বর্ষার আগমনে রাজ্যবাসীর মুখে হাসি ফুটলেও কুমোরটুলির মৃৎশিল্পীদের মাথা থেকে দুশ্চিন্তার মেঘ যেন কাটছেই না
লাগাতার বর্ষায় কপালে ভাঁজ কুমোরটুলির শিল্পীদের। দু‘মাসেরও কম সময়। বৃষ্টি যদি বেশিদিন চলে সমস্যা হতে পারে !
তিন পুরুষ ধরে প্রতিমা তৈরি করছেন বছর বাহান্নর তরুণ পাল। বৃহস্পতিবার সকালে বললেন, ফসলের জন্য বৃষ্টি দরকার। কিন্তু এই সময়ে এই বৃষ্টিই তো অসুর হয়ে ওঠে আমাদের কাছে। দেশপ্রিয় পার্কে ক’বছর আগে ‘বিশ্বের সর্ববৃহৎ দুর্গা’ তৈরি করে হইচই বাধিয়ে দিয়েছিলেন মিন্টু পাল। এবার গোটা ত্রিশ প্রতিমা করাচ্ছেন। এর মধ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দুটি প্রতিমা ইতিমদ্যে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। বেজিং আর দুবাইয়ের দুটি বরাত তৈরি হচ্ছে। এগুলো পাঠানো হবে বিমানে। বিদেশের এই চারটিই ফাইবার গ্লাসের। প্রথম দুটি আনুমানিক সাড়ে সাত ফুট উচ্চতার। পরের দুটি সাড়ে পাঁচ ফুটের।“
যে রকম বৃষ্টি হচ্ছে বাইরে কিছু করার উপায় নেই। মিন্টুবাবু কুমোরটুলির ওয়ার্কশপের সামনে অস্থায়ী ছাউনি দিয়ে নিয়েছেন। বললেন, “দুটো বড় পুজোর মন্ডপও করতে হবে।“ গতবার সল্ট লেকের এফডি ব্লকে প্রায় ৩০ ফুট বাই ১৮ ফুটের ডায়নোসর করে নজর কেড়েছিলেন। “এবারেও ওখানে বাচ্চাদের জন্য আকর্ষণীয় একটা পরিকল্পনা আছে। এ ছাড়াও বাগবাজারের গৌরীমাতা উদ্যানের মন্ডপও করতে হবে। টানা বৃষ্টি চললে তো সব মাটি!“ পরিস্কার আকাশের আশায় এ ভাবেই দিন গুনছেন নিমাই চন্দ্র পাল, সুন্দর পাল, গৌতম পালরা। বছরের এই দুটো মাসই তো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। “রোদ্দুর না পেলে প্রতিমা শুকোবো কী করে? এর পর আছে ফিনিশিং আর রঙের কাজ!“ হাওয়া অফিসের আগাম বার্তার দিকে তাই নজর ওঁদের।