শিলচর | শ্রীকৃষ্ণের ঐশ্বরিক প্রেমকে লাভ জিহাদ আখ্যা দেওয়া যায় না, বললেন প্রদীপ দত্ত রায়

2 - মিনিট |

হিন্দু মুসলিম নির্বিশেষে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার বঙ্গভাষী দের ঐক্যবদ্ধ হবার আহ্বান জানাল বিডিএফ

কেআরসি টাইমস বারাক ভ্যালি ব্যুরো

শিলচর : হিন্দুদের আরাধ্য দেবতা শ্রীকৃষ্ণের ঐশ্বরিক প্রেমকে যেমন ‘লাভ জেহাদ’ আখ্যা দেওয়া সমর্থনযোগ্য নয় তেমনি লাভ জেহাদের নামে একটি বিশেষ জনগোষ্ঠীকে অপমান করারও যৌক্তিকতা নেই – হিন্দু মুসলিম নির্বিশেষে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার বঙ্গভাষী দের ঐক্যবদ্ধ হবার আহ্বান জানাল বিডিএফ।

লাভ জেহাদ এই শব্দবন্ধ নিয়ে সম্প্রতি রাজ্যের রাজনৈতিক নেতারা বিভিন্ন বিতর্কিত মন্তব্য করছেন। এই নিয়ে এবার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করল বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট।

এক প্রেস বার্তায় বিডিএফ মূখ্য আহ্বায়ক প্রদীপ দত্তরায় বলেন যে শ্রীকৃষ্ণ হিন্দুদের আরাধ্য দেবতা। কৃষ্ণনাম হিন্দুদের ধর্মীয় আবেগের সাথে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িয়ে থাকে। এমনকি মৃত্যুর পূর্বে ও পরেও ও কৃষ্ণনাম স্মরণ করেন ধার্মিক হিন্দুরা। সেই কৃষ্ণের ঐশ্বরিক প্রেম যা আধ্যাত্মিকতার সোপান বলে বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থে বর্ণিত রয়েছে তাকে ‘লাভ জেহাদ’এর সাথে তুলনা করা দুর্ভাগ্যজনক ও কোনভাবেই সমর্থন যোগ্য নয়।

এর ফলে ধর্মভীরু হিন্দুদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হওয়া স্বাভাবিক। তাই যিনি এই ধরনের মন্তব্য করেছেন তাঁর পরিপক্কতা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন রয়েছে । প্রদীপ বাবু বলেন যদিও তিনি ইতিমধ্যে এজন্য ক্ষমা চেয়েছেন তবুও ভবিষ্যতে কোন গোষ্ঠীর ধর্মীয় আবেগে এইভাবে যে আঘাত দেওয়া না হবেনা সেই নিশ্চয়তা তাকে দিতে হবে। প্রদীপ দত্তরায় এদিন আরো বলেন যে মুখ্যমন্ত্রীও ইদানীং লাভ জেহাদ নিয়ে যেসব মন্তব্য করছেন তাতে একটি বিশেষ সম্প্রদায়কে বারবার দোষী সাব্যস্ত করার চেষ্টা স্পষ্ট।

তিনি বলেন এসবের উদ্দেশ্য আর কিছুই নয় , হিন্দু ও মুসলমান দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদ বিভাজন বাড়িয়ে তাঁদের এবং আজমলের ভোট ব্যাঙ্ক সংহত করাই এর অন্যতম উদ্দেশ্য। তিনি বলেন এসব সাম্প্রদায়িক রাজনীতিকে প্রতিহত করতে হলে আপামর রাজ্যবাসীকে অতি সতর্ক থাকতে হবে।

বিডিএফ মিডিয়া সেলের মুখ্য আহ্বায়ক জয়দীপ ভট্টাচার্য এদিন বলেন যে ধর্মীয় বিভাজনের ফলে রাজ্যে সবচেয়ে বেশি যে ভাষিক গোষ্ঠী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তারা হচ্ছেন বাঙালি। তিনি বলেন একদিকে মিয়া বলে একটি গোষ্ঠীকে অপমান করা হচ্ছে অন্যদিকে হিন্দু মুসলিম নির্বিশেষে রাজ্যের বাঙালিদের ডি ভোটার ,ডিটেনশন ক্যাম্প, এনার্সি ইত্যাদি করে কোনঠাসা করার প্রক্রিয়া চলছে।

জয়দীপ এদিন বলেন যে গতকাল গৌহাটিতে সি আর পিসিপির সভায় ধর্ম নির্বিশেষে রাজ্যের বাংলাভাষীদের যেভাবে ঐক্যবদ্ধ হবার ডাক দেওয়া হয়েছে বিডিএফ তাকে সর্বান্তকরণে সমর্থন করছে। তিনি বলেন সিআরপিসিসি একটি ঐতিহ্যবাহী সংগঠন।অতীতে গোলাম ওসমানী,কালিপদ সেন,তারাপদ ভট্টাচার্যের মতো নেতারা এর নেতৃত্বে দিয়েছেন।

বর্তমানেও হাফিজ রসিদ চৌধুরীর মতো বিদগ্ধ আইনজীবী এর অন্যতম উপদেষ্টা হিসেবে রয়েছেন। জয়দীপ এদিন বলেন যে বরাক উপত্যকায় ইদানীং উপত্যাকার স্বার্থে যে সমস্ত প্রতিবাদ,আন্দোলন হয়েছে তাতে উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ একসাথে যোগ দিয়েছেন। তাই বরাক উপত্যকার ব্যাপারে তাঁরা আশাবাদী। কিন্তু ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় কৌশলে এই বিভাজনকে জিইয়ে রাখার চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন এই বিভাজনকে প্রতিহত করে রাজ্যের এক কোটি ত্রিশলক্ষ বাঙালিকে ঘুরে দাঁড়াতে হবে। তাহলেই একমাত্র প্রাপ্য অধিকার ও সম্মানের সাথে বেঁচে থাকবেন রাজ্যের বঙ্গভাষীরা।

বিডিএফ মিডিয়া সেলের পক্ষ থেকে এক প্রেস বার্তায় এই খবর জানিয়েছেন আহ্বায়ক হৃষীকেশ দে।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *