এখন সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন মানুষ, দাবি শিলচরের সাংসদ রাজদীপের

3 - মিনিট |

শিলচর জেলা গ্রন্থাগারে “সামাজিক অধিকারিতা শিবির”

কে আর সি টাইমস ডেস্ক

সরকারি অনেক প্রকল্প থাকলেও তা তৃণমূল স্তরে বাস্তবায়িত হচ্ছে কি না সেদিকে এর আগে তেমন নজর দেওয়া হত না। কিন্তু কেন্দ্রে বিজেপি সরকার আসার পর সব সরকারি প্রকল্পে যাতে সাধারণ মানুষ লাভান্বিত হতে পারেন সেদিকে অধিক নজর দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে অসমে বিজেপি সরকার আসার পর সবকটি সরকারি প্রকল্প দ্রুতগতিতে বাস্তবায়নের উপর অধিক গুরুত্ব দিচ্ছে, দাবি করেছেন শিলচরের সাংসদ ডা. রাজদীপ রায়। আজ রবিবার শিলচর জেলা গ্রন্থাগারে “সামাজিক অধিকারিতা শিবির” শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য পেশ করছিলেন সাংসদ।

তিনি বলেন, কেন্দ্র এবং রাজ্যের সরকার সর্বদা বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের কল্যাণের জন্য উদ্বিগ্ন এবং তাই তাদের সহায়তার জন্য কল্যাণমূলক পরিকল্পনা করা হয়েছে। অসমের ৩.৩০ কোটি মানুষের মধ্যে প্রায় ৫ শতাংশ দিব্যাঙ্গ এবং ২০১৪ সাল থেকে সরকার এবং পরবর্তীতে রাজ্যে এই জাতীয় সুযোগ-সুবিধাগুলি দেওয়ার ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে দিব্যাঙ্গদের অ্যাকাউন্টে ৫,০০০ টাকা করে জমা দেওয়া হয়েছিল এবং মাসে আরও ৫০০ টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়ে থাকে। 

কাছাড় জেলা প্রশাসন ও জেলা সমাজকল্যাণ বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত আজকের সভায় বক্তব্য পেশ করতে গিয়ে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কবীন্দ্র পুরকায়স্থ বলেন, বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর সরকারি প্রকল্পগুলি দ্রুত বাস্তবায়িত হচ্ছে। বিশেষ করে অসমে সর্বানন্দ সনোয়ালের নেতৃত্বে বরাক এবং ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার মধ্যে পার্থক্য হ্রাস পেয়েছে। এত সব প্রকল্পের কাজ বরাক উপত্যকায় শুরু হয়েছে যা আগের সরকারগুলো চিন্তাও করেনি। শীঘ্রই সর্বানন্দের হাত ধরে অসমের সর্বত্রই উন্নয়নের জোয়ার বইবে বলে দাবি করেন তিনি। 

অসম বিধানসভার প্রাক্তন উপাধ্যক্ষ তথা শিলচরের বিধায়ক দিলীপকুমার পiলকে আক্রমণাত্মক রূপে দেখা গেছে। কোনও ধরনের রাখঢাক না রেখে তিনি কাছাড় জেলার সমাজকল্যাণ বিভাগকে একহাত নিয়ে অভিযোগ করে বলেন, এই বিভাগ এখনও সঠিকভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করছে না। যদিও সকলের বিষয়টি জানা, তবে এখন থেকে সমাজকল্যাণ বিভাগের কর্মীদের জনসাধারণের হয়ে কাজ করার আবেদন রাখেন। তিনি আরও বলেন, সমাজকল্যাণ বিভাগকে কেউই বিশেষ গুরুত্ব দেন না। তবে এই বিভাগের হাতেই রয়েছে কচিকচি শিশুদের উন্নয়নমূলক সকল পরিকল্পনা। তাই মানবিক দৃষ্টিতে তাদের নিজের দায়িত্ব পালনের আবেদন রাখেন বিধায়ক। একইসঙ্গে তিনি দাবি রাখেন, বিকলাঙ্গ পরিবারের লোকদের বিভিন্ন সরকারি কাজে যাতে বিশেষ অগ্রাধিকার প্রদান করা হয় সে ব্যাপারে যত্মশীল হতে হবে। 

অনুষ্ঠানে বক্তব্য পেশ করতে গিয়ে জেলাশাসক লায়া মাদ্দুরি বিশেষভাবে সক্ষমদের দ্রুত শনাক্ত করা এবং শনাক্তকরণের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। তিনি বলেন সরকার সুবিধাভোগীদের সহায়তার জন্য সর্বদা প্রস্তুত এবং সমাজকল্যাণ বিভাগের পাশাপাশি অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এবং এনজিওগুলিকে বিশেষভাবে সক্ষমদের তালিকাভুক্ত করতে এবং প্রক্রিয়া অনুসারে সুবিধাগুলি অর্জনের জন্য নামগুলি প্রক্রিয়া করতে হবে।

কাছাড় জেলা সমাজকল্যাণ বিভাগের রাজকুমার কেডিয়া স্বাগত বক্তব্য পেশ করতে গিয়ে বলেন, সমাজকল্যাণ বিভাগ বিশেষাধিকারী ব্যক্তিদের জন্য বেশ কয়েকটি স্ক্রিনিং ক্যাম্পের আয়োজন করেছেl গত বছর আগস্ট মাসে এ-জাতীয় স্ক্রিনিং ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়েছিল। বিশেষ সক্ষমদের শনাক্ত করতে গোটা কাছাড় জেলার প্রতিটি ব্লকস্তরে আলেমকো (ভারতের কৃত্রিম অঙ্গ উৎপাদন সংস্থা)-র সহায়তায় ২,১৫৫ জন বিশেষ সক্ষম ব্যক্তিকে বিভিন্ন আইসিডিএস প্রকল্পের অধীনে সহায়তা ও যন্ত্রপাতি বিতরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি বলেন, আগামীদিনে সমাজকল্যাণ বিভাগ বিশেষ যোগ্য ব্যক্তিদের পরিবহণ সমস্যা নিরসনে ব্লক পর্যায়ে বিতরণ শিবির পরিচালনা করবে। তিনি আরও বলেন, সমাজকল্যাণ বিভাগ বিশেষায়িত ব্যক্তিদের কল্যাণে স্থানীয় বেসরকারি সংস্থার সহায়তায় ব্লক স্তরের আইসিডিএস প্রকল্পে ইউডিআইডি নিবন্ধকরণের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকতা ইত্যাদি সম্পন্ন করবে। আজকের অনুষ্ঠানে কানপুরের কৃত্রিম অঙ্গ উৎপাদন সংস্থা কর্পোরেশন সহযোগিতায় সহায়ক ডিভাইস আইসিডিএস প্রকল্প এলাকার বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে যন্ত্রপাতি বিতরণ করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে ১২ জন বিশেষ দক্ষ ব্যক্তিকে এইডস এবং সরঞ্জামাদি প্রদান করা হয় এবং বাকিদের মেহেরপুরের সমাজকল্যাণ অফিসে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়। এদিনের অনুষ্ঠানে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সক্ষমের পক্ষে মিঠন রায়-সহ সমাজকল্যাণ বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related news