচারক ও কর্মকুঞ্জ বিভাগ প্রচারক মনোরঞ্জন প্রধান।
পূর্বোত্তর সীমান্ত চেতনা মঞ্চের করিমগঞ্জ নগর সমিতি আয়োজিত লাচিত দিবস উপলক্ষে দেশভক্তি সমাবেশের আয়োজন করা হয়। রবিবার অনুষ্ঠিত এই সমাবেশের মূল বক্তা ছিলেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের দক্ষিণ অসম প্রান্ত প্রচারক ও কর্মকুঞ্জ বিভাগ প্রচারক মনোরঞ্জন প্রধান।
সীমান্ত চেতনা মঞ্চের জেলা সভাপতি রামেন্দু ভট্টাচার্যের পৌরোহিত্যে সভায় বক্তব্য পেশ করতে গিয়ে মনোরঞ্জন প্রধান বলেন, আমরা স্বাধীনতা কীভাবে পেলাম তা ভাবার আর সময় নেই। আজ আমরা নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত, দেশের কথা ভাবতে পারছি না। অথচ ইজরায়েল জাপানের মতো ছোট দেশ আজ বিশ্বের দরবারে দেশভক্তির পাশাপাশি উন্নয়নের এক নিদর্শন তুলে ধরেছে। দেশভক্তি না থাকলে কোনও দেশে নিজেকে বিশ্বের সেরা হিসেবে তুলে ধরতে পারবে না। যারা দেশ স্বাধীন করেছিলেন তাঁদের অনেক আত্মবলিদান দিতে হয়েছে। জীবন-যৌবন ত্যাগ করে দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছিলেন যাঁরা, আজ আমরা তাঁদের ভুলে গেছি। সে সময় স্বাধীনতা আন্দোলন করতে গিয়ে সরকারি সম্পত্তি বিনষ্ট আন্দোলনে জেলে যাওয়ার পাশাপাশি আত্মহত্যা পর্যন্ত করতে হয়েছে অনেককে। শহিদদের আন্দোলনের জন্য জঙ্গলে থেকে বিনা চিকিৎসায় মরতে হয়েছে। আজ তাঁদের বলিদানের কথা ভুলে আমরা নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত।
এ-দেশ বিশ্বসেরা হতে হলে প্রথমেই নিজেদের মধ্যে দেশাত্মবোধ জাগাতে হবে। প্রসঙ্গক্রমে মনোরঞ্জন বলেন, ইজরায়েলের বাসিন্দারা নানা দেশে ঘুরে ঘুরে নিজের দেশের জন্য আন্দোলন করেছিলেন। অনেক কষ্টের ফলে তাঁরা স্বাধীনতা পেয়েছেন। তাঁদের নিরলস প্রচেষ্টা আত্মবলিদান আত্মসম্মানে দেশ অনেক এগিয়ে চলছে। বিশ্ব দরবারে ১৩০ কোটি ভারতবাসী আমরা। অথচ তাঁদের কাছ থেকে টেকনলজি এবং অন্যান্য বিষয়ে জ্ঞান নিতে হচ্ছে। ভারতবর্ষ বিশ্বের সব থেকে প্রাচীনতম দেশ। ভারতবর্ষের চার ভাগের এক ভাগ জাপান, যেখানে পরমাণু বোমা নিক্ষেপ করা হয়েছিল। যে দেশে প্রতিদিন ভূমিকম্প হয় প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলা করে, সেই জাপান বিশ্বের সেরা তালিকায় আজ। দেশের প্রতি তাঁদের ভালোবাসার জন্য আজ বিশ্বসেরা ভারতবর্ষ তাঁদের কাছে গিয়ে বলতে হচ্ছে আমাদের দেশে বিনিয়োগ করার জন্য। জাপান দেশাত্মবোধের ক্ষেত্রে আজ অনেক অনেক অগ্রগতি লাভ করেছে।
ভারতবর্ষের নাগরিকদের অনেক ক্ষেত্রে ইজরায়েল জাপান থেকে দেশাত্মবোধকের পাঠ নিতে হবে। প্রধান অতিথি মনোরঞ্জন প্রধান ভারতবর্ষের বর্তমান এবং ভবিষ্যত নিয়ে অনেক প্রশ্ন উত্থাপন করেন। তিনি বলেন, এখনও সময় আছে, আমাদের সবাইকে একতার বলে দেশকে উন্নত করার অঙ্গীকার করতে হবে।
আজকের অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য পেশ করেন জিডিসি রঞ্জিতকুমার তালুকদার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দেবজিৎ নাথ, সীমান্ত চেতনা মঞ্চের রাজ্য কমিটির সদস্য দীপক দাস, জেলা সম্পাদক এস চক্রবর্তী, জেলা সহ-সভাপতি গৌতম দে প্রমুখ। অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার আগেই চেতনা মঞ্চের পতাকা উত্তোলন করেন জেলা সভাপতি রামেন্দ্র ভট্টাচার্য।
ভারতমাতা ও লাচিত বরফুকনের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ এবং প্রদীপ প্রজ্বলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়। চেতনা মঞ্চের পক্ষ থেকে অতিথিদের উত্তরীয় দিয়ে বরণ করা হয়। গোটা অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন চেতনা মঞ্চের জেলা সহ-সভাপতি গৌতম দে।