স্ত্রীকে মারধোর করার সময় বাবা প্রতিবাদ করতে বাবাকে খুন করা হয়।
শুক্রবার রাতে চায়নাটাউনে এক মহিলা এবং এক বৃদ্ধের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হওয়াকে কেন্দ্র করে এলাকায় চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। লোহার বালতি দিয়ে আঘাত করে মুখ থেঁতলে দেওয়া হয়েছিল তাঁদের। এমনকি মাথাতেও ছিল ভারী আঘাতের চিহ্ন। দু’জনকেই উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে মহিলাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি করা হয় বৃদ্ধকে। চিকিৎসা চলাকালীন মারা যান তিনিও।
পুলিশ জানিয়েছেন, মৃত দুই ব্যক্তিই ট্যাংরার এই চিনা পরিবারের সদস্য। ওই বৃদ্ধ মহিলার সম্পর্কে শ্বশুর হন। মৃতদের নাম লি হান মিহা (৬০) এবং তাঁর শ্বশুর লি কা সাং।
স্থানীয়বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে খবর, শুক্রবার রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ ট্যাংরার ওই চিনা পরিবারের শ্বশুর এবং পুত্রবধূর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রথম থেকেই পুলিশের সন্দেহ ছিল যে এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন বাড়ির কর্তা লি ওয়ান সাং। তদন্ত শুরু হতেই লি-র বিরুদ্ধে প্রমাণ পায় পুলিশে। এরপর স্ত্রী লি হান মিহা এবং বাবা লি কা সাংকে খুনের অভিযোগে লি ওয়ান সাংকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
প্রতিবেশীদের অভিযোগ, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন মহিলার স্বামী। এ নিয়ে রোজই অশান্তি হতো বাড়িতে। তবে অন্য কোনও কারণে পারিবারিক অশান্তির জেরেও এই খুন হয়ে থাকতে পারে বলে অনুমান পুলিশের। ঘটনাস্থলে এসে পুলিশের প্রথম সন্দেহ হয় লি ওয়ান সাংকেই। এরপর খুনে ব্যবহৃত বালতির গায়ে রক্ত ও আঙুলের ছাপ, মোবাইল টাওয়ার লোকেশন, পাঁচিলের গায়ে হাতের ছাপ এবং এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে পুলিশ। অনুমান করে এ কাণ্ড ঘটিয়েছে লি ওয়ান সাং-ই।
পুলিশ জানিয়েছে, জেরায় নিজের অপরাধ কবুল করেছে অভিযুক্ত। ধৃতের বিরুদ্ধে আইপিসি ৩০২ (খুন), ৩০৭ (খুনের চেষ্টা) ও ৩২৬ (অস্ত্র দিয়ে মারাত্মক আঘাত) ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। খুনের সঠিক কারণ জানতে তদন্তে নেমেছে লালবাজারের হোমিসাইড শাখার গোয়েন্দারা। মৃতদেহ দুটি ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে।