কমনওয়েলথ টিটির ব্যক্তিগত বিভাগে প্রথম মহিলা হিসাবে সোনা জিতলেন ঐহিকা
ইন্দুপুরি, মান্তু ঘোষ, মৌমা ঘোষ বা পৌলমী ঘটকরা যা করে দেখাতে পারেননি সেটাই করে দেখালেন নৈহাটির ২২ বছরের তরুণী ঐহিকা মুখোপাধ্যায়। প্রাক্তন সেনা কর্মী গৌতম মুখোপাধ্যায় ও গৃহবধু সোমা মুখোপাধ্যায়ের এই কন্যার হাত ধরেই কমনওয়েলথ টেবিল টেনিসে ইতিহাস রচিত হল ভারতের।এর আগে এই টুর্নামেন্টের পুরুষদের ব্যক্তিগত বিভাগে ভারতের ছেলেরা সোনা জিতেলও দেশেরপ্রথম মহিলা হিসাবে কটকে আয়োজিত কমনওয়েলথ টেবিল টেনিসে ব্যক্তিগত ইভেন্টে সোনা জিতলেন ঐহিকা।
অবশ্য সদ্যসমাপ্ত কমনওেয়লথ টেবিল টেনিসে ঐহিকার সাফল্য শুধুমাত্র মহিলাদের ব্যক্তিগত বিভাগে সোনা অর্জনেই শেষ নয়।এবারের প্রতিযোগিতায় দলগত বিভাগে সোনাজয়ী ভারতীয় দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন ঐহিকা।জোড়া সোনার পাশাপাশি টুর্নামেন্টের ডাবলস ও মিক্সড ডাবলসেও একটি করে ব্রোঞ্জ নিজের ক্যাবিনেটে পুরেছেন বাংলার এই প্যাডলার।
ঘরের মাঠে প্রতিযোগিতা। তাই কিছুটা অ্যাডভান্টেজ নিয়েই টু্র্নামেন্ট শুরু করেছিলেন ভারতীয় প্যাডলাররা। কিন্তু সিঙ্গাপুর, ইংল্যান্ড, নাইজেরিয়ার মতো টেবিল টেনিসে শক্তিধর দেশগুলির প্যাডলারদের পিছনে ফেলে প্রতিটা বিভাগে এতটা প্রাধান্য বজায় রেখে শীর্ষে থেকেই ভারত যে টুর্নামেন্ট শেষ করবে সেটা সম্ভবত আশা করেননি জাতীয় টিটির কর্তারাও। সোমবার যে চারটি বিভাগের ফাইনালেই (পুরুষ ও মহিলাদের সিঙ্গলস এবং ডাবলস)প্রতিদ্বন্দ্বিতা হল ভারতীয়দের মধ্যেই। মনে হচ্ছিল, আন্তর্জাতিক নয়, কোনও জাতীয় টুর্নামেন্ট হচ্ছে।সব মিলিয়ে কমনওয়েলথ টিটির সবক’টি (সাতটি) সোনাই জিতল ভারত। পাশপাশি ভারতের ঘরে এসেছে পঁাচটি রুপো ও তিনটি ব্রোঞ্জ।
১২ দেশের এই প্রতিযোগিতায় পুরুষদের ফাইনালে হরমিত দেশাই দারুণ লড়াইয়ের পর জি সত্যেনকে পরাজিত করেন ৪-৩ ব্যবধানে। এরপর মহিলাদের ফাইনালে ঐহিকা মুখোপাধ্যায় একপেশে লড়াইয়ে হারান মধুরিকা পাটকরকে ৪-০-তে (১১-৬, ১১-৪, ১১-৯, ১৯-১৭)। সেমিফাইনালে ঐহিকা হারিয়েছিলেন ইংল্যান্ডের হো টিন টিনকে।
জাতীয় সিনিয়র টিটিতে পরপর দু-বার তৃতীয় হওয়া ঐহিকা এর আগে জুনিয়র পর্যায়ে পোল্যান্ড ও চেক প্রজাতন্ত্রে অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্টে সোনা জিতেছিলেন তবে সিনিয়র পর্যায়ের আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে ঐহিকার এটিই প্রথম সোনা। জীবনের সেরা সাফল্যেও মাটি থেকে পা সরেনি এই বঙ্গ প্যাডলারের। ঐহিকা বলেছেন, ‘আমার লক্ষ্য আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় আরও বেশি সংখ্যক পদক জেতা। আর এই লক্ষ্য পূরণের ক্ষেত্রে এই সাফল্য আমাকে প্রেরণা যোগাবে।’