খার্চি পূজার সাতদিন মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে৷ ত্রিপুরা, কলকাতা, বাংলাদেশ এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের শিল্পীরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন
ত্রিপুরার ঐতিহ্যবাহী খার্চি উৎসব বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে৷ সাতদিনব্যাপী উৎসবকে ঘিরে উন্মাদনা আজ থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে৷ পুরাতন আগরতলায় অবস্থিত চতুর্দ্দশ দেবতার মন্দিরে উপজাতিদের খার্চি পূজা অনুষ্ঠিত হবে ৷ খার্চি উপজাতিদের অন্যতম প্রধান উৎসব হলেও ত্রিপুরায় জাতি-উপজাতি সকল অংশের মানুষ এই পূজাকে ঘিরে আনন্দে মেতে ওঠেন৷ ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লবকুমার দেব আগামীকাল খার্চি মেলার উদ্বোধন করবেন৷আজ খার্চি মেলা কমিটির চেয়ারম্যান তথা স্থানীয় বিধায়ক রতন চক্রবর্তী হিন্দুস্থান সমাচার-কে জানান, মেলায় মোট ৮০০টি বিভিন্ন ধরনের দোকান খুলেছে৷ তাঁর কথায়, খার্চি মেলাকে ঘিরে আটোসাঁটো নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ তিনি বলেন, নিরাপত্তায় মোট ৬০০ জন নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে৷ তাতে ৪০০ জন টিএসআর, স্কাউট অ্যান্ড গাইডস ১৫০ জন এবং বাকি পুলিশ কর্মীরা থাকবেন৷ তিনি জানান, ১৫০ জন নিরাপত্তা কর্মী সাদা পোশাকে নজরদারি রাখবেন৷ এদিকে, একটি ওয়াচ টাওয়ার এবং ৩০টি সিসিটিভি নিরাপত্তাজনিত নজরদারির জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন৷
তিনি আরও জানান, গত বছর খার্চি পূজায় ২২ লক্ষ পুর্ণ্যার্থীর সমাগম ঘটেছিল৷ এ-বছর আরও বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি৷ তাঁর যুক্তি, এ-বছর খার্চি পূজার সাতদিন মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে৷ ত্রিপুরা, কলকাতা, বাংলাদেশ এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের শিল্পীরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন৷ তিনি জানান, কলকাতা থেকে সহজ মা, জি বাংলা সারেগামাপা খ্যাত উর্মি চৌধুরী, বাংলাদেশ থেকে ফকির সাহাবুদ্দিন, শাহনাজ রহমান স্বীকৃতি, মমতাজ রহমান লাবনি, ত্রিপুরা থেকে ইন্ডিয়ান আইডল খ্যাত সৌরভী দেববর্মা, জি-টিভি লিটল্ চ্যাম্পস স্মিতা নন্দী প্রমুখ শিল্পীরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন৷ তিনি আরও জানান, সিকিম, মিজোরাম, মণিপুর, অরুণাচল প্রদেশ এবং অসম থেকে প্রায় ৯০ জন শিল্পী গান ও নৃত্য পরিবেশন করবেন৷
প্রসঙ্গত, আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে রাজ্যের ঐতিহ্যবাহী খার্চি উৎসব ও প্রদর্শনী৷ এ-উপলক্ষ্যে কৃষ্ণমালা মঞ্চে ও হাবেলী মুক্তমঞ্চে সাতদিন ব্যাপী আয়োজিত হবে সাংস্কৃতিক ও শিশু উৎসব৷ আগামীকাল খার্চি উৎসবের প্রথম দিনের সাংস্কৃতিক উৎসবে কৃষ্ণমালা মঞ্চে পরিবেশিত হবে সুরঝংকারের সমবেত সংগীত নৃত্যালোকের সমবেত নৃত্য, আড়ালিয়ার রেখা দেব ও তাঁর দলের ধামাইল নৃত্য, ত্রিপুরা ট্রাইবেল ফোক মিউজিক কলেজের শিল্পীদের ও সিপাহিপাড়া লোকরঞ্জন শাখার শিল্পীদের জনজাতি লোকনৃত্য৷ এছাড়া থাকবে তুলাকোনা যতীন্দ্রকুমার উচ্চমাধ্যমিক এবং পুরাতন আগরতলা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিল্পীদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান৷ বিকেল তিনটায় হাবেলী মুক্তমঞ্চের শিশু উৎসবে স্থানীয় বিদ্যালয় ও শিশুশিল্পী সংস্থার শিল্পীরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করবে৷
অন্যদিকে, কৃষ্ণমালা মঞ্চে সান্ধ্যকালীন সাংস্কৃতিক উৎসবে সুরসৌরভ সমবেত সংগীত, বিলোনিয়া সৃজন ড্যান্স অ্যাকাডেমি, মান্দাই লোকরঞ্জন শাখা, অরিয়েন, নাদপিঠ, হরগৌরী ড্যান্স অ্যাকাডেমি, রিফিউজি ওয়েলফেয়ার সোসাইটি, নৃত্যরিদম, ছন্দগীতি এবং নৃত্যালয় ড্যান্স অ্যাকাডেমির শিল্পীরা সমবেত নৃত্য পরিবেশন করবেন৷ রাতের দিকে কৃষ্ণমালা মঞ্চে একক সংগীতের আসরে ১৫ জন অতিথি শিল্পী সংগীত পরিবেশন করবেন৷