সপ্তাহে ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব অসম স্বাধীন (আলফা-স্বা) এবং ন্যাশনাল সোশালিস্ট কাউন্সিল অব নাগাল্যান্ড (এনএসসিএন)-এর দুই গোষ্ঠীর বেশ কয়েকজন ক্যাডার এবং লিংকম্যান সন্দেহে আটক ও গ্রেফতার করেছে সেনা-পুলিশের যৌথবাহিনী।
সামনেই স্বাধীনতা দিবস। এবার স্বাধীনতা দিবসে কড়া নিরাপত্তা জারি রাজ্য পুলিশের। আজ রাজ্য জুড়েই উগ্রপন্থী বিরোধী অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। এক সপ্তাহে ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব অসম স্বাধীন (আলফা-স্বা) এবং ন্যাশনাল সোশালিস্ট কাউন্সিল অব নাগাল্যান্ড (এনএসসিএন)-এর দুই গোষ্ঠীর বেশ কয়েকজন ক্যাডার এবং লিংকম্যান সন্দেহে আটক ও গ্রেফতার করেছে সেনা-পুলিশের যৌথবাহিনী।
বুধবার (৭ আগস্ট) ভারতীয় সেনা-সহ যৌথবাহিনীর প্রচণ্ড অভিযানে উপায়ান্তর হয়ে আলফা-স্বাধীনের দুই কট্টর সদস্য ধেমাজির বাসিন্দা প্ৰণবজ্যোতি বরা ওরফে রিদীপ অসম এবং শদিয়া অমরপুরের রোহিত কুলি ওরফে পল অসম আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়েছে। পরে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ। ওইদিনই বোড়োল্যান্ড টেরিটরিয়াল এরিয়া ডিস্ট্রিক্ট (বিটিএডি)-এর সদর কোকরাঝাড় জেলার পাটগাঁও পুলিশ ফাঁড়ির অন্তৰ্গত ভুরাগাঁজা এলাকায় উগ্রপন্থী সংগঠন ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট অব বোডোল্যান্ড (এনডিএফবি)-এর এক সক্রিয় ক্যাডার মিলন বসুমতারিকে আগ্নেয়াস্ত্র-সহ গ্রেফতার করেছে সেনা পুলিশ।
গতকালও উজান অসমের ধেমাজির অসম-অরুণাচল প্রদেশ সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে চার আলফা (স্বাধীন)-এর উগ্ৰপন্থীকে গ্ৰেফতার করেছে ভারতীয় সেনা। প্রাপ্ত খবরে প্রকাশ, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সেনা বাহিনী নিয়ে ধেমাজি পুলিশ আন্তঃরাজ্য সীমান্তে অভিযান চালায়। অভিযানে ধেমাজির পাৰ্থজিৎ কোঁওর (২১), মৃণাল ফুকন (১৮), লাহোয়ালের জনক বরুয়া (১৮) এবং গোলাঘাটের বাসিন্দা উদয় দুওরাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদেপ হেফাজত থেকে একটি মটর বাইক, চারটি মোবাইল হ্যান্ডসেট, আলফা (স্বাধীন)-এর পতাকা, ধারালো অস্ত্ৰ, কালো কাপড়ের বেশ কয়েকটি টুকরো এবং বহু আপত্তিজনক নথিপত্ৰ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার রাকেশ রেড্ডি এ তথ্য দিয়ে বলেন, আলফা উগ্রপন্থীরা অসম-অরুণাচল প্ৰদেশের সীমান্তবর্তী উত্তর ধেমাজির লাইপুলিয়ার পাহাড়ি জঙ্গলের সুরক্ষিত স্থানে আত্মগোপন করে জেলায় তাদের সংগঠনের স্থিতি মজবুত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে পুলিশও বসে নেই, দাবি করেছেন অফিসার।
প্রসঙ্গত, পরেশ বরুয়া নেতৃত্বাধীন আলফা (স্বাধীন)-র সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের অভিযোগে জনৈক শিক্ষিকা, ব্যাংকিঙের ছাত্ৰী, হাসপাতালের কর্মচারী-সহ চারজনকে ডিব্রুগড় জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে গত বুধবার (৭ আগস্ট) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা লোকালয়ে থেকে আলফা-স্বাধীনের হয়ে নানা ধরনের দেশ বিরোধী কাজে লিপ্ত ছিলেন।
ডিব্রুগড়ের পুলিশ সুপার শুভাসিনী শংকরণ এ তথ্য দিয়ে সেদিন জানিয়েছিলেন, বিভিন্ন এলাকা থেকে যাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁদের একজন শিক্ষিকা, নাম চয়নিকা কামান। তাঁকে গোলাঘাট থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। দ্বিতীয়জন কবিতা কামাং। সে ব্যাংকিঙের ছাত্রী, গ্রেফতার করা হয়েছে ডিব্রুগড় থেকে। তৃতীয়জন দেবজ্যোতি দুওরাকে নাহরকাটিয়ার সাসনি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। চতুর্থজন গোলাঘাটের কনক পেগুকে গ্রেফতার করা হয়েছে ডিব্রুগড়ের একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে। সে ওই হাসপাতালের আইসিইউ টেকনিশিয়ান। তিনি জানান, ধৃতদের হেফাজত থেকে আলফা-স্বাধীনের পতাকা, একটি মাওবাদী সাহিত্যপুথি, সাতটি সিম ভরতি মোবাইল ফোনের হ্যান্ডসেট। এরা জেলার বিভিন্ন এলাকায় অর্থ আদায়ের পাশাপাশি নিষিদ্ধ উগ্রপন্থী সংগঠন আলফা-স্বাধীনের প্রতি মেধাবী যুবক-যুবতীদের আকৃষ্ট করার কাজে লিপ্ত ছিল।