১৯৪২ সালে ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনে তাঁর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আন্দোলন চলাকালীন তখনকার বোম্বের গোয়ালিয়া ট্যাঙ্ক ময়দানে কংগ্রেসের পতাকা উত্তোলন করে পরিচিত হন ‘হিরোয়িন অফ ১৯৪২ মুভমেন্ট‘বিশেষণে
১৯০৯ সালের আজকের দিনটিতেই (১৬ জুলাই) পঞ্জাবের কালকায় (বর্তমানে হরিয়ানার অন্তর্গত) এক বর্ধিষ্ণু বাঙালি ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্ম নিয়েছিলেন অরুণা গঙ্গোপাধ্যায়। যদিও কলকাতার গোখেল মেমোরিয়াল স্কুলের এই প্রাক্তন শিক্ষিকাকে গোটা ভারত চেনে অরুণা আসিফ আলি নামেই। দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে অরুণা আসিফ আলির নাম। ১৯৪২ সালে ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনে তাঁর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আন্দোলন চলাকালীন তখনকার বোম্বের গোয়ালিয়া ট্যাঙ্ক ময়দানে কংগ্রেসের পতাকা উত্তোলন করে পরিচিত হন ‘হিরোয়িন অফ ১৯৪২ মুভমেন্ট‘বিশেষণে। ভারত ছাড়ো আন্দোলন চলাকালীন কংগ্রেস নেতৃত্বের বেশিরভাগ সিনিয়র নেতাই ছিলেন কারাগারের অন্তরালে। ফলে নেতৃত্বহীন অবস্থাতেই এগোতে হচ্ছিল স্বাধীনতা সংগ্রামীদের। এই অবস্থার মধ্যেই অরুণা আসিফ আলি কংগ্রেসের পতাকা উত্তোলন করে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিশ্বাস ফিরিয়ে এনে উৎসাহী করে তুলেছিলেন আন্দোলেন যোগদানের জন্য। এই জন্য তাঁকে ‘গ্র্যান্ড ওল্ড লেডি অফ ইন্ডিপেন্ডেন্স’ নামেও ভূষিত করা হয়।
স্বাধীনতা আন্দোলনে সক্রিয় ভাবে যোগদানের পাশাপাশি জাতীয় কংগ্রেসের মাসিক পত্রিকা ‘ইনকিলাব‘-এর সম্পাদক হিসাবেও যথেষ্ট সফল ছিলেন অরুণা আসিফ আলি। নিজের স্বাধীনতাবোধ প্রচুর সংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্যে ‘লিঙ্ক‘ নামে একটি সাময়িক পত্রিকা প্রকাশও শুরু করেছিলেন। পাশাপাশি ‘প্যাট্রিয়ট‘ পত্রিকায় কলামও লিখতেন তিনি। ১৯৩০ সালে লবণ আন্দোলনেও সক্রিয় ভূমিকা ছিল তাঁর। সেবারই প্রথমবারের মতো গ্রেফতার হয়েছিলেন তিনি।
১৯৫৮ সালে এই মহিয়সী মহিলা দিল্লির মেয়র হিসাবে নির্বাচিত হন। ১৯৬৪ সালে তাঁর মুকুটে যুক্ত হয় আন্তর্জাতিক লেনিন শান্তি পুরস্কার। ১৯৯২ সালে পান পদ্মবিভূষণ। ১৯৯৬ সালের ২৯ জুলাই তাঁর মৃত্যুর পর ১৯৯৭ সালে গ্র্যান্ড ওল্ড লেডিকে ভূষিত করা হয় মরণোত্তর ভারত রত্ন সম্মানে।স্বাধীনতা সংগ্রামে তাঁর অবদানকে স্মরণ করে ১৯৯৮ সাল ভারতীয় ডাক ও তার বিভাগ একটি স্ট্যাম্প প্রকাশ করে।