হাতিখিরায় বুনো হাতির দল এবার হানা দিল ম্যা‌নেজা‌রের বাং‌লোয়, দামালদের রুখতে ড্রেনেজ ব্যবস্থার নিদান

2 - মিনিট |

হা‌তি‌খিরা চা বাগান এবং সংলগ্ন এলাকায় ব্যাপক উপদ্রবের সৃষ্টি করেছে পাঁচটি বু‌নো হা‌তির এক দল‌। হা‌তির দলটি খা‌দ্যের সন্ধা‌নে যখন-তখন লোকাল‌য়ে প্র‌বেশ ক‌রে চা‌ষি‌দের ফসল খে‌য়ে নি‌চ্ছিল। এবার খোদ চা বাগানের ম্যানেজারের বাংলোবাড়িতে হানা দিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেছে।

কে আর সি টাইমস ডেস্ক

গত মাসাধিককাল থেকে করিমগঞ্জ জেলার পাথারকা‌ন্দি মহকুমার লোয়াইর‌পোয়া ব্ল‌কের অন্তর্গত হা‌তি‌খিরা চা বাগান এবং সংলগ্ন এলাকায় ব্যাপক উপদ্রবের সৃষ্টি করেছে পাঁচটি বু‌নো হা‌তির এক দল‌। হা‌তির দলটি খা‌দ্যের সন্ধা‌নে যখন-তখন লোকাল‌য়ে প্র‌বেশ ক‌রে চা‌ষি‌দের ফসল খে‌য়ে নি‌চ্ছিল। এবার খোদ চা বাগানের ম্যানেজারের বাংলোবাড়িতে হানা দিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেছে। হাতির আনাগোনা রুখতে ড্রেনেজ চেনেল তৈরি করার নিদান দিয়েছেন জেলা বন কর্তপক্ষ।

গত কয়‌দিন বুনো হাতির দল এলাকার বিভিন্ন চাষির খেতে পড়ে উৎপাদিত পাকা ধান তছনছ ক‌রে দিচ্ছিল। এ ছাড়া এলাকার সাত নম্বর লাইনের শিবমন্দিরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ক‌রে ব‌লেও জানা গে‌ছে। ইতিমধ্যে গতকাল শনিবার রা‌তে বু‌নো হাতির দল হাতিখিরা চা বাগানের ম্যা‌নেজা‌রের বাংলোয় হানা দি‌য়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ক‌রেছে। হা‌তির দল‌টি বাংলো চত্বরে নানা জাতের ফসল যেমন কলাগাছ, সুপারি গাছে চারা তছনছ করে দিয়েছে। তবে ম্যা‌নেজা‌রের বসতবাড়ি বাংলোর কোনও ক্ষতি ক‌রেনি।

খব‌র পেয়ে র‌বিবার সকালে দলবল নি‌য়ে হা‌তি‌খিরা এলাকায় ছুটে গিয়ে পরিস্থিতি খ‌তি‌য়ে দে‌খেন পাথারকান্দির রেঞ্জ ফরেস্ট অফিসার দেব‌জ্যো‌তি নাথ। বাগান এলাকা পরিদর্শন করে এসে রেঞ্জার নাথ জানান, পাথারকা‌ন্দি‌তে বু‌নো হাতির তাণ্ডব নতুন নয়। জনাঞ্চল থেকে হা‌তির দলকে জঙ্গলে তাড়া‌তে কাজ ক‌রে চল‌ছে বন দফতর। তিনি জানান, জংলি হাতির আনাগোনা রুখতে নয়া পরিকল্পনা হাতে নিচ্ছে বন দফতর। জানান, পার্শ্ববর্তী জঙ্গলের পাদদেশে ড্রেনেজ চ্যা‌নেল তৈরি ক‌রে প্র‌টেকশন এরিয়া গ‌ড়ে হা‌তি‌দের বা‌গে আনার প‌রিকল্পনা গ্রহণ করা হ‌য়ে‌ছে। এ ব্যাপারে রাজ্য সরকা‌রের কা‌ছে ৫০ লক্ষ টাকার এক প্র‌জেক্ট রি‌পোর্ট তৈরি ক‌রে পাঠানো হ‌য়ে‌ছে। সরকার সবুজ সং‌কেত দিলেই কাজ শুরু হ‌বে। ‌রেঞ্জার বলেন, হা‌তিরা সাধারণত পাহাড়ি ঢালু ছড়ায় কখনও না‌মে না বা নামার চেষ্টাও ক‌রে না। কারণ হিসেবে তাঁর ব্যাখ্যা, তা‌দের ভারী শ‌রীর নি‌য়ে পরে উঠ‌তে পার‌বে না ভেবে ভয়ে পাহাড়ি ছড়ায় নামার সাহস করে না হাতি। তাই এ ধরনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি জানান, রা‌জ্যের অন্যান্য হা‌তিপ্রবণ এলাকায় এ ধরনের ড্রেনেজ চ্যানেল গ‌ড়ে কিছুটা হলেও দামাল‌দের বা‌গে আনা সম্ভব হ‌য়ে‌ছে।

উল্লেখ্য, ইতিপূ‌র্বে পাথারকা‌ন্দির বিভিন্ন এলাকায় বু‌নো হা‌তির আনাগোনা রুখতে হে‌লিকপ্টার ম‌রিচ ও লেবু চাষের পাশাপাশি মৌমা‌ছির গুঞ্জন সংক্রান্ত ডিভাইস সংস্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি। এবার ড্রেনেজ চ্যানেলের নিদান কতটুকু ফলপ্রসূ হয় তা দেখার। প্রসঙ্গক্রমে স্থানীয় পুরনো বাসিন্দারা জানান, এক সম‌য় হা‌তি আর সা‌পে গোটা হা‌তিখিরা‌ বাগান ভরপুর ছিল। বাগানি ভাষায় সাপ‌কে ‘কিরা’ বলা হয়। তাই এই এলাকার নাম‌ ‘হা‌তি-কিরা’ হয়ে পড়ে যায়। কিন্তু ভাষা বিভ্রাটে হাতি-কিরা থেকে রুপান্ত‌রিত হয়েছে ‘হাতিখিরা’য়। 

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related news