মৌসুমী অক্ষরেখা দিঘা হয়ে পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে মধ্যে অবস্থান করছে। ফলে মঙ্গলবার থেকে বৃষ্টি চলতে পারে সপ্তাহভর
সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই বর্ষণসিক্ত হয়ে উঠবে তিলোত্তমা ও উপকূলবর্তী কয়েকটি জেলা। হাওয়া অফিসের খবর অনুযায়ী, আপেক্ষিক আর্দ্রতা আর প্রচণ্ড গরমের হাত থেকে নিস্তার পাওয়ার সুযোগ মিলবে মঙ্গলবার থেকেই। কয়েকদিন ধরে আকাশে মেঘ আর রৌদ্র লুকোচুরি খেলেই চলেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এর পিছেন কারণ হল গ্লোবাল ওয়ার্মিং। বরুণদেব তাঁর আশীর্বাদ থেকে বঞ্চিত করে রেখেছেন কলকাতা সহ পার্শ্ববর্তী জেলাগুলিকে। উত্তরবঙ্গ তো বটেই, মরুভূমির রাজ্য বলে খ্যাত রাজস্থানও অতি বৃষ্টিতে বানভাসি। কিন্তু ‘দক্ষিণবঙ্গে ঝড় ঝড় বরষণ’ দূরে থাক, যেটুকু হচ্ছে তাকে ‘শিয়ালের বিয়ে’ বললে অত্যুক্তি করা হবে না। বাংলার এই রূপ দেখলে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও হয়তো তাঁর বিখ্যাত ‘বর্ষামঙ্গল’ গীতিনাট্য বা বাংলার বর্ষা নিয়ে কোনও কবিতা লিখতে পারতেন না, কালীদাসও রচনা করতে পারতেন না তাঁর অমর কাব্য ‘মেঘদূত’। বৃষ্টি ভেজা অপরূপ ধরিত্রীর দেখা মিলছে না বলেই হয়তো এখনকার কবিরা বর্ষণ সিক্ত ভালোবাসার কবিতা লিখতে পারছেন না।
তবে
কিছুটা হলেও স্বস্তির খবর শুনিয়েছে আবহাওয়া দফতর। তাদের পূর্বাভাষ অনুযায়ী, মঙ্গলবার
থেকে বরুণদেবের আশীর্বাদ পর্ব শুরু
হওয়ার কথা ছিল। সোমবার উত্তরপূর্ব বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ তৈরি
হওয়ার সম্ভাবনার পাশাপাশি উপকূলের ৪ জেলায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস ছিল। যার জেরে মঙ্গল ও বুধবার
ভারী বৃষ্টি হতে পারে দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে। বিশেষ করে উপকূলবর্তী চার জেলায় ভারী বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। সেই সঙ্গে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে কোনও কোনও জায়গায় বৃষ্টি
সপ্তাহ ধরেও হতে পারে। এই
মুহূর্তে বৃষ্টির জন্য অনুকুল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে
জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর।
জানা গিয়েছে, মৌসুমী
অক্ষরেখা দিঘা হয়ে পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে মধ্যে অবস্থান করছে। ফলে মঙ্গলবার থেকে
বৃষ্টি চলতে পারে সপ্তাহভর। শুরুর দিতে উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে বৃষ্টি হলেও
সপ্তাহের শেষের দিকে বৃষ্টি হতে পারে পশ্চিমের জেলাগুলিতে। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের
পূর্বাভাস অনুযায়ী মঙ্গলবার হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে দুই ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, হাওড়া ও হুগলিতে। তবে হাওয়া
অফিস জানিয়েছে, বৃহস্পতি
ও শুক্রবার দক্ষিণবঙ্গের সবকটি জেলাতে রয়েছে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা। যার
জেরে মৎস্যজীবীদের প্রতি সতর্কতা জারি
করে বলা হয়েছে নিম্নচাপের কারণে সমুদ্র উত্তাল থাকবে। নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে মৎস্যজীবীদের
সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়ার বিষয়েও। তবে এই সময়েই মধ্যে বানভাসি
উত্তরবঙ্গে সেরকম ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। উল্লেখ্য, ১ জুন থেকে দক্ষিণবঙ্গে
বৃষ্টির ঘাটতি রয়েছে ৪৮ শতাংশ। কলকাতায় ঘাটতি রয়েছে ৫৮ শতাংশের মতো।