সরকারি তথ্য অনুযায়ী পাথারকান্দি সার্কলের অধীনে মোট ১৭টি এনএসকে অর্থাৎ সেবাকেন্দ্র রয়েছে, আগামী ৩১ আগস্ট এই সব সেবাকেন্দ্রে তালিকা প্রকাশ হবে
আগামী ৩১ আগস্ট শনিবার জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি)-র চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হবে। এনআরসি-কে কেন্দ্র করে যে কোনও ধরনের অপ্রীতিকর বা চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে পুরোপুরি প্রস্তুত করিমগঞ্জ জেলা প্রশাসন। খোলা হয়েছে বিশেষ কন্ট্রোল রুমও। রাজ্য প্রশাসনের নির্দেশে জেলার অন্যান্য এলাকার মতো পাথারকান্দিতেও কড়া নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে। ব্যবস্থা করা হয়েছে কড়া নিরাপত্তারও।
গত বছরের ৩১ মার্চ এনআরসি-র অতিরিক্ত খসড়া তালিকা প্রকাশের পর এবার প্রকাশিত হতে চলেছে বহু প্রতীক্ষিত চূড়ান্ত তালিকা। অতিরিক্ত খসড়া থেকে রাজ্যের প্রায় চল্লিশ লক্ষ ভারতীয় নাগরিকের নাম বাদ পড়ায় চূড়ান্ত তালিকাকে কেন্দ্র করে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। ইতিমধ্যে কয়েকজন ভয়ে আত্মহত্যাও করেছেন। আতঙ্কের রাশ টানতে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছে না রাজ্য প্রশাসন।
বিষয় সম্পর্কে করিমগঞ্জ জেলা পুলিশের সদর ডিএসপি সুধন্য শুক্লবৈদ্যের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকারি তথ্য অনুযায়ী পাথারকান্দি সার্কলের অধীনে মোট ১৭টি এনএসকে অর্থাৎ সেবাকেন্দ্র রয়েছে, আগামী ৩১ আগস্ট এই সব সেবাকেন্দ্রে তালিকা প্রকাশ হবে। এগুলোতে বাড়তি কোনও নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে কিনা জানতে চাইলে ডিএসপি জানান, এর আগে খসড়া তালিকা প্রকাশের সময় যেভাবে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছিল এ-বার তা আরও মজবুত করা হয়েছে। পাথারকান্দির দুই বিএসএফ রেজিমেন্ট, সিআরপিএফ-সহ অতিরিক্ত পুলিশ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এনআরসি-র চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় নানা ধরনের গুজব ও আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে, এ-সম্পর্কে পুলিশের পদস্থ অফিসার শুক্লবৈদ্য বলেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষে বিশেষ পর্যবেক্ষণ সেল খোলা হয়েছে। এনআরসি সম্পর্কিত কোনও গুজব ও আতঙ্ক সংক্রান্ত কোনও পোস্ট নজরে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
তিনি জানান, পুলিশ বিভাগের পক্ষ থেকে পাথারকান্দি সার্কলের অধীনে ১৭টি এনএসকের মধ্যে অতি স্পর্শকাতর কোনও সেবাকেন্দ্র না থাকলেও সামান্য স্পর্শকাতর এলাকা বলে চিহ্নিত করা হয়েছে আসিমগঞ্জকে। তবে চিন্তার কোনও কারণ নেই। আসিমগঞ্জ এনএসকে-তে পুলিশ ও আধাসেনার টহলদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তাঁর আহ্বান, এনআরসি নিয়ে কাউকে অযথা আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। প্রকৃত ভারতীয়দের নাম কোনও ভাবেই কর্তন হবে না। তবে কোনও কারণে যদি কারও নাম বাদ পড়ে, তা-হলে ট্রাইবুনালে ওজর-আপত্তি জানাতে সংশ্লিষ্ট নাগরিক হাতে পাবেন ১২০ দিন। এই সময়কালে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে ট্রাইবুনালে এ সংক্রান্ত উপযুক্ত তথ্য প্রমাণ দাখিল করে নিজেকে ভারতীয় নাগরিক বলে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে, জানান করিমগঞ্জের সদর ডিএসপি।