রাজ্যপালের গাড়ির মধ্যেই বসে থাকেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় । আর তাঁদের গাড়ির পথ আটকে রয়েছে কয়েক’শ ছাত্রছাত্রী । কেউ বসে পড়েন গাড়ির সামনে, কেউ বা শুয়ে পড়েন
অগ্নিগর্ভ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বেনজির ছাত্র বিক্ষোভের মুখে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর | বৃহস্পতিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে উদ্ধার করতে গেলে ছাত্র বিক্ষোভের মুখে পড়ে যান খোদ রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরও ।
রাজ্যপালের গাড়ির মধ্যেই বসে থাকেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় । আর তাঁদের গাড়ির পথ আটকে রয়েছে কয়েক’শ ছাত্রছাত্রী । কেউ বসে পড়েন গাড়ির সামনে, কেউ বা শুয়ে পড়েন । প্রথমবারের চেষ্টায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে ঢুকতে পারেননি রাজ্যপাল । তাঁকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন আন্দোলনকারীরা । দ্বিতীয়বারের চেষ্টায় ক্যাম্পাসের ভিতরে ঢোকেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর ।
বাবুল সুপ্রিয়র কাছে পৌঁছন তিনি। স্বল্প বাক্য বিনিময় হয় দুজনের মধ্যে। এরপরই বাবুলকে ‘হাত ধরে’ নিয়ে বেরতে দেখা যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘আচার্য’ ধনকরকে । কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে নিয়ে গাড়িতে ওঠেন রাজ্যপাল । কিন্তু তারপরই ফের ঘেরাও হয়ে যান রাজ্যপাল ও বাবুল ।
ক্যাম্পাস থেকে বেরতে গেলে ফের বিক্ষোভের মুখে পড়ে রাজ্যপালের গাড়ি। রাজ্যপালের গাড়ি ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখান ৩০০ থেকে ৪০০ জন পড়ুয়া । আর গাড়ির মধ্যে বসে থাকেন রাজ্যপাল ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী । বিক্ষোভের জেরে ক্যাম্পাস থেকে বেরতে পারেনি রাজ্যপালের গাড়ি । যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এই ঘটনাকে নজিরবিহীন বলে সরব হয়েছে সব মহল । পড়ুয়াদের দাবি, রাজ্যপালকে তাঁরা বেরতে দেবেন না।
বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন পুলিশ ঢুকল? এই দাবিতে গাড়ি ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন তাঁরা। বিক্ষোভকারীদের দাবি প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে বাবুল সুপ্রিয়কে। তাঁকে বের করে আনার জন্যে বিপুল বাহিনী আনা হয়। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিজে বলেছেন, ‘যাঁদের যা কাজ, তারা করবেই। কিন্তু এভাবে আমাকে আটকানো যাবে না’।
যদিও পুলিশ বারবারই দাবি করছে, তাঁরা রাজ্যপালের সঙ্গে এসেছেন । এটা ডেকোরাম । নিয়ম অনুযায়ী তাঁরা এসেছেন । ক্যাম্পাস পরিস্থিতির উপর কোনওরকম নজর দিতে নয় । একইসঙ্গে ছাত্রছাত্রীদের আরও অভিযোগ, বাবুল সুপ্রিয় তাঁদের মারধর করেছেন ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে নবীনবরণ উৎসবে যোগ দিতে সেখানে গিয়েছিলেন বাবুল সুপ্রিয় । অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ তথা এবিভিপি আয়োজন করেছিল ওই অনুষ্ঠান । কিন্তু বাবুল ক্যাম্পাসে পৌঁছতেই তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে দেন বেশ কিছু ছাত্রছাত্রীরা ।
দুপুর থেকে এক টানা বাবুল সুপ্রিয়কে ক্যাম্পাসে আটকে রাখার পরই এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করেন আচার্য তথা রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় । অবশেষে এদিন রাত ৮ টার সামান্য পরে, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ নম্বর গেট বেরিয়ে যায় রাজ্যপালের কনভয় । দীর্ঘ সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়তে পারলেন বাবুল সুপ্রিয় ।