মালদায় পাঁচটি নতুন থানা

2 - মিনিট |

মালদা পাচ্ছে আরও পাঁচটি নতুন থানা। মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর, চাঁচল, গাজোল এবং কালিয়াচক থানাগুলিকে ভেঙে গঠিত হবে নতুন থানা গুল।

কে আর সি টাইমস ডেস্ক

কথা ছিল মালদায় দু’টি পুলিশ জেলা হবে। তা হল না। তার বদলে মালদা পাচ্ছে আরও পাঁচটি নতুন থানা। মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর, চাঁচল, গাজোল এবং কালিয়াচক থানাগুলিকে ভেঙে গঠিত হবে নতুন থানা গুল। 

এরফলে মালদা জেলায় থানার সংখ্যা ১৫ থেকে বেড়ে দাঁড়াবে ২০ টিতে। একই সঙ্গে বাড়বে পুলিশ কর্মী ও অফিসারের সংখ্যাও। এরফলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে সুবিধে হবে। মালদা জেলায় ২০১১ সালের সেন্সাস অনুযায়ী জনসংখ্যা ছিল প্রায় ৪০ লক্ষ । বর্তমানে জেলার জনসংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪৮ লক্ষ। মালদায় পুলিশী ব্যবস্থাকে জোড়দার করতে তৈরি করা হবে পাঁচটি নতুন পুলিশ থানা।

১৯৫০ সালের পর থেকেই মালদা জেলায় বেশীর ভাগ পুরোনো থানাতেই পূর্নগঠন হয়নি। বাড়েনি পুলিশের পরিকাঠামোও। এই অবস্থায় মালদায় নতুন পাঁচটি পুলিশ থানার প্রস্তাব তৈরি করেছে জেলা পুলিশ। মালদার বর্তমান হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকায় জনসংখ্যা ছয় লক্ষেরও বেশী । দুটি প্রশাসনিক ব্লক বর্তমানে এই থানার অধীনে। নতুন পরিকল্পনায় বর্তমান হরিশ্চন্দ্রপুর থানাকে ভেঙে মোট তিনটি থানার প্রস্তাব করা হয়েছে। হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পাশাপাশি নতুন দুটি থানা হতে পারে ভালুকা এবং তুলসীহাটায়। একইভাবে, বর্তমান কালিয়াচক থানায় জনসংখ্যা রয়েছে সাত লক্ষেরও বেশী। আইন শৃঙ্খার সুবিধার জন্য কালিয়াচক থানাকে ভেঙেও দুটি থানা করা হবে। নতুন থানা হবে সুজাপুরে। মালদহের চাঁচল থানা এলাকায় বর্তমানে জনসংখ্যা চার লক্ষেরও বেশী। এখানেও নতুন একটি থানার প্রস্তাব করা হয়েছে। চাঁচলের পাশাপাশি নতুন আরও একটি থানা হবে মালতিপুরে। অন্যদিকে মালদার গাজোল থানা এলাকায় বর্তমান জনসংখ্যা প্রায় চার লক্ষ। এখানে ১৫টি পঞ্চায়েত রয়েছে। নতুন প্রস্তাবে গাজোল থানাকে ভেঙে নতুন থানা হবে দেওতলায়।

মালদা জেলার ভৌগোলিক অবস্থান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন। মালদার সঙ্গে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশের সীমান্ত। আবার প্রতিবেশী রাজ্য বিহার এবং ঝাড়খণ্ডের বেশ কিছু এলাকা মালদহ লাগোয়া। মালদহের বিস্তীর্ন এলাকা জুড়ে রয়েছে জলপথ। জাল নোট থেকে মাদকের চোরাকারবার, বেআইনী অস্ত্রের আনাগোনা ছাড়াও সাধারন নানান আইন শৃঙ্খলার সমস্যা রয়েছে মালদহে। জনবিন্যাস অনুযায়ীও মালদহ যথেষ্ট স্পর্শকাতর। মালদহ জেলায় গত কয়েক দশকে পুলিশ কর্মী ও অফিসারের সংখ্যা তেমন বাড়েনি। পুলিশ সূত্র অনুযায়ী, বর্তমানে মালদহে সাব ইন্সপেক্টর ও অ্যাসিট্যান্ট সাব ইন্সপেক্টরের অনুমোদিত পদ ২৫০ টি। সেখানে রযেছেন মাত্র ২০৫ জন। কনেষ্টবল এবং মহিলা কনষ্টেবলের অনুমোদিত পদ ১০২৪ টি। সেখানে রয়েছেন মাত্র ৭৫০ জন। এছাড়া ১৯ জন ইন্সেপ্ক্টর, ৬ জন ডি,এস,পি, ২ জন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সহ সবমিলিয়ে পুলিশ কর্মী ও অফিসার সংখ্যা ১৪০০ র কিছু বেশী ৷ জেলা পুলিশে ক্রাইম রেকর্ড ব্রুরোর তথ্য অনুযায়ী, ১৯৫০ সালে যে সময় জেলার পুলিশ পরিকাঠামো তৈরি হয়েছিল সেই সময় বছরে এক হাজারেরও কম মামলা নথিভুক্ত হত। ১৯৮৪ সাল নাগাদ জেলায় বার্ষিক নথিভুক্ত মামলা ছিল প্রায় দুই হাজার । বর্তমানে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে বছরে প্রায় দশ হাজার। এই অবস্থায় মালদায় পুলিশ পরিকাঠামো ঢেলে সাজানোর প্রয়োজন হয়ে পড়েছে । এর জেরেই জেলায় থানা বৃদ্ধির বিষয়ে সবুজ সংকেত দিয়েছে রাজ্য সরকার। জেলায় নতুন থানা বৃদ্ধির প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে সাধারণ মানুষ থেকে বনিক মহল। এরফলে আইন শৃঙ্খলা আরও জোড়দার হবে বলে আশাপ্রকাশ করেছেন মালদহ মার্চেন্ট চেম্বার অফ কমার্সের সাধারন সম্পাদক জয়ন্ত কুন্ডু।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related news