সবজির চাষ যোগ্য জমি ছিল ৩ লাখ ৮১ হাজার ৯৮ হেক্টর। এই চাষের মধ্যে ৩৩ শতাংশের বেশি ক্ষতি হয়েছে ৯২ হাজার ২৬৫ হেক্টর।
আশঙ্কার তুলনায় পশ্চিম মেদিনীপুরে কম বৃষ্টিপাত হলেও কৃষিতে সুদূরপ্রসারী ক্ষতির সম্ভাবনা অনেকটাই, জানাল কৃষি দফতর। রবিবারের মত আবহাওয়ার উন্নতি হতে থাকলে সবজি ও আলুর জমি তৈরির কাজ হয়তো সময়ে হবে। কিন্তু সামগ্রিক কৃষিতে ক্ষতি থাকছেই।যার কারণে কৃষকদের বাঁচাতে সমস্ত বীমা কোম্পানিকে নিয়ে বৈঠক করলেন জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা। জেলাশাসকের দপ্তর এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ন-শোর বেশি বাড়ি ইতিমধ্যেই আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে একটি।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কন্ট্রোল রুম খুলে চারদিকে নজর রাখার সঙ্গে সঙ্গে কৃষি দপ্তর এর পক্ষ থেকে মাঠ পরিদর্শন করে কৃষিতে সম্ভাব্য ক্ষতির একটা চিত্র তুলে নেওয়া হয়েছে রবিবার বিকেলের মধ্যে। দফতরের করা হিসেব অনুসারে কৃষি দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর প্রভাত বসু জানিয়েছেন, প্রস্তুতি হিসেবে কৃষি দফতর যে পরিমাণ বৃষ্টি ঝড়ের আশঙ্কা করেছিল সেই পরিমাণ হয়নি। তবে বুলবুলের কারণে একদিনে বৃষ্টি হয়েছে ২০.৪ মিলিমিটার, পরেরদিন হয়েছে ৩২.৯ মিলিমিটার৷ জেলাতে এই মরসুমে মোট আমন চাষ হয়েছে- ৩লক্ষ ৭২ হাজার ১১৩ হেক্টর জমিতে। যার বেশির ভাগ অংশই পাকাধান রয়েছে। জেলার অনেক নিচু এলাকায় যেমন নারায়ণগড় কেশপুর ঘাটাল -এ পাকা ধানের জমিতে জল জমেছে, তার ওপর ধানগাছ পড়ে রয়েছে। সেখানে ধানে অংকুর হয়ে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে। এবারে করা চাষের মধ্যে ৩৩ শতাংশের বেশি ক্ষতি হয়েছে এমন চাষের পরিমাণ ১ লক্ষ ৮৬ হাজার ৬০০ হেক্টর জমি। এর থেকে কৃষি দফতরের আশংকা ৯ লক্ষ ৩৩ হাজার টন ধান উৎপাদন কমে যেতে পারে। এই লোকসানের হিসেব সরকারের নতুন করা ধানের দাম অনুসারে প্রতি টন ১৮ হাজার ১৫০ টাকা হিসেবে মোট এই জেলাতেই ধানের ক্ষেত্রে ১৬ লক্ষ ৯৩ হাজার টাকা লোকসান হবে। সব মিলে ৩৫৫৮ টা মৌজা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরপরেও রয়েছে সবজির ক্ষয়ক্ষতি।এবার সবজির চাষ যোগ্য জমি ছিল ৩ লাখ ৮১ হাজার ৯৮ হেক্টর। এই চাষের মধ্যে ৩৩ শতাংশের বেশি ক্ষতি হয়েছে ৯২ হাজার ২৬৫ হেক্টর। ফসলের উৎপাদনের ক্ষতি হয়ে গিয়েছে ৯ লক্ষ ৯৪ হাজার ৮৬০ টন। টাকার হিসেবে এই ক্ষতির পরিমাণ হল ১৭ লক্ষ ৭ হাজার ৫৭ টাকা।
প্রভাত বাবু আরও জানিয়েছেন, বেশকিছু পরোক্ষ ক্ষতি হচ্ছে। এই মুহূর্তে বেশকিছু ধান রোপন ও আলুর জমি তৈরির কাজ হওয়ার কথা। বৃষ্টি হয়ে মাটি ভিজে যাওয়ার কারনে সেই প্রস্তুতিও পিছিয়ে গেল অনেকটা । তবে সমস্ত বীমা কোম্পানির সঙ্গে বৈঠক করে জানানো হয়েছে আপনারা মাঠ পরিদর্শন করুন। কোন কৃষক যাতে বীমার সুবিধা থেকে বঞ্চিত না হয়। বাংলা শস্য বীমা যোজনায় গুরুত্ব এবার বেশি দেওয়া হয়েছিল। অন্যদিকে জেলা শাসকের দফতর থেকে জানানো হয়েছে, জেলা জুড়ে আংশিক বাড়ি ক্ষতি হয়েছে ৯০০, পুরোপুরি ক্ষতি হয়েছে একটি ৷ আরও হিসেব চলছে ৷