সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের অন্তিম দিন উত্তাল হল লোকসভা ও রাজ্যসভা। ‘রেপ ইন ইন্ডিয়া’ মন্তব্যের জের, রাহুলকে আক্রমণ স্মৃতি ও লকেটের
কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীর ‘রেপ ইন ইন্ডিয়া’ মন্তব্যের জেরে শুক্রবার, সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের অন্তিম দিন উত্তাল হল লোকসভা ও রাজ্যসভা। নিম্নকক্ষ লোকসভায় রাহুলকে তীব্র আক্রমণ করেছেন বিজেপি সাংসদ স্মৃতি ইরানি, রাজনাথ সিং, লকেট চট্টোপাধ্যায়-সহ অন্যান্যরা। লোকসভায় তুমুল হই হট্টোগোলের কারণে দুপুর বারোটা পর্যন্ত লোকসভার অধিবেশন মুলতুবি করে দেন স্পিকার ওম বিড়লা। রাহুলের ‘রেপ ইন ইন্ডিয়া’ মন্তব্যের জেরে উত্তাল হয় রাজ্যসভাও। রাজ্যসভায় রাহুলকে ক্ষমা চাইতে বলেন উচ্চকক্ষের বেশ কয়েকজন বিজেপি সাংসদ। তখন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান এম বেঙ্কাইয়া নাইডু বলেন, ‘এই কক্ষের সদস্য নন, এমন ব্যক্তির নাম নিতে পারবেন না আপনারা।’
এদিন লোকসভায় বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় রাহুলকে আক্রমণ করে বলেন, ‘‘মোদিজি বলেছেন ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’, কিন্তু রাহুলজি বলেছেন ‘রেপ ইন ইন্ডিয়া’, ‘দেশজুড়ে যা ঘটে চলেছে সমস্ত কিছুকেই তার মানে তিনি স্বাগত জানাচ্ছেন এবং ধর্ষণ করতে বলছেন…ভারতীয় মহিলা এবং ভারত মাতার অপমান।’ এরপর লোকসভায় রাহুলকে আক্রমণ করে স্মৃতি ইরানি বলেছেন, ‘দেশের ইতিহাসে এই প্রথম কোনও নেতা আহ্বাণ জানালেন, মহিলাদের ধর্ষণ করুন। এটাই কি রাহুল গান্ধীর বার্তা দেশকে, ওঁর শাস্তি হওয়া উচিত।’ স্মৃতি ইরানি আরও বলেছেন, ‘সব মানুষ ধর্ষক নন। এটা দেশবাসীর অপমান।’ রাহুলের বিতর্কিত মন্তব্যের প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং লোকসভায় বলেছেন, ‘আমি ব্যথিত, গোটা দেশ ব্যথিত। শুধুমাত্র সদন নয়, গোটা দেশবাসীর কাছে তাঁর ক্ষমা চাওয়া উচিত বলে মনে করি।’ কংগ্রেস সাংসদ রাহুলকে সমর্থন করে ডিএমকে সাংসদ কানিমোঝি বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন মেক ইন ইন্ডিয়া, যা আমরা শ্রদ্ধা করি, কিন্তু দেশে এসব কী হচ্ছে? রাহুল গান্ধী সম্ভবত এটাই বলতে চেয়েছিলেন। দুর্ভাগ্যবশত মেক ইন ইন্ডিয়া হচ্ছে না, দেশের মহিলারা ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন। এটি উদ্বেগের বিষয়।’ সংসদে উত্তাপ ছড়ালেও রাহুল কার্যত নিজের মন্তব্য থেকে সরে আসছেন না। রাহুল জানিয়েছেন, ‘আমি ক্ষমা চাইব না।’ পাল্টা আক্রমণ করে তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের দেখিয়ে দেব, নরেন্দ্র মোদিজি দিল্লিকে রেপ ক্যাপিটাল বলেছিলেন, আমার ফোনে ভিডিও ক্লিপও রয়েছে। প্রত্যেকে যাতে দেখতে পারেন সেজন্য আমি টুইট করব। আসলে উত্তর-পূর্বের প্রতিবাদ থেকে নজর ঘোরাতেই এসব করছে বিজেপি।’