ঘটনাটি ঘটেছে করিমগঞ্জ জেলার বাজারিছড়া থানাধীন হাতিখিরা বাগানের কুড়ি নম্বর লাইনের বরহমবাবা এলাকায়
পুরনো একটি চাদরকে কেন্দ্র করে বচসা। বচসার চূড়ান্ত পরিণতি খুন। মেয়ের উন্মত্ত ভাসুরের কুঠারের ঘায়ে খুন এক মহিলা। ঘটনাটি ঘটেছে করিমগঞ্জ জেলার বাজারিছড়া থানাধীন হাতিখিরা বাগানের কুড়ি নম্বর লাইনের বরহমবাবা এলাকায়। ছোট ভাইয়ের শাশুড়িকে নির্মম খুনের দায়ে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে ঘাতক লক্ষ্মীচরণ পাসিকে। অন্যদিকে নিহত বিরো পাসির মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য করিমগঞ্জ সিভিল হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ।
লোমহর্ষক ঘটনা সম্পর্কে বাজারিছড়া থানার প্রভেশনারি এসআই মানবজ্যোতি মালাকার জানান, কালীপুজো উপলক্ষ্যে গত তিনদিন আগে হাতিখিরার কুড়ি নম্বর লাইনে মেয়ে মিতালি পাসির বাড়ি এসেছিলেন পাথারকান্দি থানাধীন পুতনি চাঁদপুর চা বাগানের প্রয়াত রাজবিহারী পাসির স্ত্রী তথা মা বিরো পাসি (৫৫)। গত কয়েরকদিন ধরে তিনি মেয়ে ও জামাই শিবশংকর পাসির বাড়িতে আনন্দে দিন কাটাচ্ছিলেন। কিন্তু বুধবার দুপুরে পুরনো একটি চাদরকে কেন্দ্র করে বচসার সৃষ্টি হয় শিবশংকরদের বাড়িতে।
পুলিশ অফিসার জানান, এদিন মিতালি একটি পুরনো চাদর বের করে তা জন্য তার বড় জা-কে পরতে দিয়েছিলেন। এতে আপত্তি জানান ভাসুর লক্ষ্মীচরণ পাসি। ভাসুরের বক্তব্য, আমরা এত গরিব নই যে আমার বউকে পুরনো চাদর পরতে হবে। আমি একটি নতুন চাদর কিনে দেব। তবু তোমাদের পুরনো চাদর আমরা ব্যবহার করব না।
ঝগড়াটি ভাসুর, জা ও ছোট ভাইয়ের বউয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। এক সময় গায়ে পড়ে যোগ দেন অতিথি মাওইমা। দেখতে দেখতে বচসা তীব্র রূপ ধারণ করে। এক সময় মেজাজ হারিয়ে রাগের বশেমাওইমা ঘরের ভিতর থেকে ধারালো অস্ত্র নিয়ে পুত্রা লক্ষ্মীচরণকে আঘাত করতে যান, কিন্তু তিনি ব্যর্থ হন। পাল্টা মারমুখি হয়ে ওঠেন পুত্রা তথা মেয়ের ভাসুর লক্ষ্মীচরণ। তিনি রাগের মাথায় ঘর থেকে ধারালো কুঠার এনে মাওইমা বিরো পাসির ঘাড়ে কোপ বসিয়ে দেন। সঙ্গে সঙ্গে রক্ত ঝরিয়ে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান বিরো পাসি
এদিকে বাজারিছড়া পুলিশ ঘটনার খবর পেয়ে ছুটে যায় হাতিখিরার কুড়ি নম্বর লাইনে। সন্ধ্যায় প্রয়াত জয়করণ পাসির ৪১ বছেরের ছেলে ঘাতক লক্ষ্মীচরণকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সেই সঙ্গে খুনের কাজে ব্যবহৃত কুঠারটিও পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার ধৃত খুনিকে করিমগঞ্জের আদালতে সোপর্দ করা হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ অফিসার মানবজ্যোতি মালাকার।
ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পুতনি গ্রাম পঞ্চায়েতের সভানেত্রী নমিতা গোয়ালা জানান, বিরো পাসিকে তিনি খুব ভালো চেনেন। তিনি খুব অমায়িক মহিলা ছিলেন। তাঁকে খুন করা হয়েছে জেনে তাঁরা মর্মাহত। তাঁর স্বামীর মৃত্যুর পর ছেলেরা বেঙ্গালুরুতে বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করে তাঁদের পরিবার প্রতিপালন করছে বলে জানান নমিতা গোয়ালা।