স্তাবের পক্ষে ভোট পড়েছে ১২৫। বিপক্ষে ১০৫। ফলে আর বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান থেকে আসা অমুসলমান উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে আর কোনও বাঁধা রইল না।
লোকসভার পর সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় পাশ নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল। বুধবার রাতে হওয়া ভোটাভুটিতে প্রস্তাবের পক্ষে ভোট পড়েছে ১২৫। বিপক্ষে ১০৫। ফলে আর বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান থেকে আসা অমুসলমান উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে আর কোনও বাঁধা রইল না। উল্লেখ করা যেতে পারে এর আগে লোকসভায় প্রস্তাবের পক্ষে ভোট পড়েছিল ৩১১। এদিন রাজ্যসভায় জবাবি ভাষণে বক্তব্য রাখতে গিয়ে অমিত শাহ জানিয়েছিলেন, দেশভাগের ঐতিহাসিক ভুলকে সংশোধন করতেই নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পেশ করা হয়েছে।
এদিন রাতে নিজের জবাবি ভাষণে বক্তব্য রাখতে গিয়ে অমিত শাহ জানিয়েছেন, ‘কপিল সিব্বল, আনন্দ শর্মা যতই উদাহরণ দিক না কেন আমি ফের বলব ধর্মের ভিত্তিতেই দেশভাগ হয়েছিল। সেই ভুলকে সংশোধন করতেই এই বিল পেশ করা হয়েছে। দেশভাগ যে সমস্যার তৈরি করেছিল, তা সমাধানের লক্ষ্যে এই বিল পেশ করা হয়েছে। পাকিস্তান সংখ্যালঘুদের ভাল রাখতে ব্যর্থ হয়েছে।’
নাম না করে কংগ্রেসকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, আগের সরকার বিষয়টি ভাবলে এই বিল পেশের কোনও প্রয়োজন পড়ত না। কেন্দ্রের বিজেপি সরকারে অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়ে তিনি জানিয়েছেন, শুধুমাত্র দেশ চালানোই নয়। ভুলগুলিকে সংশোধন করে সঠিক কাজ করবে কেন্দ্র। ৫০ বছর আগে বিলটি পেশ হলে, পরিস্থিতি এমন ভয়াবহ আকার ধারণ করত না।
ভারতের মুসলমানেরা যে ভাল অবস্থায় রয়েছে তার উদাহরণ তুলে ধরে অমিত শাহ জানিয়েছেন, ভারতের প্রধান বিচারপতি, রাষ্ট্রপতি, উপরাষ্ট্রপতি এবং রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের পদেও মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষ আসীন হয়েছিলেন।
বুধবার অমিত শাহ জানিয়েছেন, ‘লিয়াকত-নেহেরু চুক্তির ধারাগুলিকে মানেনি প্রতিবেশী দেশ। প্রতিটি সরকারের উচিত এই ধারাগুলিকে ব্যবহারিক ভাবে কার্যকর করা।’
উল্লেখ করা যেতে পারে ১৯৫০ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলি খানের মধ্যে চুক্তি হয়। যা দুই দেশের সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার কথ বলেছিল।
এদিন অমিত শাহ বলেন, ইউপিএ আমলে তৎকালীন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরমকে রাজস্থান সরকার চিঠি দিয়েছিল, সেই চিঠিতে দুই পাকিস্তান থেকে আসা হিন্দু ও শিখদের বিশেষ সুবিধা দেওয়ার কথা বলেছিল। কিন্তু বর্তমানে দুই থেকে সেই সংখ্যাটা ছয় করা হয়েছে।
অমিত শাহ জানিয়েছেন, রোহিঙ্গারা প্রথমে মায়ানমার থেকে বাংলাদেশে এসেছে। তারপর ভারতে অনুপ্রবেশ করেছে। ভারতে সরাসরি রোহিঙ্গারা আসেনি। ঐতিহাসিক ভুলকে সংশোধন করতেই এই বিলের পেশ করা হয়েছে। পাকিস্তান, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান থেকে আসা অমুসলমান সম্মানজনক জীবন দিতে এই বিলের পেশ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন যে এই বিল কোনও ভাবেই সংবিধানে বর্ণিত অনুচ্ছেদ ১৪ লঙ্ঘন করছে না। প্রসঙ্গত এদিন ভোটদান থেকে বিরত থেকে শিবসেনা।