ডার্বিতে চমক দেন দুই প্রধানের কোচই। আলেজান্দ্রো যেমন গোলের মধ্যে থাকা কোলাডোকে প্রথম একাদশে রাখেননি, ঠিক তেমনই কিবু ভিকুনা তো সালভা চামরোকে মাঠেই নামালেন না
রবিবার মরশুমের প্রথম ডার্বি শেষ হল গোলশূন্য ভাবে। ডার্বি জয়ের হ্যাটট্রিক হল না আলেজান্দ্রোর। খেলা শুরু হওয়ার আগে দু’দলের স্টার্টিং লাইন দেখে চমকে গিয়েছিলেন দু’দলের সমর্থকরাই। একদিকে ইস্টবেঙ্গল যেমন প্রথম একাদশে খেলায়নি স্যান্টোস কোলাডোকে, অন্যদিকে বাগানের প্রথম একাদশে ছিলেন না সালভাদোর মার্টিনেজ পেরেজও। কিন্তু তারপরেও বেশ কিছু সহজ সুযোগ পেলেন দু’পক্ষই। যদিও দেখা মিলল না গোলের।
এ দিন নির্দিষ্ট পরিকল্পনা করেই খেলা শুরু করেছিল দুই দল। একদিকে যেমন বাগানের প্রধান অস্ত্র বেইতিয়াকে আটকাতে অভিজ্ঞ কাসিম আইদারাকে নামিয়েছিলেন আলেজান্দ্রো মেনেন্ডেজ। অন্যদিকে তেমনই ইস্টবেঙ্গলের মাঝমাঠ ও ফরোয়ার্ডদের মধ্যে যাতে তালমেল না হয়, তার জন্য মাঝমাঠে লোক বাড়িয়েছিলেন কিবু ভিকুনা। প্রথমার্ধে দুই কোচই তাঁদের পরিকল্পনায় অনেকটাই সফল বলা যায়। বেতিয়ার স্কিল, মার্তি ক্রেসপির অসাধারণ ডিফেন্স। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ। উভয় পক্ষের মৃদু হাতাহাতি। সব ছিল এদিনের ম্যাচে। শুধু গোলটা ছাড়া।
তবে খেলার ধরণে তফাৎ দেখা গেল দু’দলের। একদিকে যেমন মোহনবাগান নিজেদের মধ্যে ছোট ছোট পাসে বল খেলে থ্রু বল ধরে আক্রমণ করার চেষ্টা করছিল, অন্যদিকে ইস্টবেঙ্গলের আক্রমণ ছিল দু’প্রান্ত ধরে। এ দিন নিজের পুরনো দলের বিরুদ্ধে খেলতে নেমেছিলেন পিন্টু মাহাতা, অভিষেক আম্বেকর ও চুলোভা। তিনজনকেই কিছুটা চাপে দেখালো।
ম্যাচের ১৬ মিনিটেই সুযোগ পায় মোহনবাগান। বেতিয়ার সেন্টার থেকে ফার্ন গঞ্জালেজের হেড একটুর জন্য বাইরে চলে যায়। ২২ মিনিটে রোনাল্ডো অলিভিয়েরা ডানদিকে পিন্টু মাহাতোকে দিলে, পিন্টু সেই বল সেন্টার করলেও অলিভিয়েরা মিস করেন। ৪৩ মিনিটে ভিপি সুহের রালতেকে ওয়ান টু ওয়ান পেয়ে হাতে মারেন।
৭০ মিনিটের পর আলেজান্দ্রো নামান তাঁর দুই তুরুপের তাস স্যান্টোস কোলাডো ও বিদ্যাসাগর সিংকে। মাঝেমধ্যেই মাঠের মধ্যে মাথা গরম করে ফেলছিলেন দু’দলের ফুটবলাররা। চোরাগোপ্তা ট্যাকল চলছিল। স্প্যানিশ তিকিতাকা দেখা গেলেও ফাইনাল থার্ডে এসে খেই হারিয়ে যাচ্ছিল দু’দলের আক্রমণ। শেষ দিকে বেশ কয়েকটি সুযোগ পেলেও তা কাজে লাগাতে পারেননি বাগান ফুটবলাররা।
তবে এদিন ডার্বিতে চমক দেন দুই প্রধানের কোচই। আলেজান্দ্রো যেমন গোলের মধ্যে থাকা কোলাডোকে প্রথম একাদশে রাখেননি, ঠিক তেমনই কিবু ভিকুনা তো সালভা চামরোকে মাঠেই নামালেন না। লাল-হলুদ কোচ তাও ৭০ মিনিটের পর কলকাতা লিগে গোলের মধ্যে থাকা দুই ফুটবলার কোলাডো ও বিদ্যাসাগর সিংকে নামালেন, মার্কোস ও রোনাল্ডোর জায়গায়। কিন্তু কিবু ভিকুনা রোমারিও জেসুরাজ, পিএম ব্রিটোদের নামলেও, তিন বিদেশি মোরান্তে, গঞ্জালেজ ও বেতিয়াকে মাঠে রেখে দিলেন পুরো ৯০ মিনিট।
অবশেষে হতাশ হয়েই ফিরতে হল দু’দলের সমর্থকদের। গোলশূন্য ডার্বি উপভোগ করল যুবভারতীর মাঠ।