শিক্ষকদের বদলি নীতি শিথিল করার নির্দেশ মমতার

2 - মিনিট |

সরকারি কর্মচারি থেকে শিক্ষক শিক্ষিকা সকলের মনেই বকেয়া ডিএ নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে। ষষ্ঠ বেতন কমিশনের অপেক্ষায় সবাই

কে আর সি টাইমস ডেস্ক

শিক্ষকদের বদলি নীতি শিথিল করার নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং শিক্ষা দফতরের আধিকারিকদের উদ্দেশ্যে বৃহস্পতিবার নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘পার্থদা, আপনারা শিক্ষকদের বদলির বিষয়টা মানবিক দিক থেকে দেখুন । যে শিক্ষকদের বাড়ি মেদিনীপুরে, অথচ শিক্ষকতা করেন বাঁকুড়ায়, তাঁর অসুবিধে হয় । যদি তাঁকে নিজের জেলায় আনা যায় সেটা দেখতে হবে’।

বস্তুত শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় গত বছর দুয়েক ধরে বারবারই বলেছেন, শিক্ষকদের বদলি নীতি কঠোর করা হবে । চাইলেন কোনও শিক্ষক বদলি নিতে পারবেন না । যে জেলায় তিনি চাকরি পেয়েছেন সেখানেই শিক্ষকতা করতে হবে । এদিন মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য একশ আশি ডিগ্রি ঘুরে উল্টো কথাই বলেন ।

নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে এ দিনের অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় স্তরের কয়েক হাজার শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন । তাঁদের উদ্দেশ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আপনারা যে স্কুলের টিচার, ধরুন সেখানে দেখলেন অনেকজন আছেন । কিন্তু পাশেই একটা স্কুলে ছাত্র আছে অথচ সেখানে শিক্ষক নেই । আপনারা নিজেরা আলোচনা করে পাশের স্কুলে গিয়ে ক্লাসটা একটু করিয়ে দিন । এই সবটাই অ্যাডজাস্ট করে নিলেই হয়ে যায়’।

সরকারি কর্মচারি থেকে শিক্ষক শিক্ষিকা সকলের মনেই বকেয়া ডিএ নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে। ষষ্ঠ বেতন কমিশনের অপেক্ষায় সবাই । এবিষয়ে আজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘ভুল বুঝবেন না । আমাদের টাকা আছে তাও দিচ্ছি না নয় । টাকা থাকলে তো দেব।’ শুধু এটুকুই নয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন রাজ্যের গরিবি বোঝাতে বলেন, ‘আমাদের গরিবের সংসার । আপনাদের ঋণ টাকা দিয়ে শোধ করা যায় না । প্রতিকূলতার মধ্যে কাজ করছি । ইনকামের থেকে বেশি দেনা শোধ করতে চলে যাচ্ছে । ৫৫ হাজার কোটি টাকা এই বছরেই দিতে হবে।’

এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যে আগাগোড়া শিক্ষকদের মন পাওয়ার চেষ্টা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে । কোন অভিযোগের জবাব তিনি দিচ্ছেন তা উল্লেখ না করলেও বক্তব্য জুড়ে যেন সাফাই দিয়ে গেলেন । রাজ্যের সফাইয়ের সঙ্গে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগও তোলেন । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘সিচুয়েশন খুব খারাপ, খুব খারাপ, খুব খারাপ । আজকে মাইনে দিতে পারছি, আশা করছি দিয়ে যেতে পারব কিন্তু ব্যাঙ্কের সব টাকা যদি চলে যায়, অর্থনীতিতে যদি ধস নামে, তখন কী করব ? বিশ্বাস রাখুন । সীমাবদ্ধ ফান্ডে যখন যেমন পারব দিতে দিতে যাব।’

কেন্দ্রকে বিপুল অঙ্কের ঋণ শোধ করতে হলেও রাজ্যের শিক্ষকদের জন্য একগুচ্ছ জনস্বার্থমূলক কাজ করেছে রাজ্য সরকার । বৃহস্পতিবার এমনটাই বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । সবাইকে শিক্ষকদের সম্মান করতে আবেদন করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, শিক্ষকদের স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে । কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দেগে এদিন মমতা বলেছেন, কেন্দ্র সর্বশিক্ষা অভিযান বন্ধ করে দিয়েছে । ইউজিসি গবেষণামূলক কাজে ছাত্রছাত্রীদের টাকা বন্ধ করে দিয়েছে । ছাত্রছাত্রীদের কাছে একথা জানতে পেরে রাজ্য সরকারের তরফে তাঁদের জন্য ২০ কোটি টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে । বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা কে১, কে২ এবং কে৩ স্তরে টাকা পাবে । এদিন বেশ কয়েকজন শিক্ষকের হাতে শিক্ষা রত্ন পুরস্কার তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী ।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related news