যোগ্য জবাব দিলেন ইস্টবেঙ্গলের দুজন বাতিল খেলোয়াড় উবেইদ ও সুহের
এবার শতবর্ষে পা দিয়েছে মশাল ব্রিগেড। সমর্থকরাও স্বপ্ন দেখছিল এবার সাফল্যের সরণিতেই হাঁটবে ইস্টবেঙ্গল। তাঁরা ধরেই নিয়েছিলেন মরশুমের প্রথম ট্রফি ডুরান্ড কাপে তাঁদের ক্লাব ফাইনালে খেলবে এবং তাঁদের প্রতিপক্ষ হবে চিরশত্রু মোহনবাগান। কিন্তু মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল ডুরান্ড ফাইনালের স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে কিন্তু বুধবার প্রথম সেমিফাইনালে। ট্রাইবেকারে গোকুলামের কাছে হেরে ডুরান্ড থেকে ছিটকে গেল লাল-হলুদ।
খেলার শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে থাকে ইস্টবেঙ্গল। লাল-হলুদ ফরওয়ার্ড লাইনের একাধিক আক্রমণ প্রতিহত হয়ে যায় গোকুলাম গোল রক্ষক তথা ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তনী উবেইদের হাতে। কিন্তু ১৮ মিনিটের মাথায় প্রথমবার পর্যুদস্ত হতে হয়ে দীর্ঘদেহী উবেইদকে। মাঝমাঠ থেকে একটা থ্রো বল একেবারে ডানদিকে ধরে বিদ্যাসাগর সিং। সেন্টার রাখে বক্সে। কিন্তু সেই বল উবেইদের গায়ে লেগে বক্সেই রয়ে যায়। গোকুলাম ডিফেন্ডার ক্লিয়ার করলে ডি বক্সের গজ দশেক দূরে বাঁ পায়ে রিসিভ করেই চকিতে ডান পায়ের ইনস্টেপ রাখেন সামাদ আলি মল্লিক। দ্বিতীয় পোস্টের কোণ দিয়ে বল জড়িয়ে যায় জালে। অবশেষে জেতা ম্যাচ হাত থেকে বেরিয়ে যায় ইস্টবেঙ্গলের।
অপর সেমিফাইনালে রিয়াল কাশ্মীরকে ৩-১ গোলে হারিয়ে ডুরান্ড ফাইনালে উঠেছে শতাব্দী প্রাচীন মোহনবাগান। সুপার সাব সুহেরের জোড়া গোল ছাড়া মোহনবাগানের হয়ে অপর গোলটি করেন সালভা চামোরো৷ দ্বিতীয়ার্ধের সংযোজিত সময়ে রিয়াল কাশ্মীরকে সমতায় ফেরান ক্রিজো৷ পরে এক্সট্রা টাইমে যুবভারতীর গ্যালারিকে সম্মোহিত করেন সুহের৷ ম্যাচের ৪২ মিনিটে গুরজিন্দরের পাস থেকে অনবদ্য নিয়ন্ত্রণে রিয়াল কাশ্মীরের জালে বল জড়ান চামোরো৷ নির্ধারিত সময়ের একেবারে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লিড বজায় রাখে মোহনবাগান৷ তবে চার মিনিটের ইনজুরি টাইমে হিসাবটা গোলমাল হয়ে যায় তাদের৷ ৯০+৩ মিনিটে ম্যাচে সমতা সূচক গোল করেন ক্রিজো৷
এক্সট্রা টাইমের শুরুতেই অবশ্য পুনরায় লিড নিয়ে নেয় মোহনবাগান৷ ৯২ মিনিটে ম্যাচে নিজের প্রথম ও দলের হয়ে দ্বিতীয় গোল করেন ৬৮ মিনিটে জেসুরাজের পরিবর্ত হিসাবে মাঠে নামা সুহের৷ তাঁকে গোলের পাস বাড়ান ফ্রান গঞ্জালেজ৷ ১১২ মিনিটে গঞ্জালেজের পাস থেকেই মোহনবাগানের হয়ে তৃতীয় গোল সুহেরের৷
ফাইনালে ডার্বি হচ্ছে না, মুখোমখি হবে মোহনবাগান ও গোকুলাম। ডার্বি না হওয়াতে হতাশ দুই দলের সমর্থকরা। নাম না করে এক লাল-হলুদ সমর্থকের বক্তব্য, কলকাতা লিগের ডার্বির আগে মোহনবাগানকে হারানোর সুযোগ ছিল। কিন্তু সেই আশা মিটল না।’ অন্য দিকে, এক মোহন সমর্থকের মন্তব্য, ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে ডুরান্ড কাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন এবার পূরণ হল না। ওদের হারিয়ে কাপ জেতার আনন্দই আলাদা।
কলকাতা লিগের খেলা দেখার পরে ফুটবল বোদ্ধারা মোহনবাগানকে সেভাবে নম্বর দিতে চাননি। তাদের বক্তব্য ছিল, আনফিট
মোহনবাগান বড় মাঠে সেভাবে মেলে ধরতে পারবে না। ছোট মাঠে এই বাগানের ফুটবলাররা সেভাবে মেলে ধরতে না পারলেও
যুবভারতীতে ভালো ফুটবল খেলেছে কিবু ভিকুনার ছেলেরা। তাই ডুরান্ড কাপে বাংলার সম্মান রক্ষার দায়িত্ব এখন মোহন বাগানের
হাতে। এখন দেখার বিষয় কিবুর ছেলেরা চ্যাম্পিয়ন হতে পারে কিনা।