ইজাজকে মেডিকেল টেস্ট করানো হয় এসএসকেএম হাসপাতালে । দুপুরে আনা হয় ব্যাঙ্কশাল কোর্টে
ভারতের জেএমবি প্রধান ইজাজ আহমেদকে ব্যাঙ্কশাল কোর্ট ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিল । ২০১৮ সালে খাগড়াগড় কাণ্ডে মূল চক্রী কওসরকে জেল থেকে ছাড়ানোর পরিকল্পনা করেছিল ভারতের জেএমবি প্রধান ইজাজ । ওই পরিকল্পনায় তার সঙ্গে ছিল আরও ৬ জন । তারা আগেই ধরা পড়েছে । তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেই ইজাজের নাম জানতে পারেন কলকাতা পুলিশের স্পেশাল ট্যাক্স ফোর্স বা এসটিএফের তদন্তকারীরা । মঙ্গলবার ব্যাঙ্কশাল কোর্টে একথা জানায় এসটিএফ । আদালতে ইজাজ নিজে জানায়, ২০১৬ সাল থেকে জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে তার যোগাযোগ ছিল । তার বাড়ি আদতে বীরভূমে ।
বোমারু মিজান ওরফে কওসরকে আদালতে নিয়ে আসার পথে ছিনিয়ে নেওয়ার ছক কষেছিল জামাত-উল-মুজাহিদিন । সেই মোতাবেক রেইকিও করা হয়েছিল বলে জানতে পেরেছে স্পেশাল টাস্ক ফোর্স । জামাতুল মুজাহিদিন ইন্ডিয়ার বর্তমান চিফ ইজ়াজ়কেও ছিনিয়ে নেওয়ার ছক করতে পারে জঙ্গিরা । সেই সূত্রে আজ ব্যাঙ্কশাল কোর্ট চত্বরে ছিল নিরাপত্তা ব্যাবস্থা । এই জঙ্গি শীর্ষ নেতাকে নিয়ে বিন্দুমাত্র ঝুঁকি নিতে রাজি হয়নি কলকাতা পুলিশ । তাই আজ আদালত চত্বরে মোতায়েন করা হয় কমব্যাট ফোর্স ।
জানা গেছে, ইজাজ খাগড়াগড় বিস্ফোরণ কাণ্ডের মূল চক্রী কওসরের সঙ্গে বিশেষ ‘অ্যাপ কোড ল্যাঙ্গুয়েজ’-এ কথা বলত । একইভাবে যোগাযোগ রাখত সালাউদ্দিনের সঙ্গেও । এলইডি সহ ছোটো বড় বিস্ফোরক তৈরিতে সিদ্ধহস্ত ছিল ইজাজ । ইজাজের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে ভুল এপিক কার্ড, ৬টা মোবাইল, ট্যাব । সেগুলিকে ডিকোডিং করছেন তদন্তকারীরা ।
২০১২ সাল থেকে জেএমবি-র প্রতিষ্ঠাতা সালাউদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ হয় ইজাজের । ২০১৭ সালে কওসর ইজাজকে ‘আমির’ বানানোর জন্য প্রস্তাব করে । জঙ্গি সংগঠন জামাত-উল-মুজাহিদিনের ভারত শাখার ‘আমির’ ছিল ইজাজ । আমির মানে প্রধান । বোধগয়া বিস্ফোরণ, খাগড়াগড় বিস্ফোরণ সহ ভারতে জেএমবির একাধিক নাশকতামূলক কাজের মাথা ছিল এই ইজাজ । স্পেশাল টাস্ক ফোর্স সূত্রে খবর, ইজ়াজ়কে পাকড়াওয়ের বিষয়টি খুব একটা সহজ ছিল না । প্রায় ৭২ ঘণ্টা না ঘুমিয়ে অপারেশন চালিয়েছিলেন তদন্তকারীরা । মোট চার জায়গায় হানা দেওয়া হয় । শেষে গয়ার বুনিয়াদপুরের গোপন ডেরার সন্ধান পায় স্পেশাল ফোর্স । সেখানে সে ভাড়াটিয়া হিসেবে থাকছিল । নজর রাখতে রাখতে এক সময় তাকে ঘিরে ধরেন গোয়েন্দারা ।
ইতিমধ্যেই ইজাজকে জেরা করে কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্কফোর্স । সেই জেরায় উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য । জানা গেছে, অন্যরা গেলেও ইজ়াজ় কখনও পর্যন্ত বাংলাদেশে যায়নি । তবে সে বেঙ্গালুরু ও চেন্নাইয়ে থেকেছে । সকালে তাকে কলকাতা পুলিশের সদর দফতর লালবাজারে নিয়ে আসেন গোয়েন্দারা । মেডিকেল টেস্ট করানো হয় এসএসকেএম হাসপাতালে । দুপুরে আনা হয় ব্যাঙ্কশাল কোর্টে ।