রাজ্যের সিলেবাস কমিটির চেয়ারম্যান অভীক মজুমদার জানিয়েছেন, এই বিশেষ প্রশিক্ষণে নানা ভাবে হাতের লেখা প্র্যাকটিসের পাশাপাশি ছাত্রদের পাম এক্সারসাইজও করানো হবে।
অনেক সময়েই পড়ার চাপে হাতের লেখার যত্ন নিতে পারেন না অভিভাবকেরা। সবার হাতের লেখার দিকে নজর দেওয়া সম্ভব হয় না শিক্ষকদেরও। ফলে, হাতের লেখার মান খারাপ হচ্ছে পড়ুয়াদের। তাই পঠনপাঠনের সঙ্গে এদিকেও এবার বিশেষ নজর দিতে চলেছে রাজ্য সরকার। শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার পাশাপাশি হাতের লেখার একটি পৃথক অধ্যায়ও প্রাথমিক বিভাগের পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
প্রসঙ্গত, বর্তমানে প্রথম শ্রেণির জন্য তিনটি, তৃতীয় শ্রেণির জন্য সাতটি, এবং চতুর্থ আর পঞ্চম শ্রেণির জন্য আটটি বই দেওয়া হয়। কচি বয়স থেকেই যাতে হাতের লেখায় মুক্ত ঝরে, তাই একপ্রকার হাতেখড়ি থেকেই উদ্যোগ শুরু করছে স্কুলশিক্ষা দফতর। খারাপ হস্তাক্ষরের রোগ সারাতে তাদের দাওয়াই আঙুলের ব্যায়াম। রাজ্যের সিলেবাস কমিটির চেয়ারম্যান অভীক মজুমদার জানিয়েছেন, এই বিশেষ প্রশিক্ষণে নানা ভাবে হাতের লেখা প্র্যাকটিসের পাশাপাশি ছাত্রদের পাম এক্সারসাইজও করানো হবে। তিনি আরও জানান, খারাপ হাতের লেখা অনেক সময়েই পড়ুয়ার নম্বর তোলার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। সেই সমস্যা মেটাতেই এই পদক্ষেপ।
ভালো হাতের লেখা না হওয়ায় পরীক্ষার খাতার নম্বরে তার প্রভাব পড়ে। তাই ছোট থেকেই যদি হস্তাক্ষর উন্নত না করা হয়, তাহলে বড়বেলায় ভুগতে হবে ছাত্রছাত্রীদের। এমনই মত বিশেষজ্ঞদের। তাই সিলেবাস কমিটির পরিকল্পনায় এবার প্রথম এবং দ্বিতীয় শ্রেণীর বাচ্চাদের ক্লাসেই ব্যায়াম শিখিয়ে হাতের লেখার উন্নতি করানোর চেষ্টা করা হবে।
অভীক মজুমদার জানান, “সিলেবাস কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। তাঁদের মতামত নেওয়া হচ্ছে। এর ভিত্তিতে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। কারণ এত বিপুল পরিমাণ ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে এর রূপায়ণ করতে গেলে একটা নির্দিষ্ট রূপরেখা তৈরি করে এগোতে হবে। শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে চলতি বছর সেপ্টেম্বর মাস নাগাদ এটি শুরু হবে। দু-তিন বছরের মধ্যেই বিভিন্ন স্তরে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা হবে।” অন্য কোথাও কি এই পদ্ধতিতে হাতের লেখা উন্নয়নের চেষ্টা হয়েছে? প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “এ দেশে কোথাও হয়েছে বলে শুনিনি। তবে জাপান এবং ব্রিটেনে কোথাও কোথাও এভাবে ছেলেমেয়েদের হাতের লেখার মান উন্নত করার চেষ্টা হয় বলে শুনেছি।”
কোন কোন ব্যায়াম করলে আঙুলের জড়তা কাটবে, তার অনাবিল সঞ্চালনা করা যাবে, তারই শিক্ষা দেবে প্রাথমিক স্কুল। শিক্ষা দফতরের আশা, এই ব্যায়ামেই কাটবে হাতের লেখার সমস্যা। স্বাস্থ্য ও শারীরশিক্ষার বইয়ে ছবি সহ তা দেওয়া হয়েছে। যা যা শেখানো হবে, তার মধ্যে কয়েকটি হল, বাঁ হাতে খাতা ধরে লিখতে হবে। পেন্সিল বা পেনের কাছে মুখ বা মাথা না রেখে একটু দূরে রাখতে হবে। লেখার সময় খুব চাপ না দিয়ে হালকাভাবে লিখতে হবে ইত্যাদি।