বিধানসভায় ঐতিহ্যের তথ্যভান্ডারকে ডিজিটাইজ করলে পড়ুয়ারা সহজে অনেক ঐতিহ্যের কথা জানতে পারবে
পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভার ঐতিহ্যের তথ্যভান্ডারকে ডিজিটাইজ করা হচ্ছে। বুধবার বিধানসভায় এই মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় অধিবেশনে বলেন, এই প্রক্রিয়া ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। এই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মেদিনীপুরের পিছাবনী সেতুতে একটি স্মারক ও সংগ্রহশালা তৈরি হবে। জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকান্ড স্মরণে কলকাতায় একটি স্মারক তৈরির জন্য বিধানসভায় প্রস্তাব গ্রহণের আবেদন করেন তিনি।
জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকান্ডের ১০০ বছরপূর্তি স্মরণে বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিধানসভায় ঐতিহ্যের তথ্যভান্ডারকে ডিজিটাইজ করলে পড়ুয়ারা সহজে অনেক ঐতিহ্যের কথা সহজে জানতে পারেন। স্বাধীনতা সংগ্রামে বাংলার অবদানের কথা তিনি বিশদে বলেন। মাতঙ্গিনী হাজরার কথা বলতে গিয়ে জানান, ইংরেজদের হুমকি উপেক্ষা করে উনি বলেছিলেন ‘পিছোবিনি’। তা থেকেই জায়গাটার নাম পিছোবিনি। এ কারণেই ওখানে হবে সৌধ, সংগ্রহশালা।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জলিয়ানওয়ালা বাগ, রবীন্দ্রনাথের নাইট উপাধি ত্যাগ— এই সব ঘটনা গোটা বিশ্বের কাছে আলোড়ন ফেলে দিয়েছিল। নেতাজী সুভাষচন্দ্র থেকে চিত্তরঞ্জন দাস, কেবল স্বাধীনতা সংগ্রাম ছাড়াও রাজা রামমোহন রায়, নবজাগরণ — বাংলা অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছে। আন্দামানে সব থেকে বেশি বন্দী ছিলেন বাংলার মানুষ। তাঁরা দেশের জন্য নিজেদের জীবন ত্যাগ করেছেন। বাংলার মানুষ এই সব দিক দিয়ে অনেক এগিয়ে আছেন। সেলুলার জেলের দুই তৃতীয়াংশ বন্দী ছিলেন বাংলার। এর পরেই পঞ্জাবীদের স্থান। বাংলা এবং পঞ্জাবের পারস্পরিক সম্পর্ক চিরকালীন। ।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও তাঁর ‘জনগণমন অধিনায়ক-তে ঐক্যের মালার মত এনেছেন দেশের নানা অংশকে। তাতে শুরুতে রেখেছিলেন পঞ্জাবকে, শেষ করেন বাংলাকে দিয়ে। বাংলা অত্যাচারিত হলে পঞ্জাব এগিয়ে এসেছে। আবার পঞ্জাব অত্যাচারিত হলে বাংলা এগিয়ে এসেছে। অন্য রাজ্যগুলোও এ ভাবে পারস্পরিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু আজ দেশের এই চরিত্র নষ্ট হয়ে গিয়েছে। সঙ্কীর্ণ রাজনীতি দিয়ে নষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে ঐক্যের বাতাবরণ।
এদিন বিধানসভায় জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকান্ডের ১০০ বছরপূর্তি নিয়ে আলোচনার জন্য বরাদ্দ ছিল দেড় ঘন্টা। মুখ্যমন্ত্রী এবং অধ্যক্ষ ছাড়াও ছিলেন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান, কংগ্রেসের অসিত মিত্র, সিপিএমের পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী, বিজেপি-র মনোজ টিগ্গা, তৃণমূলের ব্রজমোহন মজুমদার এবং জ্যোতির্ময় কর প্রমুখ।