সেইসময় ইসমাইল খান নামের ওই ব্যক্তি তাঁর কাছ থেকে ২০ টাকা চুরি করে নেন। অভিযোগ দায়ের করার সময় বাবুলালের বয়স ছিল কুড়ি বছর। বর্তমানে তিনি ৬১ বছরের বৃদ্ধ। অন্যদিকে অভিযুক্ত ইসমাইল খানের বয়স গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৬৮ বছর
কথায় আছে পুলিশে ছুঁলে আঠারো ঘা। আর যদি সেই ঘটনা আদালত পর্যন্ত পৌঁছায় তাহলে…। তারিখ পে তারিখ পার হয়ে কয়েক যুগ অতিক্রম হলেও অনেক সময় সেইসব মামলার নিষ্পত্তি হয় না। প্রজন্মের পর প্রজন্ম চলতে থাকে আইনি লড়াই। তবে জমি-জায়গা বা অন্য বড় কিছুর জন্য লড়াই হলেও মানা যায়। মাত্র কুড়ি টাকা চুরির অপরাধে যদি ৪১ বছর পর্যন্ত আদালতের দোরে হাজিরা দিতে হয় তাহলে কেমন হবে ভেবে দেখুন! নাহ্ কোনও কল্পনা নয়, বরং বাস্তবে এমনটাই ঘটেছে। মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়রে ২০ টাকা চুরির অপরাধে এক ব্যক্তিকে ৪১ বছর পর্যন্ত আইনি লড়াই লড়তে হয়েছে। সম্প্রতি লোক আদালতে সেই মামলার নিষ্পত্তি ঘটেছে। ইসমাইল খান নামে অভিযুক্ত সেই ব্যক্তি এই মামলায় বেকসুর খালাস হয়েছেন।
জানা গিয়েছে, ২০ টাকা চুরির অপরাধে ৪১ বছর আগে অর্থাৎ ১৯৭৮ সালে বাবুলাল নামে এক ব্যক্তি ইসমাইল খানের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান। বাবুলালের বক্তব্য অনুযায়ী, তিনি বাসের টিকিট কাটার লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন। সেইসময় ইসমাইল খান নামের ওই ব্যক্তি তাঁর কাছ থেকে ২০ টাকা চুরি করে নেন। অভিযোগ দায়ের করার সময় বাবুলালের বয়স ছিল কুড়ি বছর। বর্তমানে তিনি ৬১ বছরের বৃদ্ধ। অন্যদিকে অভিযুক্ত ইসমাইল খানের বয়স গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৬৮ বছর। গত শনিবার লোক আদালতে চার যুগ ধরে চলতে থাকা এই অদ্ভুত মামলার শেষমেশ অবসান ঘটেছে।
আদালতের এক আধিকারিকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ন্যায়িক ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম শ্রেণি অনিলকুমার নামদেব লোক আদালতে মামলার শুনানি দেন। সেখানে তিনি গোয়ালিয়রের বাসিন্দা ইসমাইল খানকে ৪১ বছরের পুরনো অভিযোগ থেকে মুক্তি দিয়েছেন। ভবিষ্যতে এমন কোনও গর্হিত কাজ করবে না বলে কথা দিয়েছেন ইসমাইলও। এদিকে অভিযোগকারী বাবুলাল জানিয়েছেন, ১৯৭৮ সালে এই মামলা দায়ের করার কয়েক মাস পরই ইসমাইলকে জামানতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। ও শুধু শুনানির জন্য আদালতে আসত। ২০০৪ সাল থেকে সেটাও বন্ধ করে দিয়েছিল। ফলে চলতি বছরে ওয়ারেন্ট জারি করে ইসমাইলকে গ্রেফতার করা হয়। তবে অভিযুক্তর আর্থিক পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে জামানতের আবেদন করার মতো টাকাও জোগাড় করতে পারেনি সে। এমনকি ইসমাইলের পরিবারেও কেউ নেই। যে কারণে বিচারক প্রথম শ্রেণির লোক আদালতে শুনানির জন্য দুজনকে ডেকে মামলার নিষ্পত্তি ঘটান।