চন্দ্রযান ১ এর সাফল্য তাঁকে তাঁর কর্মক্ষেত্রে আরও প্রতিষ্ঠিত করে।এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা যান্ত্রিক ত্রুটি সারিয়ে কবে চাঁদের উদ্দেশ্যে পাড়ি দেয় চন্দ্রযান। তারপরই তো পৃথিবী থেকে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকা হাজার কোটি চোখ চন্দ্রকান্তর দৌলতে জানতে পারবেন অচিন দেশের অজানা কাহিনী
শেষ মুহুর্তে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে চন্দ্রযান ২ এর উৎক্ষেপণ করা হয়নি, কিন্তু তাতে কী ? একজন বাঙালি হয়ে বাঙালির সাফল্যে গর্ব করা তো যেতেই পারে। এই গর্বেই রবিবার গভীর রাতে দুচোখের পাতা এক করতে পারেননি হুগলির গুড়াপের শিবপুর গ্রামের বাসিন্দারা এবং চন্দ্রকান্ত কুমারের পরিবার। যিনি চন্দ্রযান ২ মিশনের ডেপুটি ডিরেক্টর। মিশনের জন্য তৈরি করা যে অ্যান্টেনার মাধ্যমে সৌরমণ্ডল থেকে বার্তা পাঠাবে মহাকাশ যান তার প্রধান কারিগর চন্দ্রকান্ত কুমার । রবিবার গোটা রাত জেগেই কাটিয়েছেন পরিবারসহ এই গ্রামের মানুষ। টিভিতে খবর দেখে জানতে পারেন যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এই মুহূর্তে চাঁদে যাচ্ছে না চন্দ্রযান। কিছুটা হতাশ হলেও সকাল হতেই মানুষের ঢল কুমারের বাড়িতে। ছেলের এই সাফল্যে গর্বিত পরিবার।
সোমবার সকাল থেকে শিবপুর গ্রামে সংবাদ মাধ্যমের লোকজনের ভিড়। বাড়ির দাওয়ায় বসে চন্দ্রকান্ত কুমারের বাবা মধুসূদন কুমার ও মা অসীমা কুমার ছেলের সাফল্যের পাশাপাশি বলছিলেন, আজ থেকে বিশ ত্রিশ বছর আগের কথা, হুগলির গুড়াপের এই শিবপুর গ্রামের স্কুলেই পড়াশোনা করেছেন চন্দ্রকান্ত বাবু। পাকা রাস্তা,আলো জল সে সবই তখন ছিল গ্রামের মানুষের কাছে স্বপ্ন। কাদা রাস্তা, সন্ধে নামলেই রাস্তা জনমানবহীন হয়ে যাওয়া এই গ্রামের কৃষক মধুসূদন বাবুর একমাত্র স্বপ্ন ছিল ছেলেদের সঠিক লক্ষ্যে পৌঁছে দেওয়া। ভাল খাওয়া, বিলাসিতা তাঁদের জীবনে কোনও দিন ভাবনাতেও আসেনি। গ্রামের পড়াশোনা শেষ করে শহরে পাড়ি দেওয়া চন্দ্রকান্ত যে একদিন চন্দ্রযানের ডেপুটি ডিরেক্টর হবেন তা হয়ত ভাবার অতীত ছিল নুন আনতে পান্তা ফুরানো পরিবারের কাছে । দূর সঞ্চার যন্ত্র অ্যান্টেনা নিয়েই তাঁর যাবতীয় সাফল্য। শুধু ইসরোতেই নয় দূরসঞ্চারের সব ধরনের পরীক্ষাতেই ভারত সরকারের গুডবুকে চন্দ্রকান্ত। চন্দ্রযান ১ এর সাফল্য তাঁকে তাঁর কর্মক্ষেত্রে আরও প্রতিষ্ঠিত করে।এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা যান্ত্রিক ত্রুটি সারিয়ে কবে চাঁদের উদ্দেশ্যে পাড়ি দেয় চন্দ্রযান। তারপরই তো পৃথিবী থেকে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকা হাজার কোটি চোখ চন্দ্রকান্তর দৌলতে জানতে পারবেন অচিন দেশের অজানা কাহিনী । যদিও অত সত বোঝেন না গুড়াপের সরল সিধে মানুষগুলো, এই টুকু বুঝতে পারছে তাঁদের ছেলে এমন কিছু করেছে যার কারণে সকাল সকাল তাঁদের গ্রামে হাজির সাংবাদিকরা। তাই ফের চন্দ্রযান উৎক্ষেপণ হওয়ার দিকে তাকিয়ে গ্রামবাসী।