মারা গেলেন মিশরের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি হোসনি মোবারক। মৃত্যুকালে তাঁর বয়েস হয়েছিল ৯১ বছর
মারা গেলেন মিশরের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি হোসনি মোবারক। দীর্ঘ রোগভোগের পরে মঙ্গলবার দুপুরে কায়রোর এক হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ক্ষমতাচ্যূত রাষ্ট্রপতি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়েস হয়েছিল ৯১ বছর | এদিন বিতর্কিত এই নেতার মৃত্যু খবর মিশরের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানিয়েছে গত জানুয়ারিতে হাসপাতালে তাঁর হৃদযন্ত্রে অস্ত্রোপচার হয়েছিল।
ক্ষমতাচ্যূত হওয়ার পরেই মিশরের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতিকে জেলবন্দি করা হয়। দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও গণহত্যার অভিযোগে ২০১২ সালে তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়। প্রায় ৬ বছর বন্দি থাকার পর আদালতের নির্দেশে মুক্তি পান শেষ জীবন হেলওপলিসে নিজের বাড়িতেই কাটিয়েছিলেন মোবারক।
১৯২৮ সালে নীলনদ তীরে মনুফিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন হোসনি মুবারক। মাত্র ২১ বছর বয়সে ১৯৪৯ সালে মিশরের বায়ুসেনায় যোগ দেন তিনি। ১৯৭২ সালে তিনি দেশের বিমান বাহিনীর প্রধান হিসেবে নিযুক্ত হন। ১৯৭৩ সালের আরব-ইজরায়েল যুদ্ধের সময় মোবারক জাতীয় বীর হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। যুদ্ধের পর ১৯৭৫ সালে তাঁকে মিশরের উপ রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিয়োগ দেন তৎকালীন মিশরের রাষ্ট্রপতি আনোয়ার আল-সাদাত।
১৯৮১ সালে মিশরের রাষ্ট্রপতি আনোয়ার সাদাত খুন হওয়ার পরে মিশরের রাষ্ট্রপতি পদে বসেন মোবারক। ইজরায়েল-প্যালেস্তাইন শান্তিচুক্তিতেও বিশেষ ভূমিকা নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গেই মোবারকের বিরুদ্ধে জনরোষ বাড়তে থাকে। ২০১১ সালে গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যূত হন তিনি। ওই বছর জানুয়ারিতে সরকার বিরোধী আন্দোলনে কায়রোর রাজপথে নেমে আসেন লক্ষ-লক্ষ মানুষ। গণআন্দোলন রুখতে প্রথমে সেনাবাহিনীকে গণহত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন বলে মোবারকের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ ওঠে। শেষপর্যন্ত গণআন্দোলনের কাছে নতিস্বীকার করতে বাধ্য হন তিনি। ১৮ দিনের মাথায় দীর্ঘ ৩০ বছর বাদে ১১ ফেব্রুয়ারি পদত্যাগ করেন তিনি।