হাটশিঙিমারি সীমান্তে বিএসএফ জওয়ানদের ওপর প্রাণঘাতী হামলা, গুলিতে হত এক গরু পাচারকারী

2 - মিনিট |

দক্ষিণ শালমারা-মানকাচর জেলার সদর হাটশিঙিমারির কানাইমারায় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছে

কে আর সি টাইমস ডেস্ক

আন্তর্জাতিক সীমান্তে বিএসএফ-এর গুলিতে মৃত্যু হয়েছে এক গরু পাচারকারীর। ঘটনা শুক্রবার ভোররাত প্রায় তিনটা নাগাদ দক্ষিণ শালমারা-মানকাচর জেলার সদর হাটশিঙিমারির কানাইমারায় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে সংঘটিত হয়েছে। জানা গেছে, কাঁটাতারের বেড়ার ওপর দিয়ে গরু পাচার করছিল চোরাকারবারির এক দল। সীমান্তে টহলদারি বিএসএফ-এর জওয়ানরা তাদের বাধা দিতে যান। কিন্তু গরু পাচারকারীরা উলটো সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনীর ওপর প্রাণঘাতী আক্ৰমণ করে বসে। আত্মরক্ষার্থে বিএসএফ-এর জওয়ানরা গুলি চালান। গুলিতে এক পাচারকারীর ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়েছে।

খারুয়াবান্ধা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সুদীপ চৌধুরী ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন। তিনি জানান, দক্ষিণ শালমারা থানার অধীনস্থ খারুয়াবান্ধা ফাঁড়ির অন্তর্গত আসামের আলগা-দ্বীপচর বিএসএফ ক্যাম্প এলাকার কানাইমারা ভাবত-বাংলাদেশ সীমান্তে আজ ভোররাত প্রায় ২.৫০ মিনিট নাগাদ এই ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। পুলিশ অফিসার চৌধুরী জানান, সে সময় আট-দশজনের এক দল কয়েকটি গরু নিয়ে সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়ার কাছে আসে। দলটি সীমান্তের কাঁটাতারের ওপর দিয়ে গরুগুলি পাচার করার কৌশল নিচ্ছিল। ঘটনা চোখে পড়ে সীমান্তে ২৪ ঘণ্টা টহলধারী সুরক্ষা বাহিনীর জওয়ানদের। তাঁরা গরু পাচারকারীদের রুখতে এগিয়ে যান। জওয়ানরা এগিয়ে গেলে তাদের সঙ্গে হাতাহাতিতে লিপ্ত হয় পাচারকারীরা। তখন চোরাকারবারিদের কয়েকজন হাতে হাতে ধারালো অস্ত্ৰ নিয়ে বিএসএফ-এর জওয়ানদের ওপর হামলা চালাতে যায়। 

অগত্যা তাদের ঘটনাস্থল থেকে তাড়াতে বিএসএফ শূন্যে তিন রাউন্ড গুলি চালায়। বিএসএফ গুলি চালালে গরু পাচারকারীরা আরও মারমুখি হয়ে ওঠে। তারা সম্মিলিতভাবে বিএসএফ-এর দিকে এগিয়ে এসে উদ্যত ধারালো অস্ত্রের কোপ বসাতে যায়। তখন বাধ্য হয়ে নিজেদের প্রাণ রক্ষার খাতিরে সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনী আক্ৰমণকারী গরু পাচারকারীদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। একটি গুলিতে বিদ্ধ হয়ে এক পাচারকারী ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেছে।

পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সুদীপ চৌধুরীর কাছে জানা গেছে, নিহত গরু পাচারকারী কানাইমার গ্রামের জনৈক গমেজ উদ্দিনের ছেলে আশ্ৰাফুল ইসলাম (৩১)। এই ঘটনার পরই বিএসএফ-এর পক্ষ থেকে খারুয়াবান্ধা পুলিশ ফাঁড়িকে অবগত করানো হয়। খবর পেয়ে তাঁর নেতৃত্বে পুলিশের এক দল ঘটনাস্থল সীমান্তে গিয়ে আশ্রাফুলের মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ধুবড়ি অসামরিক হাসপাতালে পাঠিয়ে দিয়েছে।

এদিকে বিএসএফ-এর তরফ থেকে পাচারকারীদের বিরুদ্ধে একটি এফআইআর দাখিল করা হয়েছে। অন্যদিকে নিহত গরু পাচারকারীর পরিবারের পক্ষ থেকে এই খবর লেখা পর্যন্ত বিএসএফ-এর বিরুদ্ধে কোনও এজাহার জমা পড়েনি বলে জানান পুলিশ অফিসার সুদীপ চৌধুরী। প্রসঙ্গত, গত ৫ মে অনুরূপভাবে দক্ষিণ শালমারা মানকাচর জেলার অন্তর্গত হাটশিঙিমারির ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে কৰ্তব্যরত বিএসএফ জওয়ানদের ওপর প্রাণঘাতী হামলা চালিয়েছিল আন্তর্জাতিক গরু পাচারকারীর দল। হামলায় আহত হয়েছিলেন বিএসএফ-এর হেড কনস্টেবল পি বালাচান্দ। পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে অসমের বাইরে পাঠানো হয়েছে।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related news