জুলাই ২০১৮-তে প্রকাশিত এনআরসি তালিকার বাইরে সন্দেহভাজনদের তালিকায় যে ১.০২লক্ষ মানুষের নাম ছিল তার মধ্যে ছিল দক্ষিণ অসমের শিলচর শহরের এই মাড়োযাড়ি ব্যবসাযীর নামও।এরপর ২০১৯ সালের ২৬ জুন বেশ কিছু সংযোজন সহ যে নতুন তালিকা প্রকাশ হয়, সেখানেও অনুপস্থিত ছিল পবনকুমার রাঠির নাম
রাজস্থান থেকে মাড়োয়াড়ি পরিবারটি শিলচর এসে বসবাস শুরু করেছিল দেশ স্বাধীন হওয়ার আগেই। কিন্তু সেই পরিবারেরই ৫৬ বছর বয়সি এক সদস্যকে বিদেশি আখ্যা দিয়ে এনআরসি তালিকাভুক্ত করা হলো না।
সম্প্রতি সর্বভারতীয় সংবাদপত্র দ্য় হিন্দু-তে প্রকাশিত হয়েছে পবনকুমার রাঠির ঘটনা। জুলাই ২০১৮-তে প্রকাশিত এনআরসি তালিকার বাইরে সন্দেহভাজনদের তালিকায় যে ১.০২লক্ষ মানুষের নাম ছিল তার মধ্যে ছিল দক্ষিণ অসমের শিলচর শহরের এই মাড়োযাড়ি ব্যবসাযীর নামও।এরপর ২০১৯ সালের ২৬ জুন বেশ কিছু সংযোজন সহ যে নতুন তালিকা প্রকাশ হয়, সেখানেও অনুপস্থিত ছিল পবনকুমার রাঠির নাম। যদিও ১৯৪৭ সালের আগেই রাজস্থানের বিকানির জেলা থেকে শিলচরে এসে সেখানকার স্থায়ী বাসিন্দা হযে ওঠে রাঠি পরিবার।
এনআরসি তালিকায় পবনকুমারের নাম না থাকায় তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয় অসম পুলিশের সীমান্ত বিভাগে। কিন্তু বিদেশি নাগরিক হিসাবে তাঁর নামে নথিভুক্ত কোনও কেসের সন্ধানও দিতে পারেনি অসম পুলিশ। সীমান্ত বিভাগ কোনও ব্যক্তির আচরণ দেখে বিদেশি হিসাবে সন্দেহজনক মনে করে কেস দাখিল করার পরেই ফরেনার্স ট্রাইবুনাল সেই ব্যক্তিকে বিদেশি হিসাবে ঘোষণা করতে পারে। সেই অর্থে পবনকুমার রাঠি কোনওভাবেই বিদেশি আখ্যা পেতে পারেন না।
এনআরসি তালিকায় নিজের নাম না দেখে সময় নষ্ট না করে পবনকুমার তাঁর পূর্বপুরুষদের বাসস্থান বিকানির জেলার কালুতে উপস্থিত হন। নিজেকে ভারতীয় প্রমাণ করার জন্য পবনকুমার তাঁর পারিবারিক পরিচয় পত্র যতটা সম্ভব জোগাড় করে সেখানকার গ্রামপঞ্চায়েতের সই সহ শিলচরে ফিরে এসে ৫ জুলাই স্থানীয় এনআরসি অফিসে শুনানিতে হাজির হন। বিকানিরের পঞ্চাযেত সদস্যরাও পবনকুমারের ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করে প্রশ্ন তুলেছেন, কী করে একজন মাড়োয়াড়ি সম্প্রদায়ভুক্ত ব্যক্তিকে বিদেশি হিসাবে চিহ্নিত করা হল!
পবনকুমার রাঠি তাঁর পাসপোর্ট, আঁধার কার্ড সহ সব মিলিয়ে ৪০টি ডকুমেন্ট এনআরসি অফিসে জমা দেন নিজেকে ভারতীয় প্রমাণের জন্য। এনআরসি কর্তৃপক্ষ নিজেদের দায় এড়াতে জানিয়েছে, নিশ্চয়ই কোথাও একটা ভুল হয়েছে। কারণ রাঠি পরিবারের বাকি সব সদস্যের নামই তালিকায় রয়েছে।
এদিকে, এনআরসি কর্তৃপক্ষের তরফে জানা গিয়েছে, রাজস্থানের স্থানীয় প্রশাসন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে রাঠির ডকুমেন্টগুলি যাচাই না করাতেই এই সমস্য়া তৈরি হয়েছে।