সিএবি ভারতীয় মুসলমানদের অধিকার খর্ব করবে না: প্রধানমন্ত্রী

2 - মিনিট |

অযোধ্যায় রাম মন্দির প্রসঙ্গে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তোপ দেগে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, বহু শতাব্দী ধরে চলে আসা রামজন্মভূমি বিতর্ক নিয়ে প্যাঁচ কষে গিয়েছে কংগ্রেস। বিজেপি নিজের ইস্তেহারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে অযোধ্যার রামজন্মভূমির শান্তিপূর্ণ সমাধান হবে। শান্তিপূর্ণ ভাবে সেই সমস্যার সমাধান করে বিজেপি নিজের প্রতিশ্রুতি পূরণ করেছে।

কে আর সি টাইমস ডেস্ক

উত্তরপূর্বের রাজ্যগুলিকে অভয় দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পূর্ব ও উত্তরপূর্ব ভারতের সংস্কৃতি এবং ভাষার উপর নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের কোনও প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছেন তিনি। কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তোপ দেগে তিনি বলেন, নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল ভারতীয় মুসলমানদের কোনও অধিকার খর্ব করবে না । কিন্তু কংগ্রেস জেনেবুঝে মুসলমানদের উস্কে দিচ্ছে। লিয়াকত-নেহেরু চুক্তির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর পাকিস্তান, বাংলাদেশ, আফগানিস্তানে থাকা সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার জন্য যে চুক্তি হয়েছিল, তার যথাযথ ভাবে পালন করা হয়নি । এর জন্য দায়ী কংগ্রেস । পাকিস্তান, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান প্রতারিত হয়ে আসা হিন্দু সহ অন্যান্য সে দেশের সংখ্যালঘুদের প্রতি ন্যায় করেছে বিজেপি সরকার । 

বৃহস্পতিবার ঝাড়খন্ডের ধানবাদে নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানিয়েছেন, ‘পূর্ব এবং উত্তরপূর্বের রাজ্যগুলিকে আশ্বস্ত করে বলতে চাই যে অসম সহ অন্যান্য রাজ্যগুলির ঐতিহ্য, সংস্কৃতি এবং ভাষার উপর কোনও প্রভাব পড়বে । আপনাদের উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাবে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার। সেইটাই আমাদের অগ্রাধিকার। কংগ্রেসের বক্তব্যে কখনও বিভ্রান্ত হবেন না। অসমের জনগণ বিশেষ যুবসমাজকে আশ্বস্ত করে বলতে চাই যে চিন্তার কোনও কারণ নেই। আপনাদের অধিকার কেউ ছিনিয়ে নিতে পারবে না। আপনাদের সংস্কৃতি, ভাষা এবং ঐতিহ্য রক্ষা করা হবে।’

নরেন্দ্র মোদী আরও বলেন, উত্তরপূর্বে হিংসা এবং অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে। অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে রাজনীতি করছে কংগ্রেস এবং তাদের সহযোগী দলগুলি। নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের চৌহদ্দি থেকে উত্তরপূর্বের বেশির ভাগ অঞ্চলকে ছাড় দেওয়া হয়েছে। কংগ্রেস এবং তাদের সহযোগী দলগুলি উত্তরপূর্বে আগুন লাগানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। বাংলাদেশের লোকেরা এখনে চলে আসবে বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। নরেন্দ্র মোদী দেশবাসীকে আশ্বস্ত করে বলেন, যারা ইতিমধ্যেই ভারতীয় নাগরিক যেমন মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, জৌন, খ্রিষ্টান তাদের জন্য এই বিল প্রযোজ্য নয়। ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে যারা ভারতে এসেছে শুধুমাত্র তাদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। 

উদ্বাস্তুদের কোনওরকম উন্নয়ন না করার জন্য কংগ্রেসের নিন্দায় মুখর হয়ে নরেন্দ্র মোদী জানিয়েছেন, ধর্মের কারণে নিগৃহীত হয়ে এই দেশে চলে আসা উদ্বাস্তুদের উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিলেও কংগ্রেস কিছুই করেনি। যে অবস্থায় তারা পাকিস্তান থাকত সেই একই আচরণ কংগ্রেস আমলে এই দেশে পোহাতে হয়েছে উদ্বাস্তুদের। 

অসমের একাধিক জায়গায় অনির্দিষ্ট কালের জন্য কার্ফু জারি করা হয়েছে। অসমের দশটি জেলা । যথাক্রমে লখিমপুর, তিনসুকিয়া, ধিমাঝি, ডিব্রুগড়, চারাইদেও, শিবসাগর, জোরহাট, গোলাঘাট, কামরূপ(মেট্রো), কামরূপে বুধবার রাত ৭টা থেকে মোবাইল ও ইন্টারনেট পরিষেবা বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরোধিতা করেই এই বিক্ষোভ।

অযোধ্যায় রাম মন্দির প্রসঙ্গে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তোপ দেগে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, বহু শতাব্দী ধরে চলে আসা রামজন্মভূমি বিতর্ক নিয়ে প্যাঁচ কষে গিয়েছে কংগ্রেস। বিজেপি নিজের ইস্তেহারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে অযোধ্যার রামজন্মভূমির শান্তিপূর্ণ সমাধান হবে। শান্তিপূর্ণ ভাবে সেই সমস্যার সমাধান করে বিজেপি নিজের প্রতিশ্রুতি পূরণ করেছে। রাম মন্দির নির্মাণের রাস্তা খুলে গিয়েছে। 

উল্লেখ করা যেতে পারে নভেম্বর সুপ্রিম কোর্ট অযোধ্যা মামলার রায়দানে জানিয়েছিল যে নির্ধারিত ২.৭ একর জমিতেই হবে রাম মন্দির। মন্দির নির্মাণের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের তৈরি করা ট্রাস্টের হাতে সেই জমি তুলে দেওয়া হবে। এই ট্রাস্টই মন্দির নির্মাণের কাজ দেখভাল করবে। মসজিদ তৈরি করার জন্য পৃথক ভাবে আলাদা জমি দেওয়া হবে। 

ঝাড়খন্ডের পরিস্থিতি নিয়ে বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, গোটা রাজ্যজুড়ে বিজেপিকে নিয়ে উৎসাহ রয়েছে। বিজেপি যাই প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তা পূরণ করা হয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীরে ভারতীয় সংবিধান চালু হয়েছে। কংগ্রেস, আরজেডি, ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চা, বামপন্থীরা বরাবর মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে। কিন্তু বিজেপি ছয় মাসের মধ্যেই নিজেদের সঙ্কল্পগুলিকে পূরণ করেছে। পরিস্থিতি যতই প্রতিকূল হোক না কেন। দিনরাত এক করে তার সমাধান করা হয়েছে। 

এদিন ধানবাদের জনসভায় প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি ছিলেন কেন্দ্রীয়মন্ত্রী অর্জুন মুন্ডা, মুখ্যমন্ত্রী রঘুবর দাস, রাজ্য বিজেপি সভাপতি লক্ষণ গিলুওয়া, সাংসদ পিএন সিং।  ১৬ ডিসেম্বর চতুর্থ দফায় ১৫টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে ঝাড়খন্ডে।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related news