বিক্ষিপ্ত কয়েকটি ঘটনা ছাড়া রাজ্যে তিন বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন শান্তিপূর্ণই।
বিক্ষিপ্ত কয়েকটি ঘটনা ছাড়া রাজ্যে তিন বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন শান্তিপূর্ণই। করিমপুরে বিজেপি প্রার্থী জয়প্রকাশ মজুমদার আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ছাড়া আর কোথাও তেমন কোনও বড় গন্ডগোলের খবর নেই বলে জানালেন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাব। তিনি জানান, বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ৭৫ দশমিক ৩৪ শতাংশ । সন্ধ্যে ছটা পর্যন্ত ভোট নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিন কালিয়াগঞ্জ-এ ভোট পড়েছে ৭৭ দশমিক ১৭ শতাংশ । করিমপুরে ৮১ দশমিক ২৩ শতাংশ । খড়গপুর ৬৭ দশমিক ৬২ শতাংশ মানুষ ভোট দিয়েছেন । কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তার মধ্যেই এদিন করিমপুর, কালিয়াগঞ্জ এবং খড়্গপুরে ভোটগ্র হণ হয়। তার মধ্যেই সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ করিমপুরের পিপুলখোলার গিয়াঘাট ইসলামপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুথে যান জয়প্রকাশ । সেখানে তাঁর উপর চড়াও হয় একদল দুষ্কৃতী । পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর সামনেই এলোপাথাড়ি লাথি, কিল, চড় মারা হয় তাঁকে । এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। তৃণমূলের লোকজনই জয়প্রকাশের উপর হামলা করেছে বলে দাবি বিজেপির । বিষয়টি নিয়ে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগও জানিয়েছে তারা । যদিও তৃণমূলের নেতারা এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন । জয়প্রকাশ মজুমদার ‘নাটক’ করছেন বলে পাল্টা দাবি করেছেন করিমপুরের তৃণমূল প্রার্থী বিমলেন্দু সিংহ রায় । করিমপুরের মত অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটলেও, নির্বাচন চলাকালীন সাংসদ তথা বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের থাকা নিয়ে রাজনৈতিক তরজা চরমে ওঠে খড়্গপুরে। বেআইনি ভাবে দিলীপ ঘোষ খড়্গপুরে রয়েছেন বলে অভিযোগ তোলেন তৃণমূল প্রার্থী প্রদীপ সরকার। তা নিয়ে নির্বাচন কমিশনে নালিশ জানায় কংগ্রেসও। যদিও দিলীপ ঘোষের দাবি, মহকুমাশাসকের অনুমতি নিয়েই খড়্গপুরে রয়েছেন তিনি । কিন্তু তাঁর দাবি খারিজ করে মহকুমাশাসকের দফতর। বলা হয়, দিলীপ ঘোষ চিঠি দিয়েছিলেন বটে । কিন্তু তাঁকে খড়্গপুরে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়নি। গোটা ঘটনায় জেলা প্রশাসনের কাছে রিপোর্ট তলব করেছে এ রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর।
অন্যদিকে, খড়্গপুর কলেজ চত্বরে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন থাকা সত্ত্বেও সেখানে তৃণমূল বুথ জ্যাম করেছে বলে অভিযোগ তোলে বিজেপি। খড়্গপুরেই একটি বুথে ভোটকক্ষে আয়না লাগিয়ে কে কোন বোতাম টিপছেন, তাতে নজরদারি চালানোর অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে । যদিও পরে দেখা যায় আয়না নয়, দেওয়ালে কাঁচ লাগানো থাকায় কে কোন বোতাম টিপছেন তা দেখা যাচ্ছিল । এরপর ওই দেওয়াল চাদর দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। এই ঘটনায় জেলা নির্বাচনী আধিকারিকের কাছে রিপোর্ট তলব করেছে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর । কালিয়াগঞ্জে আবার ভোটকক্ষে ঢুকে স্ত্রীকে কোন বোতাম টিপতে হবে দেখিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিজেপি প্রার্থী কমলচন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে। স্ত্রী ভোট দিতে ঢুকলে ইভিএম যন্ত্রের কাছে চলে আসেন কমলচন্দ্র সরকার । কোন বোতাম টিপতে হবে দেখিয়ে দেন। এই নিয়ে তৃণমূল তীব্র প্রতিবাদ করলেও কমলচন্দ্র সরকার জানান, বরাবর স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে এই ভাবেই ভোট দিয়েছেন তিনি । এই ঘটনায় ওই বুথের প্রিসাইডিং অফিসারকে সরিয়ে দেয় নির্বাচন কমিশন।