আধার অ্যাক্টের ৫৭ ধারা অনুযায়ী বেসরকারি ক্ষেত্রগুলিতে বিশেষত টেলিকম ও ব্যাংকের ক্ষেত্রে কখনওই বাধ্যতামূলক নয়
সুপ্রিম কোর্ট আগেই রায় দিয়েছিল, পরিচিতি পত্র হিসাবে কোনও ক্ষেত্রেই আর আধার কার্ড বাধ্যতামূলক নয়। কিন্তু তা সত্বেও সাধারণ মানুষকে নিয়মিত ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছেপরিচিতি পত্র হিসাবে আধার ব্যবহার নিয়ে, বিশেষত সিম কার্ডের কানেকশন ও ব্যাংকের পরিষেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে। দেশবাসীর কাছ থেকে আধার কার্ডের ব্যবহার নিয়ে প্রচুর অভিযোগ জমা পড়ার পর এদিন দেশের শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিল, সাংবিধানিক ভাবে আধার কার্ড বৈধ, তবে আধার অ্যাক্টের ৫৭ ধারা অনুযায়ী বেসরকারি ক্ষেত্রগুলিতে বিশেষত টেলিকম ও ব্যাংকের ক্ষেত্রে কখনওই বাধ্যতামূলক নয়। এবার আধার কার্ড চাইলে কড়া শাস্তির ব্যবস্থা করছে কেন্দ্রীয় সরকার।জোর করে আধার চাইলে হতে পারে ১ কোটির জরিমানা ও জেল।
একে সিক্রির অধীনে সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ তাদের ৪০ পাতার রিপোর্টে এদিন জানিয়েছে, আধার আইনে এমন কোনও বিষয় নেই যা কিনা ব্যক্তি স্বতন্ত্রে আঘাত করে।
এর আগে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল,কয়েকটি নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে ছাড়া আর কোথাও আধার কার্ড জরুরি নয়।মোবাইলের সঙ্গে আধার লিংক করা জরুরি নয়। শুধুমাত্র প্যানের সঙ্গে আধার সংযুক্তিকরণ প্রয়োজন। একমাত্র ব্যাংকে ৫০,০০০ টাকা বা তার বেশি লেনদেনের ক্ষেত্রেই প্রয়োজন হবে আধার কার্ড। পাশপাশি দেশের শীর্ষ আদালত জানিয়েছিল, আয়কর রিটার্নের ক্ষেত্রে জরুরি হবে আধার কার্ড। সিবিএসি, নিট কিংবা ইউজিসি-র ক্ষেত্রেও আধার জরুরি নয়। এমনকী কোনও ভর্তুকি পাওয়ার ক্ষেত্রে বা সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার স্কিমেই আধার যুক্ত করতে না চাইলে থাকবে ‘এক্সিট’ অপশন। এরপর এই সংক্রান্ত প্রস্তাব পাশ হয়ে য়ায কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায়। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের কথা মাথায় রেখেই মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে আধার চেয়ে চাপ দেওয়া হলে নেওয়া হতে পারে ১ কোটি টাকা জরিমানা। হতে পারে তিন থেকে ১০ বছরের জেলও। আসলে আধারের ক্ষেত্রে বায়োমেট্রিক ডেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ব্যক্তির অনেক গোপন তথ্য জমা থাকে সেখানে। তাই সেই ডেটা অপব্যবহারের সম্ভাবনা থাকে। তাই এই ব্যবস্থা করছে কেন্দ্র।
কোনও ব্যক্তির সম্পর্কে তথ্য ব্যবহার করার আগে অনুমতি না নিলে ১০,০০০ টাকা জরিমানা ও তিন বছরের জেলের শাস্তি আগে থেকেই আছে। অনুমতি ছাড়া কোথাও ছবি বা আইডি ব্যবহার করা হলে ১০,০০০ থেকে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।
এদিন অবশ্য দীপক মিশ্র, ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, একে সিক্রি, এএম কানউইলকর ও অশোক ভূষণের পাঁচ সদস্যের ডিভিশন বেঞ্চ এটাও জানিয়েছে, আধার আইন অনুযায়ী আধার প্রমাণীকরণ তথ্য ছ-মাসের বেশি সংরক্ষিত রাখা যাবে না। সেই সঙ্গে জানানো হয়েছে আধার অ্যাক্ট কখনওই ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন করে না।
এদিন সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের ডিভিশন আরও জানায়, অবৈধ অনুপ্রবেশকারীরা আধার কার্ড পাবে না। স্কুলে ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রেও আধার লাগবে না। পাশাপাশি আধারের ডেটা নিরাপদ করার জন্য জরুরি আইন প্রবর্তনের জন্য নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত।