সোনা, রুপো ও ব্রোঞ্জের ৫০০০ মেডেল তৈরি করেছেন জাপানের কারুশিল্পীরা
প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে ইলেকট্রনিক্স বর্জ্যে ভরে যাচ্ছে গোটা বিশ্ব। এর ফলে প্রতিনিয়ত বেড়ে চলেছে পরিবেশ দূষণ। এই চিন্তা থেকেই ২০২০ টোকিও অলিম্পিকে অভিনবত্ব আনতে চলেছে জাপান সরকার। অলিম্পিকের ইতিহাসে এবারই প্রথম বিজয়ীদের জন্য নির্ধারিত পদক তৈরি হচ্ছে ফেলে দেওয়া ইলেকট্রনিক্স বর্জ্য পদার্থ ব্যবহার করেই। এর শুরুটা হয়েছিল ২০১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে। সে দেশের অধিবাসীদের কাছে তখন থেকেই জাপান সরকার আবেদন রাখতে শুরু করেছিল, তাঁরা যেন তাঁদের অব্যবহৃত ফোনগুলি ফেলে না দিয়ে সরকারের হাতে তুলে দেয়। এরপর সংগৃহীত ফোনগুলি থেকে সোনা, রুপো এবং ব্রোঞ্জ বের করে নিয়ে প্রস্তুত করা হয়েছে টোকিও অলিম্পিকের মেডেল। এর আগে ভ্যাঙ্কুভারে ২০১০ অলিম্পিক ও প্যারালিম্পিক উইন্টার গেমসেও একই পদ্ধতিতে তৈরি করা মেডেল ব্যবহৃত হয়েছিল।
২০২০ টোকিও অলিম্পিকের মেডেল প্রকাশ উপলক্ষে অনুষ্ঠিত একটি সভায় আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির প্রসিডেন্ট থমাস বাখ্-এর উপস্থিতিতে জাপানানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে ইলেকট্রনিক্স বর্জ্য থেকে মেডেল তৈরির কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘পরিবেশ বান্ধব দৃঢ় সমাজ গঠন করার জন্য ফেলে দেওয়া ছোট ছোট ইলেকট্রনিক্স বর্জ্য পুনর্বব্যহার করে মেডেল তৈরি করে ২০২০ টোকিও অলিম্পিক ভবিষ্যতের পথপ্রদর্শক হয়ে উঠবে।’
পাশাপাশি জাপানের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘ক্রীড়াক্ষেত্রই পারে সমগ্রবিশ্বকে এক ছাতার তলায় নিয়ে আসতে এবং সবার সামনে সমান সুযোগ তুলে ধরতে। পঞ্চান্ন বছর আগে টোকিওতে প্রথমবারের মতো অলিম্পিক আয়োজন করার সময় আমরা এটা শিখেছিলাম।’
টোকিও অলিম্পিকের ও প্যারালিম্পিকের আয়োজক কমিটি জানিয়েছে, টোকিও ২০২০ মেডেল প্রোজেক্ট সোনা, রুপো ও ব্রোঞ্জ মিলিয়ে পাঁচ হাজার পদক তৈরি করা হয়েছে সমগ্র জাপান থেকে ইলেকট্রনিক্স বর্জ্য সংগ্রহ করে। উল্লেখ্য, ৬.২১ মিলিয়ন ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস সংগৃহীত হয়েছে মেডেল তৈরির জন্য। এই মেডেলগুলিতে অ্যাথলিটদের উদ্যমকে তুলে ধরার পাশাপাশি অলিম্পিকের ঐক্যের বিষযটিতেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
মেডেলগুলির ব্যাস ৮৫ মিলিমিটার। মেডেলগুলিতে অলিম্পিকের সিম্বলের সঙ্গে থাকছেন গ্রিসের জয়ের দেবী নাইকও। জাপানের কারুশিল্পীরা সনাতন ও আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমেই এই মেডেলগুলি তৈরি করেছেন।