পশ্চিমবাংলায় এনআরসি হবে না, আপনারা চিন্তার করবেন না: মুখ্যমন্ত্রী

2 - মিনিট |

বিদ্যাসাগরের দ্বিশত জন্মবর্ষ উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন তিনি , এই প্রথম কোনো মুখ্যমন্ত্রী ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের গ্রামে উপস্থিত হলেন৷ বিদ্যাসাগরের জন্মভিটে ঘুরে দেখে

কে আর সি টাইমস ডেস্ক

মঙ্গলবার পশ্চিম মেদিনীপুরের বীরসিংহ গ্রামে উপস্থিত হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর মমতা বন্দোপাধ্যায় ৷ বিদ্যাসাগরের দ্বিশত জন্মবর্ষ উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন তিনি ৷ এই প্রথম কোনো মুখ্যমন্ত্রী ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের গ্রামে উপস্থিত হলেন৷ বিদ্যাসাগরের জন্মভিটে ঘুরে দেখে,তাঁর প্রতিকৃতিতে মালা দেন, বিদ্যাসাগরের প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়ে থাকা ভগবতী দেবী ও বিদ্যাসাগরের মূর্তিতে মালা দিয়ে সব ঘুরে দেখেন ৷

তারপর বিদ্যালয় চত্বরে আয়োজিত অনুষ্ঠান মঞ্চে সামিল হন ৷ তবে তাঁর আসার আগেই পুরো গ্রামে বহু সংস্কার করা হয়েছে ৷ নতুন রাস্তায় বাতিস্তম্ভ লাগানো হয়েছে , বিদ্যাসাগরের জন্মভিটে সংস্কার, প্রভৃতি হয়েছে ৷ তারপরও মঙ্গলবার অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে ৯৪ টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলন্যাস করেন তিনি৷ যার বরাদ্দ প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি ৷ মঞ্চ থেকে বিভিন্ন শিক্ষাবিদ, অধ্যাপক,শিক্ষককে সংবর্ধনা দেওয়ার পাশপাশি কৃতি ছাত্রছাত্রীদেরও সম্মানিত করা হয়, শেষে বিভিন্ন পরিষেবা বিলি করা হয় মঞ্চ থেকে ৷

এদিন এই প্রশাসনিক সভা মঞ্চ থেকেও নাম না করে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বিজেপির বিরুদ্ধে ৷ বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার বিষয়ে ক্ষোভ উগরে দেন। তিনি বলেন-“বিদ্যাসাগরের জন্মের দুশো বছরে তাঁর মূর্তি স্থাপন করলাম। কারণ বাংলার সংস্কৃতি তাকে ভুলিয়ে দেবার জন্য একদল ধর্মান্ধ উন্মত্ত , যারা বিদ্যাসাগরকে চেনেও না,তারা মূর্তিটা গিয়ে ভেঙে দিলেন। ওটা শুধু একটা মাটির মূর্তি না।

ওটা একটা সভ্যতা-সংস্কৃতি। মূর্তি ভেঙ্গে তাকে নষ্ট করা যায় না। আমরা বিদ্যাসাগরের মূর্তি  সংস্কার করে,নতুন করে তৈরি করছি। ভগবতী দেবীর নামে তৈরি স্কুলটাকেও হেরিটেজ করার ব্যবস্থা করছি। স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলি বিদ্যাসাগরের বিষয়ে সেমিনার করবেন। প্রতিটি কলেজকে এজন্য আমরা দু লক্ষ টাকা করে দেব। স্কুলগুলোকে ও যতটা সম্ভব সাহায্য করবো।”আমরা কাউকে অশ্রদ্ধা করিনা।

গান্ধীজীতো গুজরাটে জন্মেছিলেন। গান্ধীজী বাংলার যেখানে যেখানে এসেছিলেন  সেখানে  শ্রদ্ধা জানিয়েছি। বিরসা মুন্ডা থেকে নেতাজি,বিদ্যাসাগর এই সমস্ত মনীষীরা শুধু বাংলা নয় সারা ভারতবর্ষকে পথ দেখিয়েছিলেন। এই বাংলার মাটি কে ভয় দেখানো যায় না। এই বাংলার ভাষা সহ অন্য ভাষা নিয়েও চলব । নিজের নাম যেমন ভুলবেন না এই রাজ্যের মাটিকেও তেমন ভুলবেন না৷”

এদিন নাম না করে বিজেপির উদ্দেশ্যে এনআরসি প্রসঙ্গে তিনি বলেন -“কেউ কেউ ভয় দেখিয়ে বলছেন ১৯৭১ সালের সার্টিফিকেট চাই,তবে নাকি এনআরসি হবে। কোনো এনআরসি হবে না । এসব নিয়ে কেউ চিন্তা করবেন না। ১০ বছর অন্তর সেন্সাস হয়। সমস্ত পরিসংখ্যান রুটিনমাফিক দেখা হয়। আপনাদের চিন্তা করার কোনো কারণ নেই। যারা বাংলায় আছেন দীর্ঘদিন ধরে ,বাংলা তাদের ঘর তাদের কেউ তাড়িয়ে দিতে পারবে না।

আমি ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগরের গ্রামের পূণ্য মাটিতে দাঁড়িয়ে বলে যাচ্ছি কোন এনআরসি বাংলায় হবে না। সুস্থ্য সুন্দর থাকুন। অনেক কষ্ট করে দেশ স্বাধীন হয়েছে। নতুন করে চক্রান্ত কুৎসা হচ্ছে।”এদের বিশ্বাস করবেন না। ব্রাহ্মণ ক্ষত্রিয় শূদ্র  মুসলমান সব আমরা এক। এক ফুলে একটা মালা গাঁথা হয় না অনেক ফুল লাগে। অনেক ফুল থাকা মালাকে মানুষ পছন্দ করে৷”

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related news