জিটুজি : অথনীতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বাংলাদেশকে ঋণগ্রস্ত করতে চাইছে চিন !

2 - মিনিট |

শ্রীলঙ্কাও ও অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশকে ঋণগ্রস্ত দেশ বানিয়ে নিজেদের ফায়দা লুটতে চাইছে চিন। এজন্য বাংদেশের উন্নয়নের সহযোগী হিসেবে নিজেদের তুলে ধরতে চাইছে তারা

কে আর সি টাইমস ডেস্ক


ঢাকা, ৮ জানুয়ারি (হি.স.) : শ্রীলঙ্কাও ও অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশকে ঋণগ্রস্ত দেশ বানিয়ে নিজেদের ফায়দা লুটতে চাইছে চিন। এজন্য বাংদেশের উন্নয়নের সহযোগী হিসেবে নিজেদের তুলে ধরতে চাইছে তারা | মূলত চিনের লক্ষ বাংলাদেশের শেয়ার বাজারসহ সকল অর্থনীতি তাদের নিয়ন্ত্রণে নেওয়া । যাতে বাংলাদেশ চিনের নিয়ন্ত্রণ থেকে কোনদিন বেরিয়ে যেতে না পারে। সেজন্য এখন সরাসরি ঋণের পরিবর্তে সরকার টু সরকার (জিটুজি) কাজ করার নামে রেলসহ বিভিন্ন প্রকল্পে টাকা দিচ্ছে। নিজেরাই পরামর্শক নিয়োগ করে দশগুণ পর্যন্ত বেশি খরচ নির্ধারণ করছে বিভিন্ন প্রকল্পের ব্যয়। আবার টেন্ডার বা দরপত্র আহবান না করেই চিনের সরকারী প্রতিষ্ঠানের নামে কাজ নিচ্ছে। এরফলে চিনের কাছে ভয়াবহভাবে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের চলমান রেলের উন্নয় সহযোগীতার অংশিদার হিসেবে ভারতের ঋণে চলমান প্রকল্পে রেলপথ নির্মাণে সবচেয়ে কম টাকা ব্যয় হচ্ছে। অপরদিকে চিনের ঋণে জিটুজি (সরকার টু সরকার) ভিত্তিতে চলমান প্রকল্পে ব্যয় সবচেয় বেশী। অথচ এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ঋণেও চিনের চেয় প্রকল্প ব্যয় কম।বাংলাদেশের রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ভারতের ঋণ সহায়তায় চলমান কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলপথ ডুয়েলগেজ রূপান্তরে কিলোমিটারপ্রতি ব্যয় হচ্ছে ১০ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। ৫২ দশমিক ৫৪ কিলোমিটার এ রেলপথ রূপান্তর প্রকল্পে ব্যয়ে হবে ৫৪৪ কোটি ৮৬ লাখ ৭৭ হাজার ৬৪০ টাকা। ২০১৭ সালের ১৫ নভেম্বওে ভারথীয় কোম্পনির সাথে এ-সংক্রান্ত চুক্তি সই করা হয়। সেখানে চিনের সাথে জিটুজির অধিনে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পে রেলপথ নির্মাণে প্রতিকিলোমিটারে ব্যয় হচ্ছে ১৩২ কোটি ৯৪ লাখ ১৩ হাজার টাকা। এ প্রকল্পে ঢাকার সাথে যশোর পর্যন্ত ২১৫ দশমিক ২২ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করা হবে।আখাউড়া-সিলেট রেলপথ ডুয়েলগেজ রূপান্তর প্রকল্পের আওতায় ২৩৯ দশমিক ১৪ কিলোমিটার মিটারগেজ রেলপথকে ডুয়েলগেজে রূপান্তর করা হবে। চিনের ঋণ সহায়তায় জিটুজি ভিত্তিতে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে চিনের সরকারি কোম্পনি চায়না রেলওয়ে কনস্ট্রাকশন কোম্পানি। দরপত্র ছাড়াই এ ঠিকাদার চূড়ান্ত করা হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬ হাজার ১০৪ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। প্রতি কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণে ব্যয় হবে ৬০ কোটি ৫৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা। তবে এ ঋণ শর্তে প্রতিবছর বাজার মূল্য সমন্বয়ের কথা থাকায় নির্মাণ ব্যয় আরও কয়েকগুণ বাড়বে।চিনের ঋণ সহায়তায় জিটুজির অধিনে জয়দেবপুর-ঈশ্বদী পর্যন্ত ১৫৮ দশমিক ১২ রেলপথ নির্মাণে প্রতিকিলোমিটারে ব্যয় হচ্ছে ৬০ কোটি ৭৬ লাখ ৪৩ হাজার টাকা। এ প্রকল্পেও বাজার মূল্য সমন্বয়ের শর্ত থাকায় নির্মাণ ব্যয় বাড়বে। সেখানে ভারতের ঋণ সহায়তায় খুলনার রূপসা ব্রিজসহ মংলা পোর্ট পর্যন্ত প্রতিকিলোমিটার রেলপথ নির্মাণে ব্যয় হবে ৩৮ কোটি টাকা।আর এডিবির ঋণ সহায়তায় কক্সবাজার থেকে মায়ানমারের পর্যন্ত প্রতি কিলোমিটার ডুয়েলগেজ রেলপথ নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ৪৪ কোটি ৭১ লাখ টাকা। সেখানে ভারতের ঋণ সহায়তায় পার্বতীপুর থেকে কাউনিয়া পর্যন্ত ৬৬ দশমিক ৮৫ কিলোমিটার নতুন ডুয়েলগেজ রেলপথ নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ১ হাজার ১২ কোটি ৬২ লাখ টাকা। প্রতি কিলোমিটারে ব্যয় পড়ছে ১৫ কোটি ১৫ লাখ টাকা।এছাড়া এডিবির ঋণ সহায়তায় আখাউড়া থেকে লাকসাম পর্যন্ত বিদ্যমান ৯২ দশমিক ৩০ কিলোমিটার রেলপথ ডুয়েলগেজে রূপান্তর করা হচ্ছে। এ কাজের চুক্তি মূল্য ৩ হাজার ৪৯৭ কোটি ৩১ লাখ টাকা। এতে কিলোমিটারপ্রতি ব্যয় পড়ছে ১৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা।তবে রেলপথ মন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন দাবী করেছেন অনেক সময় জমির কারণেও রেলপথ নির্মাণ ব্যয় বাড়ে। তিনি বলেন, উত্তরবঙ্গের মাটি ফরিদপুর-যশোর অঞ্চলের মাটি এক না। এছাড়া পদ্মা সেতু সংযোগ রেলপথ নির্মাণে ২৬ কিলোমিটার এলিভেটেড করতে হবে। এছাড়া বুড়িগঙ্গা ও ধলেশ্বরী পৃথক রেল সেতু করতে হবে। তাই পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পে ব্যয় বেশি হচ্ছে। এছাড়া পরামর্শক সংস্থা যেভাবে ব্যয় ধরে সেভাবেই করতে হয়।তিনি বলেন, ভারতের ঋণ সহায়তার ক্ষেত্রে খোলা দরপত্র আহবান করতে হয়। তাদের দেশের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান দরপত্রে অংশগ্রহণ করতে পারলেও সেখানে প্রতিযোগিতা হয়। কিন্তু জিটুজির ক্ষেত্রে সে সুযোগ নেই। আর ঋণ সহায়তাকারীরা যে শর্ত দেয় অনেক ক্ষেত্রে উন্নয়নের স্বার্থে তা মানতে হয় এতে করার কিছু নেই।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related news