শিলচর | বিদ্যুৎ নিয়ে জনগনের অগ্নিপরীক্ষা নেবেন না

2 - মিনিট |

অবিলম্বে প্রিপেইড ব্যাবস্থা প্রত্যাহার সহ এ রাজ্যের প্রত্যেক গ্রাহককে বিনামূল্যে ২০০ ইউনিট বিদ্যুৎ সরবরাহের দাবিতে সরব হল বিডিএফ

কেআরসি টাইমস বারাক ভ্যালি ব্যুরো

শিলচর : একদিকে প্রিপেইড বিল ব্যাবস্থা চালু করে নাগরিকদেরকে দ্বিগুণ বিল দিতে বাধ্য করা হচ্ছে অন্যদিকে সম্প্রতি ইউনিট প্রতি ৩০ থেকে ৭০ পয়সা মাশুল বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সরকারের তরফে।এর প্রতিবাদে এবার সরব হল বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট।

এক প্রেস বার্তায় বিডিএফ মিডিয়া সেলের মুখ্য আহ্বায়ক জয়দীপ ভট্টাচার্য বলেন যে দিল্লিতে আপ সরকার পরিবার প্রতি প্রথম ২০০ ইউনিট বিদ্যুৎ বিনামূল্যে সরবরাহ করছে। একই ভাবে পাঞ্জাবে প্রথম ২০০ ইউনিট বিদ্যুৎ বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি কর্ণাটকের কংগ্রেস সরকারও ২০০ ইউনিট বিদ্যুৎ বিনামূল্যে প্রদানের প্রতিশ্রুতি পালন করছে।

এর দেখাদেখি রাজস্থানের কংগ্রেস সরকারও ১০০ ইউনিট বিদ্যুৎ পরিবার প্রতি বিনামূল্যে সরবরাহ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু কেন্দ্র ও রাজ্যে ‘ডাবল ইঞ্জিন ‘ সরকার থাকা সত্ত্বেও এরাজ্যে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে গিয়ে নাভিশ্বাস উঠছে আপামর নাগরিকদের। এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কর্মদক্ষতা প্রশংশনীয়,পুরো উত্তর পূর্বে তাঁর প্রসিদ্ধি,অথচ রাজ্যের নাগরিকদের ২০০ ইউনিট করে বিনামূল্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে তিনি আগ্রহী নন – এটি আশ্চর্যজনক।

জয়দীপ বলেন শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের মতই বিদ্যুৎও একটি অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা হিসেবে যে কোন দেশে স্বীকৃত। প্রথম দুক্ষেত্রে যদি এরাজ্যে বিনামূল্যে পরিষেবা দেওয়া হয় তবে বিদ্যুতের ক্ষেত্রে নয় কেন ? তাই তিনি এব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে অবিলম্বে পরিবার প্রতি ২০০ ইউনিট বিদ্যুৎ বিনামূল্যে সরবরাহের দাবি জানিয়েছেন।

জয়দীপ এদিন আরো বলেন যে গ্রাহকদের কোন মতামত না নিয়ে এভাবে হটাৎ করে প্রিপেইড ব্যাবস্থা চালু করার পেছনে কারণ কি ? তিনি বলেন যে এতে নাগরিকদের দ্বিগুণ মাশুল দিতে হচ্ছে।যিনি আগে ২০০০ টাকা দিতেন তাকে ৪০০০ টাকা দিতে হচ্ছে অথচ তার কারণ জানতে চাইলে কোন স্পষ্টীকরণও দেওয়া হচ্ছে না।

এরই মধ্যে বিদ্যুৎ মন্ত্রী সম্প্রতি ইউনিট প্রতি বিদ্যুৎ মাশুল ৩০ থেকে ৭০ পয়সা অব্দি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন এবং সগৌরবে বলেছেন যে এভাবেই ঘাটতি পূরণ করা হবে। জয়দীপ বলেন এভাবে ধীরে ধীরে জনগনকে অগ্নিপরীক্ষার মধ্যে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন এর ফল ভালো হবেনা। এভাবে চললে যে কোন সময় জনগনের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হতে বাধ্য ।

বিডিএফ‌ মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক হৃষীকেশ দে এদিন বলেন যে তাদের কাছে খবর আছে যে বর্তমান আসাম সরকারের ঋণের পরিমাণ তিন লক্ষ ৬৫০০০ কোটি টাকা। আগামী সপ্তাহে আবার একহাজার কোটি টাকা ঋণ নিতে বাধ্য হচ্ছে এই সরকার অন্যথা কর্মচারীদের বেতন আটকে যাবে। তিনি বলেন সম্ভবতঃ এই আর্থিক সংকটের জন্য বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা বেসরকারি হাতে তুলে দিতে চাইছে সরকার। এবং তার প্রস্তুতি হিসেবেই এই স্মার্ট মিটার ও প্রিপেইড বিল ব্যবস্থা চালু করার সিদ্ধান্ত। তিনি বলেন এসব নিয়ে সজাগ হতে হবে সবাইকে।

বিডিএফ যুব ফ্রন্টের মূখ্য আহ্বায়ক কল্পার্ণব গুপ্ত এদিন বলেন যে দ্বিগুণ, তিনগুণ বিল নিলেও বরাক উপত্যকায় ঠিকঠাক বিদ্যুৎ পরিষেবা দিতে চূড়ান্ত ব্যর্থ এই সরকার। এই গরমে ঘনঘন লোডশেডিং এর যন্ত্রনায় অতিষ্ঠ হচ্ছেন এই উপত্যাকার গ্রাহকরা।কল্পার্ণব বলেন অবিলম্বে প্রিপেইড বিল ব্যাবস্থা প্রত্যাহার সহ , বিনামূল্যে প্রথম ২০০ ইউনিট বিদ্যুৎ সরবরাহ তথা ঠিকঠাক পরিষেবা প্রদানের সিদ্ধান্ত নিক সরকার। তিনি বলেন বিদ্যুতের মতো অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবাকে পণ্যে রূপান্তরিত করার চেষ্টা হলে‌ বৃহত্তর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবে বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট।‌

বিডিএফ এর পক্ষ থেকে এক প্রেস বার্তায় এই খবর জানিয়েছেন সদস্য দেবায়ন দেব।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *