ইউএপিএ আইনে পরিণত হলে সন্দেহের বশে যে কোনও ব্যক্তিকে সন্ত্রাসবাদী তকমা দিয়ে গ্রেফতার করা যাবে
বৃহস্পতিবার লোকসভায় পাশ হওয়ার পর এবার রাজ্যসভাতেও পাশ হয়ে গেল আনল’ফুল অ্যাক্টিভিটিজ (প্রিভেনশন) অ্যাক্ট সংশোধনী বিল, ২০১৯। বিরোধীদের প্রবল অসম্মতির মধ্যেই ভোটাভুটির পর সংসদের উচ্চকক্ষে শুক্রবার পাশ হয়ে যায় বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইন সংশোধনী বিল (ইউএপিএ), ২০১৯। রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ স্বাক্ষর করলেই তা আইনে পরিণত হবে। ইউএপিএ আইনে পরিণত হলে সন্দেহের বশে যে কোনও ব্যক্তিকে সন্ত্রাসবাদী তকমা দিয়ে গ্রেফতার করা যাবে।
এদিন রাজ্যসভায় ভোটাভুটি চলাকালীন সংশোধনী বিলটির পক্ষে ভোট দেন ১৪৭ সাংসদ। মাত্র ৪২ জন সাংসদ ভোট দেন বিপক্ষে। বিলটি নিয়ে আলোচনা চলাকালীন রাজ্যসভায় কংগ্রেস সাংসদ পি চিদম্বরম বলেন, “২০০৮ সালে আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ার সময় আমি বলেছিলাম, সন্ত্রাস দমন তিনটি ভিত্তিতে হতে পারে- এনআইএ, এনএটিজিআরআইডি (ন্যাটগ্রিড) এবং এনসিটিসি। আজ আমাদের কেবল একটি ভিত্তি রয়েছে, ন্যাটগ্রিড এবং এনসিটিসি সম্পর্কে আপনারা কী করেছেন? এ দু’টি কেন প্রান্তে এসে ঠেকেছে?”
ইউএপিএ বিল নিয়ে ভোটাভুটির সময় রাজ্যসভায় কংগ্রেস সাংসদ দিগ্বিজয় সিং বলেন, “আমরা ওদের (বিজেপি) উদ্দেশ্য সম্পর্কে সন্দেহ করি। কংগ্রেস কখনওই সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে আপোস করেনি। এ কারণেই আমরা এই আইন নিয়ে এসেছি। বিজেপিই সন্ত্রাসের সঙ্গে আপোস করেছে, একবার রুবাইয়া সঈদজির মুক্তির সময় এবং দ্বিতীয়বার মাসুদ আজহারকে ছেড়ে দিয়ে।” পালটা তোপ দেগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “সন্ত্রাসের কোনও ধর্ম হয় না। সন্ত্রাসবাদীরা মানবতা বিরোধী। তাই তাদের বিরুদ্ধে কড়া আইনে সমর্থন জানানো উচিত আমাদের সকলের।”
এর আগে সংখ্যা গরিষ্ঠতার জোরে লোকসভায় আগেই বিলটি পাশ করিয়েছিল নরেন্দ্র মোদি সরকার। কিন্তু শুরু থেকেই এতে আপত্তি তুলেছিলেন বিরোধীরা। এই বিল পাশ হলে সরকার বিরোধী যে কারও গায়ে সন্ত্রাসবাদী তকমা সেঁটে দেওয়া হবে এবং এই আইনের যথেচ্ছ অপব্যবহার হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন বিরোধী নেতারা। কিন্তু প্রবল আপত্তির মধ্যেও এদিন রাজ্যসভাতেও পাশ হয়ে গেল ইউএপিএ সংশোধনী বিল, ২০১৯।