১ জুলাই ‘ডক্টর্স ডে’, বিধান রায়ের নামে হচ্ছে আইএমএ ভবন

2 - মিনিট |

জুলাই মাসের ১ তারিখ, বিধানচন্দ্র রায়ের জন্ম ও মৃত্যুদিন ‘ডক্টর্স ডে’-তে কেন্দ্র বাংলার ব্যাপারে উল্লেখযোগ্য এক ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। দিল্লির গুরুত্বপূর্ণ একটি ভবনের নাম চিহ্ণিত হচ্ছে বিধানচন্দ্র রায়ের স্মৃতিতে। হচ্ছে নানা স্মরণ-অনুষ্ঠান। বিধানচন্দ্র রায়ের চোদ্দো বছরের মুখ্যমন্ত্রিত্বকালে নবগঠিত পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের প্রভূত উন্নতি সম্ভব হয়েছিল। এই কারণে তাঁকে পশ্চিমবঙ্গের রূপকার নামে অভিহিত করা হয়। ১৯৬১ সালে তিনি ভারতের সর্বোচ্চ […]

কে আর সি টাইমস ডেস্ক

জুলাই মাসের ১ তারিখ, বিধানচন্দ্র রায়ের জন্ম ও মৃত্যুদিন ‘ডক্টর্স ডে’-তে কেন্দ্র বাংলার ব্যাপারে উল্লেখযোগ্য এক ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। দিল্লির গুরুত্বপূর্ণ একটি ভবনের নাম চিহ্ণিত হচ্ছে বিধানচন্দ্র রায়ের স্মৃতিতে। হচ্ছে নানা স্মরণ-অনুষ্ঠান। বিধানচন্দ্র রায়ের চোদ্দো বছরের মুখ্যমন্ত্রিত্বকালে নবগঠিত পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের প্রভূত উন্নতি সম্ভব হয়েছিল। এই কারণে তাঁকে পশ্চিমবঙ্গের রূপকার নামে অভিহিত করা হয়। ১৯৬১ সালে তিনি ভারতের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান ভারতরত্নে ভূষিত হন। মৃত্যুর পর তাঁর সম্মানে কলকাতার উপনগরী সল্টলেকের নামকরণ করা হয় বিধাননগর। তাঁর জন্ম ও মৃত্যুদিন ১ জুলাই সারা ভারতে ‘চিকিৎসক দিবস’ রূপে পালিত হয়। আ

জকের দিনেও তিনি প্রাসঙ্গিক -এ কথা বললে সম্পূর্ণ ঠিক বলা হবে না ; বরং বলতে হবে আজকে তিনি আরও ভীষণ বেশিরকম প্রাসঙ্গিক ডা. বিধানচন্দ্র রায়। চিকিৎসকদের সর্বভারতীয় সংগঠন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সদর দফতর আইএমএ ভবনের নাম রাখা হচ্ছে বিশিষ্ট চিকিৎসক বিধান চন্দ্র রায়ের নামে। ওই ভবনের সামনে বসানো হচ্ছে তাঁর বিশাল প্রতিকৃতি। দিল্লির ইন্দ্রপ্রস্থ মার্গে সর্বভারতীয় আইএমএ’র সদর দফতরে ওই অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন রাজ্যের আইএমএ’র শীর্ষকর্তারা থাকবেন। 

 আজ বিধান রায়ের স্মরণে পশ্চিমবঙ্গ সরকার অর্ধ দিবস ছুটি ঘোষণা করেছে। কলকাতায় মহাকরণের সামনে বিধান রায়ের মূর্তিতে রাজ্য সরকারের তরফে মাল্যদান করা হবে। শ্রদ্ধা জানাবেন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা, পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন, ভূমি, ভূমি সংস্কার এবং উদ্বাস্তু পুনর্বাসন, উপজাতি উন্নয়ন প্রভৃতি দফতরের প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। সকাল পৌনে ১০টা নাগাদ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর ব্রোঞ্জের মূর্তির উদ্বোধন হবে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সব মিলিয়ে এখানে পাঁচ বিশিষ্ট চিকিৎসকের মূর্তির উদ্বোধন হবে এদিন। বাকিরা হলেন প্রয়াত ডাঃ রোনাল্ড রস, ডাঃ ইউ এন ব্রহ্মচারী, ডাঃ রাধাগোবিন্দ কর এবং ডাঃ নীলরতন সরকার। হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান ডাঃ নির্মল মাজি, কলেজ অধ্যক্ষা ডাঃ মঞ্জুশ্রী রায় প্রমুখের উপস্থিত থাকার কথা সেখানে। আজ এই মহীরুহ কে নিয়ে নতুনভাবে আলোকপাত করবেন পঃবঃসরকারের প্রাক্তন মুখ্যসচিব অর্ধেন্দু সেন, বিশিষ্ট নাট্যকার চন্দন সেন, নাট্যব্যক্তিত্ব ও অভিনেতা কৌশিক সেন, বিশিষ্ট সাংবাদিক ড.পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য, প্রাক্তন সাংসদ সরদার আমজাদ আলি,প্রাক্তন বিধায়ক শিখা চৌধুরী মিত্র। ‘বিধান মেমোরিয়াল ট্রাস্ট’ আয়োজিত এই আলোচনাচক্রে সভাপতিত্ব করবেন ট্রাস্টের চেয়ারম্যান সোমেন মিত্র। দুপুরে মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উদ্বোধন করবেন পিজি হাসপাতালের ট্রমা সেন্টার। অনুষ্ঠানে রাজ্যের বহু কৃতী চিকিৎসককে ‘বিশিষ্ট চিকিৎসা সম্মান’ পুরষ্কারে সম্মানিত করবেন তিনি।বিশিষ্ট চিকিৎসককে পুরষ্কৃত করবেন মুখ্যমন্ত্রী। সব মিলিয়ে রাজ্যের চিকিৎসাক্ষেত্রে তাঁদের অবদানের জন্য সম্মাননা জানানো হতে পারে তিরিশের বেশি চিকিৎসককে। দুপুর দেড়টার সময় এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এই দিনটি পালন করতে হবে এক অনুষ্ঠান। ডাঃ রায়ের মূর্তিতে মাল্যদান ছাড়াও ‘সে নো টু ভায়োলেন্স’ শীর্ষক একটি বক্তৃতা হবে। এনআরএস অধ্যক্ষ ডাঃ শৈবাল মুখোপাধ্যায়, সুপার ডাঃ সৌরভ চট্টোপাধ্যায়, পিডিএ’র সভাপতি ডাঃ অভিজিৎ ভক্ত প্রমুখ উপস্থিত থাকবেন সেখানে।

 এ ছাড়াও বাংলার প্রয়াত রূপকারকে সিইএসসি, হরিণঘাটা দুগ্ধ প্রকল্প-সহ বিভিন্ন সংস্থায় আজ শ্রদ্ধার্ঘ দেওয়ার কথা। বিধানচন্দ্র রায় (১ জুলাই, ১৮৮২ – ১ জুলাই, ১৯৬২) ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের দ্বিতীয় মুখ্যমন্ত্রী। ১৯৪৮ সাল থেকে আমৃত্যু তিনি ওই পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। চিকিৎসক হিসেবেও তাঁর বিশেষ খ্যাতি ছিল। ১৯১১ সালে ইংল্যান্ড থেকে এফ.আর.সি.এস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে কলকাতার ক্যাম্বেল মেডিক্যাল স্কুলে (বর্তমানে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ) শিক্ষকতা ও চিকিৎসা ব্যবসা শুরু করেন। পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেনেট সদস্য, রয়্যাল সোসাইটি অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড হাইজিন ও আমেরিকান সোসাইটি অফ চেস্ট ফিজিশিয়ানের ফেলো নির্বাচিত হন। ১৯২৩ সালে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের প্রভাবে রাজনীতিতে যোগ দিয়ে বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভার নির্বাচনে সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়কেপরাজিত করেন। পরে কলকাতা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক ও কলকাতা পৌরসংস্থার মেয়র নির্বাচিত হন।  ১৯৩১ সালে মহাত্মা গান্ধীর ডাকে আইন অমান্য আন্দোলনে যোগ দিয়ে কারাবরণ করেন। ১৯৪২ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মনোনীত হন। ১৯৪৭ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন কেন্দ্র থেকে কংগ্রেস প্রার্থীরূপে আইনসভায় নির্বাচিত হন। ১৯৪৮ সালে গ্রহণ করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি প্রতিষ্ঠা করেন পাঁচটি নতুন শহরের দূর্গাপুর, বিধাননগর, কল্যাণী, অশোকনগর-কল্যাণগড় ও হাবরা।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *