কাটিগড়া বিধানসভা এলাকার লাঠিমারা থেকে নাজাতপুর হয়ে মাদারপুর সড়কটি ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। বর্তমানে ওই সড়কের অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়।
কাছাড় জেলার কাটিগড়া বিধানসভা এলাকার একটি সড়ক পাকাকরণের দাবিতে সাধারণ জনগণের ধরনা-বিক্ষোভে কেঁপে উঠেছে কাটিগড়া সার্কল অফিস চত্বর। সোমবার বেলা দুটো পর্যন্ত ধরনা চলার কথা থাকলেও, চলে বিকেল প্রায় সাড়ে তিনটা পর্যন্ত। খোলা আকাশের নীচে মাথার উপর প্রখর রোদের মধ্য ধরনায় শামিল হয়ছিলেন প্রচুর মহিলাও। শামিল হয়েছিলেন কচিকাঁচা শিশুরা পর্যন্ত।
বিবরণে প্রকাশ, কাটিগড়া বিধানসভা এলাকার লাঠিমারা থেকে নাজাতপুর হয়ে মাদারপুর সড়কটি ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। বর্তমানে ওই সড়কের অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়। বরাক নদীর করাল গ্রাসে রাজটিলায় সড়কের একটি অংশ নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। বৃহত্তর এক অঞ্চলের যোগাযোগের মাধ্যম হয়ে দাঁড়ায় ইএনডি সড়ক। কিন্তু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইএনডি সড়কও দীর্ঘদিন থেকে বেহাল। স্থানিয়দের দাবি, সড়কটি শীঘ্রই পাকা করতে হবে। এই দাবিতে কয়েকবার কয়েকটি স্মারকপত্রও সংশ্লিষ্টদের কাছে প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু নিটফল শূন্য।
সোমবার ধরনা কর্মসূচি হাতে নিয়েছিলেন সম্মিলিতভাবে এলাকার জনগণ। তিন কিলোমিটার রাস্তা পায়ে হেঁটে প্রায় পাঁচ শতাধিক মানুষ মিছিল করে সার্কল অফিস প্রাঙ্গণে ধরনা ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। পাশাপাশি চলে স্লোগানবাজি। বিভিন্ন বক্তা তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন বর্তমান সরকার এবং স্হানীয় বিধায়ককে। পূর্ত বিভাগকে তাঁরা অকর্মণ্য আখ্যাও দিয়েছেন। কর্মসূচি অনুযায়ী ধরনার মেয়াদ ছিল দুটো পর্যন্ত। কিন্তু সার্কল অফিসার না থাকায় একসময় ক্ষোভ চরম আকার দেখা দেয়। বেঁকে বসেন আন্দোলনকারীরা। আধিকারিক না আসা পর্যন্ত ধরনা কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা। আইন-শৃঙ্খলা অবনতি হওয়ার আশঙ্কায় একসময় বাধ্য হয়ে ডেমেজ কন্ট্রোল করতে ছুটে আসেন পূর্ত বিভাগের এসডিই বিশ্বজিৎ নাথ।
এসডিই বিশ্বজিৎ নাথকে কাছে পেয়ে আন্দোলনকারীরা চেপে ধরেন তাঁকে। কবে শুরু হচ্ছে কাজ? এই প্রশ্নের জবাব না দিয়ে বল ঠেলে দেন ইডি ডিপার্টমেন্টের ঘাড়ে। বলেন, ওরা এনওসি দেয়নি। তাই কিছুটা কাজ করে বন্ধ রাখা হয়েছে। নো-অবজ্যকশন সার্টিফিকেট পেয়ে গেলেই এস্টিমেট পাঠানো হবে। তাঁর এই বক্তব্য প্রতিবাদীরা মেনে নেননি। একসময় বাধ্য হয়ে চলাচলের উপযোগী করে দেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি। আশ্বাস পেয়ে শান্ত হয় প্রতিবাদী ধরনা। শেষে এসডিই নাথের হাতে তুলে দেওয়া হয় দাবি সংবলিত এক স্মারকপত্র।
এলাকাবাসীদের সান্ত্বনা দিতে গিয়ে বড়বাবু বিমল ধর বলেন, বিষয়টি ডিডিসি-র গোচরে নেওয়া হয়েছে। তাঁদের দাবি গুরুত্ব সহকারেই দেখা হচ্ছে বলে জানান তিনি। আন্দোলনের সমর্থন নিয়ে ধরনা কর্মসূচিতে অংশ নেন স্হানীয় এআইইউডিএফ, কংগ্রেস, অসম মজুরি শ্রমিক সংগঠন-সহ বিভিন্ন সংস্হার কর্মকর্তারা। আজকের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন ওয়ার্ড সদস্য আব্দুল কাদির, হুসেন আহমদ, নিখিল দাস, ইয়াহিয়া হুসেন প্রমুখ।