ধারা ৩৭০ ভূস্বর্গে রদ হতে না হতেই রাজ্যের কাছে এসে পৌঁছলো বিশেষ অ্যাডভায়সারি। সেই সঙ্গে দেশ জুড়ে শান্তি রক্ষা করতে তৎপর সরকার
জম্মু ও কাশ্মীরের স্পেশাল স্টেটাস তথা বিশেষ সাংবিধানিক মর্যাদা খারিজ করে দেওয়ার পর সোমবার নবান্নে বিশেষ অ্যাডভায়সারি পাঠাল কেন্দ্রীয় সরকার । তাতে রাজ্য সরকারকে চূড়ান্ত সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে । বলা হয়েছে, কোনো ভাবেই যেন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ভঙ্গ না হয় । যে সমস্ত জম্মু ও কাশ্মীরের বাসিন্দা এরাজ্যে বাস করেন তাঁদের যেন কোনো অসুবিধা না হয় । তাদের সন্তানরা যেন নিয়মিত স্কুল যেতে পারে সেই দিকে বিশেষ নজর দেওয়ার কোথাও বলা হয়েছে।
সেই সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ সহ দেশের সমস্ত রাজ্য এবং কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করল কেন্দ্রীয় সরকার । রাজ্যের সচিবালয়, পুলিশ কমিশনার, পুলিশ সুপারদের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষ থেকে নির্দেশিকা জারি করে বলা হয়েছে, চূড়ান্ত সতর্ক থাকতে । ৩৭০ ধারা বিলোপের পর জঙ্গি হামলার আশঙ্কা রয়েছে । তার ওপর সামনেই ১৫ আগস্ট । সব জায়গাতেই হবে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান । দিল্লির লালকেল্লায় যেমন পতাকা তুলে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী, তেমনই রাজ্যে রাজ্যেও হবে এই অনুষ্ঠান । মেট্রো, বিমানবন্দর, গুরুত্বপূর্ণ রেলস্টেশন, শপিংমল সহ যে সমস্ত জায়গায় প্রচুর মানুষের আনাগোনা, সেই জায়গাগুলিকে ইতিমধ্যেই চিহ্নিত করার কাজ চলছে । এই সময়ে এমনিতেই গুরুত্বপুর্ণ পয়েন্ট অর্থাৎ একটি জেলা থেকে অন্য জেলায় ঢোকার জায়গা, রাজ্য সীমান্তে নাকা চেকিং চলেই । কিন্তু এই সিদ্ধান্তের পর তা আরও কঠোর ভাবে প্রয়োগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রের তরফে ।
গত কয়েক দিন ধরেই জম্মু ও কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার আশঙ্কা থাকায় গোয়েন্দা রিপোর্টের ভিত্তিতেই রেড অ্যালার্ট জারি করে দেওয়া হয় গোটা উপত্যকায় । বন্ধ করে দেওয়া হয় অমরনাথ যাত্রা। বায়ুসেনার বিমান ব্যবহার করে ফিরিয়ে আনা হয় তীর্থযাত্রীদের । পর্যটকদের নির্দেশ দেওয়া হয় কাশ্মীর ছেড়ে চলে যাওয়ার । ৩৮ হাজার সেনা মোতায়েন করা হয় সমগ্র জম্মু ও কাশ্মীরে । এদিন আরও আট হাজার সেনা পাঠানো হয়েছে উপত্যকায় ।
তারপর থেকেই ইঙ্গিত মিলছিল সরকার কড়া পদক্ষেপ করতে পারে। সোমবার সকালে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠক ডাকেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি । ক্যাবিনেটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ প্রস্তাব করেন ৩৭০ ধারা বিলোপের । এর পরই পাশ হয়ে যায় এই বিল মোদি মন্ত্রিসভায় । এরপর আইনমন্ত্রকের ড্রাফট চলে যায় রাষ্ট্রপতি ভবনে । তাতে সিলমোহর দেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দও । তারপর থেকেই চূড়ান্ত সতর্কতা গোটা দেশ জুড়ে । মূলত হিংসা বা নাশকতার ঘটনা ঠেকাতেই দেশ জুড়ে এই পদক্ষেপ।