জাতীয় সড়কে গাড়ির ধাক্কায় পাঁচটি হগ ডিয়ার এবং একটি সাম্বার আহত হয়েছে। আহত জীবজন্তুকে উদ্ধার করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। কাজিরাঙার স্পর্শকাতর এলাকাগুলিতে স্পেশাল রাইনো প্ৰটেকশন ফোর্স মোতায়েন হয়েছে
কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যানের ৯০ শতাংশ এলাকা বন্যার জলে ভাসছে। কিছু কিছু জীবজন্তু উদ্যানের নবনির্মিত হাইল্যান্ডে আশ্ৰয় নিলেও বহু হাতি, হরিণ ইত্যাদি পশুসম্পদ সংলগ্ন ৩৭ নম্বর জাতীয় সড়কে এসে আশ্রয় নিয়েছে। ১৯৯টি চোরাশিকারি প্ৰতিরোধী ফরেস্ট ক্যাম্পের ১৫৫টি ইতিমধ্যে বন্যার জলে ডুবে গেছে। যন্ত্ৰচালিত এবং ডিঙি নৌকার সাহায্যে বনকৰ্মী ও নিরাপত্তারক্ষীরা উদ্যানে জীবজন্তু ও চোরাশিকারির ওপর নজর রাখছেন। এই খবর দিয়েছেন উদ্যানের অধিকর্তা পি শিবকুমার।
তিনি জানান, ইতিমধ্যে জাতীয় সড়কে গাড়ির ধাক্কায় পাঁচটি হগ ডিয়ার এবং একটি সাম্বার আহত হয়েছে। এছাড়া বন্যার ফলে বিভিন্ন কারণে অন্য পাঁচটি প্রাণী আহত হয়েছে। আহত জীবজন্তুকে উদ্ধার করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। সরকারিভাবে জানানো হষ়েছে কাজিরাঙার স্পর্শকাতর এলাকাগুলিতে স্পেশাল রাইনো প্ৰটেকশন ফোর্স মোতায়েন হয়েছে।
বন ও পরিবেশমন্ত্ৰী পরিমল শুক্লবৈদ্যের জানান, প্ৰধান মুখ্য বন সংরক্ষক (পিসিসিএফ) এবং অসম বন বাহিনীর প্রধান এএম সিংকে কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যানের সব ধরনের প্রাণীর সুরক্ষা এবং তাদের খাদ্য সামগ্রী সরবরাহ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী তাঁরা যুদ্ধকালীন তৎপরতার সঙ্গে তাঁদের কর্তব্য সম্পাদন করছেন। তাঁরা সশরীরে উদ্যানের বিভিন্ন অঞ্চল পরিদৰ্শন করে বন্যা পরিস্থিতির খোঁজ নিচ্ছেন। এছাড়া তাঁর নিৰ্দেশে পিসিসিএফ ছাড়াও মুখ্য বন্যপ্ৰাণী ওয়াৰ্ডে ড. রঞ্জনা গুপ্তা কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যানে বন্যপ্রাণী সুরক্ষাজনিত কার্যাবলির তদারকি করছেন বলেও জানা গিয়েছে ।
কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যানের অধিকর্তা পি শিবকুমারের কাছে জানা গেছ, ২০১৮ সালের সমীক্ষা অনুযায়ী কাজিরঙায় বৰ্তমানে ২,৪১৩টি একশৃঙ্গের গন্ডার আছে। চোরাশিকারিরা বন্যার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে গন্ডার বধ করতে না পারে সে-ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। উদ্যানের বন্যা কবলিত এলাকায় অহর্নিশি টহল দিচ্ছে সশস্ত্র বন সুরক্ষা কর্মী এবং স্পেশাল রাইনো প্ৰটেকশন ফোর্স।
তিনি আরও জানান, বন্যার সময় উদ্যানের জীবজন্তু ৩৭ নম্বর জাতীয় সড়ক পার হয়ে উঁচু স্থানের সন্ধানে লাগোয়া কারবি পাহাড়ে ছুটতে থাকে। এই পরিপ্রেক্ষিতে ওই সড়কে যানবাহন চালকদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে যাতে তাঁদের অদম্যতার সুযোগে কোনও বন্য প্রাণী আহত বা মৃত্যু না হয়। এ ব্যাপারে অবশ্য সীমিত গতিতে গাড়ি চালানোর নির্দশিকা জারি করা হয়েছে।