বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষ্যে ২৭ সেপ্টেম্বর ত্রিপুরা পর্যটন উন্নয়ন নিগমের অধীনে রুম বুকিং-এ ৫০ শতাংশ ছাড়ের ব্যবস্থা রয়েছে
‘অতিথি দেবো ভবঃ’ মানসিকতা নিয়ে ত্রিপুরার পর্যটনকে গোটা বিশ্বের কাছে তুলে ধরার প্রয়াস নিয়েছে রাজ্য সরকার। দৃঢ়তার সাথে এ-কথা বলেন ত্রিপুরার পর্যটনমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায়। তাঁর দাবি, এই লক্ষ্যেই ২৭ সেপ্টেম্বর বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষ্যে গুচ্ছ কর্মসূচি হাতে নিয়েছে ত্রিপুরা পর্যটন উন্নয়ন নিগম৷
এ-বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে পর্যটনমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায় বৃহস্পতিবার মহাকরণে সাংবাদিক বৈঠকে মিলিত হন৷ তিনি বলেন, বিশ্বের পর্যটন মানচিত্রে ত্রিপুরাকে তুলে ধরার জন্য রাজ্য সরকার গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে৷ তিনি বলেন, পর্যটন সারা বিশ্বেই গুরুত্বপূর্ণ শিল্প হিসেবে পরিগণিত৷ অর্থনৈতিক প্রগতি ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে পর্যটন বিশেষ ভূমিকা নিচ্ছে৷ অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা ত্রিপুরার পর্যটন কেন্দ্রগুলিকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে নিগমের বিভিন্ন কর্মসূচির রূপরেখাও তিনি তুলে ধরেন৷ তিনি বলেন, ‘অতিথি দেবো ভবঃ’ — এই মানসিকতা নিয়ে রাজ্য সরকার ত্রিপুরার পর্যটনকে দেশ বিদেশের মানুষের কাছে তুলে ধরার প্রয়াস নিয়েছে৷
এ বছরের বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষ্যে গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচি সম্পর্কে তিনি অবগত করেন৷ তিনি বলেন, মহাত্মা গান্ধীর জন্মসার্ধশতবর্ষে ভারত সরকারের পর্যটন মন্ত্রক যে সব বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে তারই অঙ্গ হিসেবে রাজ্যেও ২-১৩ অক্টোবর ১২ দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে৷ তাতে, ২৭ সেপ্টেম্বর শ্বেতমহলস্থিত পর্যটন দফতরের মূল কার্যালয় থেকে সকাল ৭-টায় রোড শো অনুষ্ঠিত হবে৷ এছাড়া ওইদিন বিকেলে রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে অনুষ্ঠিত হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও সেমিনার৷
ওই দিনই মেলাঘরের সাগরমহল ও উদয়পুরের গোমতী যাত্রীনিবাসেও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও সেমিনারের আয়োজন করা হবে৷ তিনি জানান, এছাড়া ‘পর্যটন পরব’-এর অঙ্গ হিসেবে অনাথ শিশুদের ছবিমুড়ায় ভ্রমণ করানো হবে৷ ‘স্বচ্ছ ভারত অভিযান’ ও ‘একবারের জন্য ব্যবহৃত প্লাস্টিক মুক্ত দেশ’ এই আহ্বানে প্রচার কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে৷ সাথে তিনি যোগ করেন, ‘স্বচ্ছতাই সেবা’ এই কর্মসূচির অঙ্গ হিসেবে ২ অক্টোবর মেলাঘরের রাজঘাটে বিশেষ সাফাই অভিযান অনুষ্ঠিত হবে৷ ৩ অক্টোবর ইকফাই বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হবে সেমিনার৷ বিষয় ‘অতিথি দেবো ভবঃ’৷
তিনি আরও জানান, বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষ্যে ২৭ সেপ্টেম্বর ত্রিপুরা পর্যটন উন্নয়ন নিগমের অধীনে রুম বুকিং-এ ৫০ শতাংশ ছাড়ের ব্যবস্থা রয়েছে৷ ওইদিন নীরমহলে প্রবেশের ক্ষেত্রে কোনও এন্ট্রি ফি লাগবে না৷ ট্যুর অপারেটররাও ওইদিন প্যাকেজ ট্যুর বুকিং-এ ২৫ শতাংশ এবং ২৮-৩০ সেপ্টেম্বর প্যাকেজ ট্যুর বুকিং-এর ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ ছাড় দিচ্ছে৷
তবে এই বুকিং কার্যকরী থাকবে সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর মাসের ভ্রমণের ক্ষেত্রে৷ এছাড়াও বেসরকারি হোটেল মালিকরাও ওইদিন তাদের হোটেলে রুম বুকিং-এ ১০ শতাংশ ছাড় দিচ্ছে বলে পর্যটনমন্ত্রী জানান৷ তিনি বলেন, পর্যটনকে মাধ্যম করে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রেও রাজ্য সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে৷ পর্যটন সহায়ক প্রকল্পে যুবক-যুবতীদের ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়ার সুযোগ রয়েছে৷
তিনি জানান, এক্ষেত্রে ঋণের সুদের ৮ শতাংশ সরকার বহণ করবে৷ এই প্রকল্পের সুযোগ নিতে ১৫৭টি আবেদন জমা পড়েছে৷ এর মধ্যে ৩৩ জনকে ঋণের জন্য স্পনসর করা হয়েছে৷ তিনি বলেন, সরকার রাজ্যের প্রতিটি মহকুমায় পর্যটকদের জন্য থাকা, খাওয়া, যাতায়াত, নিরাপত্তা ইত্যাদির সুবিধা আরও সম্প্রসারণ করার উদ্যোগ নিয়েছে৷ জম্পুই, ঊনকোটি, ডম্বুর, ছবিমুড়া, মাতাবাড়ি, আখাউড়া চেকপোস্ট, নীরমহল ইত্যাদি পর্যটন কেন্দ্রগুলির উন্নয়নে বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে পর্যটন দফতর৷