এনআরসি-র চূড়ান্ত তালিকার ভিত্তিতে অসমের মোট বৈধ নাগরিকের সংখ্যা ৩,১১,২১,০০৪ জন
বহু প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে প্রকাশ পেল সংযোজিত জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি)-র চূড়ান্ত তালিকা। চূড়ান্ত তালিকার বাইরে ১৯ লক্ষেরও বেশী মানুষ। প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আজ শনিবার ৩১ আগস্ট পূর্ব নির্ধারিত সময় সকাল দশটায় এই তালিকা প্রকাশ করেছেন রাজ্য এনআরসি কর্তৃপক্ষ। রাজ্যের প্রতিটি জেলার সব এনআরসি সেবাকেন্দ্রে প্রকাশিত হবে তালিকাটি।
২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর মধ্যরাতে এনআরসি-র প্রথম খসড়া থেকে বাদ পড়েছিল ৪০লক্ষ মানুষের নাম। রাতারাতি ভিটে মাটি ছাড়া হয় এক বিরাট জনপদ। পরবর্তীতে চূড়ান্ত তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করতে প্রামাণিক ওজর-আপত্তি ফর্মে তথ্য-সহ আবেদন জানিয়েছিলেন ৩৬,২৬,৬৩০ জন। এ-থেকে ১৯ লক্ষ ৬,৬৫৭ জনের নাম বাদ পড়েছে সংযোজিত চূড়ান্ত তালিকা থেকে। যাঁদের নাম নেই তাঁরা আগামী ১২০ দিনের মধ্যে প্রামাণিক তথ্যাদি সংশ্লিষ্ট এলাকার বিদেশি ট্রাইবুনালে দেখিয়ে নিজেকে ভারতীয় নাগরিক বলে প্রতিষ্ঠিত করার সুযোগ পাবেন।
এদিকে প্রশ্ন উঠেছে এনআরসি-র প্রথম খসড়া-ছুট ৪০,০৭,৭০৭ জনের মধ্য আবেদন জানিয়েছিলেন ৩৬,২৬,৬৩০ জন। বাকি ৩,৮১,০০৭ জন কোথায় গেলেন? কেন এরা পুনরায় আবেদন জানাননি?
চূড়ান্ত তালিকায় কারা, কীভাবে নাম দেখবেন?
প্রথমত, ২০১৮ সালের ৩০ জুলাই প্ৰকাশিত এনআরসি-র সম্পূৰ্ণ খসড়ায় যাঁদের নাম অন্তৰ্ভুক্ত হয়নি তাঁরা, নতুবা ২০১৯ সালের ২৬ জুন প্ৰকাশিত অতিরিক্ত সম্পূর্ণ খসড়া-ছুটরা, অথবা সম্পূৰ্ণ এনআরসিতে অন্তৰ্ভুক্ত হয়েছেন, যে-সব ব্যক্তির বিরুদ্ধে ওজর-আপত্তি দাখিল করা হয়েছিল তাঁরা তাঁদের নিৰ্ধারিত এনএসকে / সার্কল অফিস / জেলাশাসকের কার্যালয়ে চূড়ান্ত সংযোজনী এনআরসি তালিকায় তাঁদের অবস্থিতি দেখতে পারবেন।
বহু প্রতীক্ষিত চূড়ান্ত তালিকায় নাম নেই দক্ষিণ অভয়াপুরির এআইইউডিএফ বিধায়ক অনন্তকুমার মালোর। আজ ৩১ আগস্ট প্রকাশিত চূড়ান্ত এনআরসি তালিকায় নিজের নাম না দেখে অবশ্য দুশ্চিন্তাগ্রস্ত নন বিধায়ক। তিনি বলেন, কেন নাম উঠেনি আবেদন করে তা যাচাই করে দেখা হবে। এটা যে অযথা হেনস্থা ছাড়া আর কিছুই নয়, তা-ও বলেছেন অনন্তকুমার। বলেন, এভাবে লক্ষ লক্ষ মানুষকে হয়রান করা হচ্ছে। তবে এনআরসি নবায়ন প্রক্রিয়ায় যে গরমিল হচ্ছে সে ব্যাপারে আগে থেকেই সোচ্চার ছিলেন তিনি, জানান বিধায়ক।
২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর মধ্যরাতে এনআরসি-র প্ৰথম খসড়া প্রকাশিত হওয়ার পর ২০১৮ সালের ৩১ জুলাই প্ৰকাশিত হয় দ্বিতীয় তথা চূড়ান্ত খসড়া। ওই খসড়ায় ২,৮৯,৮৩,৬৭৭ জন নাগরিকের নাম অন্তৰ্ভুক্ত হলেও বাদ পড়েছিল ৪০,০৭,৭০৭ জনের নাম। পরবর্তীতে চূড়ান্ত তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করতে প্রামাণিক ওজর-আপত্তি ফর্মে তথ্য-সহ আবেদন জানিয়েছিলেন ৩৬,২৬,৬৩০ জন। এ-থেকে ১৯ লক্ষ ৬,৬৫৭ জনের নাম বাদ পড়েছে সংযোজিত চূড়ান্ত তালিকা থেকে। তবে যাঁরা আজকের প্রকাশিত তালিকায় সন্তুষ্ট নন, অর্থাৎ যে-সব ভারতীয় নাগরিক তাঁদের নাম পড়েছে বলে বলে মনে করেন, তাঁরা আগামী ১২০ দিনের মধ্যে প্রামাণিক তথ্যাদি সংশ্লিষ্ট এলাকার বিদেশি ট্রাইবুনালে প্রদর্শন করে নিজেকে ভারতীয় নাগরিক বলে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন।